কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে ছাপ্পার চেষ্টা বিজেপি প্রার্থীদের! রুখে দিল জনতা

বিজেপি প্রার্থীদের এই পরিকল্পনা সর্বত্রই ভেস্তে দিলেন সাধারণ মানুষের। সাধারণ গ্রামবাসী, মহিলাদের প্রতিরোধের কাছে পিছু হঠতে বাধ্য হল বিজেপির ভোট-চোরেরা

কেন সাত দফায় নির্বাচন আর কেনই বা কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়িয়ে নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করার পরিকল্পনা, ষষ্ঠ দফার নির্বাচনে ফাঁস হল বিজেপির সেই চক্রান্তই। বিজেপি কর্মী থেকে প্রার্থী সবাই কেন্দ্রীয় বাহিনীর ছত্রছায়ায় কীভাবে অবাধ ছাপ্পার পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন, ধরা পড়ল ষষ্ঠ দফার নির্বাচনে। তবে বিজেপি প্রার্থীদের এই পরিকল্পনা সর্বত্রই ভেস্তে দিলেন সাধারণ মানুষের। সাধারণ গ্রামবাসী, মহিলাদের প্রতিরোধের কাছে পিছু হঠতে বাধ্য হল বিজেপির ভোট-চোরেরা।

শনিবার ষষ্ঠদফার নির্বাচনে সকাল থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরের ঘাটাল কেন্দ্রে সব ফোকাস নিজের দিকে ঘোরানোর চেষ্টা করেন বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করলে মানুষই প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে উসকানি দিয়ে সেই সব এলাকায় জোর করে ঢুকে অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করতে গেলে গ্রামবাসীরা মুখোশ খুলে দেন বিজেপি প্রার্থীর। বিক্ষোভের মুখে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়েই এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন হিরণ।

পশ্চিমাঞ্চলের একাধিক লোকসভা কেন্দ্রে ২০১৯ সালে জিতেছিল বিজেপি। কিন্তু জঙ্গলমহলের উন্নয়নে কোনও কাজ করা তো দূরের কথা, পাঁচ বছরে দেখাই যায়নি বিজেপি সাংসদদের এলাকা। এরপর ভোটের দিন সেই সব জায়গায় প্রার্থীরা নজরদারি চালাতে গেলেই রুখে দাঁড়ান গ্রামবাসীরা। পরিষেবা না পেয়ে এলাকার মানুষ ক্ষিপ্ত রয়েছেন জেনেই বেশ কিছু এলাকায় নিজেদের পক্ষে ছাপ্পা দিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় হাজির হন বিজেপি প্রার্থীরা। বাঁকুড়ার শালতোড়ায় ভোট প্রভাবিত করতে গিয়ে বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন সুভাষ সরকার।

একইভাবে ঝাড়গ্রামে বিক্ষোভের মুখে পড়েন বিজেপি প্রার্থী প্রণত টুডু। এলাকায় উন্নয়নের নিরিখে বিজেপির উদাসীনতায় বিতশ্রদ্ধ গড়বেতা এলাকার মানুষ। সেই পরিস্থিতিতে ভোটের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে গ্রামে ঢোকেন বিজেপি প্রার্থী প্রণত। গ্রামবাসীরা তাঁকে দেখে ক্ষোভ উগরে দিলে পাল্টা প্রার্থীর নিরাপত্তায় থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা মারধর করে গ্রামবাসীদের। এরপরই এলাকার পরিস্থিতি খারাপ হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় থাকা বিজেপি প্রার্থীকে তাড়া করে গ্রাম থেকে বের করেন গ্রামবাসীরা।

আবার মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের কেশিয়াড়িতে গো ব্যাক স্লোগানের মুখে পড়েন বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা। গ্রামে ঢুকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় অশান্তি তৈরির চেষ্টা করায় গ্রামবাসীরা গো-ব্যাক স্লোগান দিয়ে বাহিনী সমেত বিজেপি প্রার্থীকে এলাকাছাড়া করেন। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় বাহিনী যেখানে বিজেপি প্রার্থীদের কথা শোনেনি, সেখানে বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারী ক্রীতদাসের মতো ধমক দেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। কাঁথির পটাশপুর এলাকায় বিজেপি কর্মীরা ভোট লুটের চেষ্টা করলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা তাদের লাঠির বাড়ি দেয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিজেপি কর্মীদের মারধরের অভিযোগে জওয়ানদের রীতিমত ধমকান সৌমেন্দু।

যে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সাধারণ ভোটারদের নিরাপত্তার দায়িত্বে মোতায়েন করা হয়েছে, তাকে বিজেপি এমনভাবে দলদাসে পরিণত করেছে যে সাধারণ মানুষের উপর লাঠিচার্জ করতেও তাঁরা দ্বিধা বোধ করলেন না। নন্দীগ্রামে জমায়েত হঠানোর নামে সাধারণ মানুষের উপর লাঠিচার্জ করলে মাথা ফাটে এক বৃদ্ধের।

Previous articleযাত্রা শুরুর কয়েকদিনের মধ্যেই ‘মৃত্যুপুরী’ চারধাম! হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাড়ছে পুণ্যার্থী মৃত্যুর সংখ্যা
Next articleমহিলা ভোটারকে মারধরের অভিযোগ, কাঠগড়ায় ঝাড়গ্রামের বিজেপি প্রার্থী