ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়, আতঙ্কের প্রহর গুনছে সুন্দরবন

স্থানীয়রা বলছেন অন্য সময় ভরা কোটালে এতটা ভেতরে জল আসে না। ইতিমধ্যেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে কুলতলি- নামখানা সহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে।

ঘূর্ণিঝড় রেমাল (Remal Cyclone) আর অতি বৃষ্টির চিন্তায় শনিবার রাতে দুচোখের পাতা এক করতে পারেননি সুন্দরবনবাসী (People of Sundarbans)। রবির সকালে চেনা চারপাশের যে ছবিটা চোখে পড়ছে আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সবটা ওলট-পালট হয়ে যাবে না তো? আতঙ্কের প্রহর গুনছে বাংলার প্রকৃতি সুন্দরী। শুধু যে ঝড়ের দাপট তা নয় সবথেকে বেশি চিন্তা নদী বাঁধ (River dam) ভাঙন নিয়ে। হাওয়া অফিসের (Alipore Weather Department) পূর্বাভাস বলছে সুন্দরবনের ঝড়খালি এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল হতে চলেছে। ফলে প্রভাব পড়বে গঙ্গাসাগরে। তাই ভগ্নপ্রায় নদী বাঁধ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। সকাল থেকেই মাতলা নদীর জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে। জোয়ারে ম্যানগ্রোভের জঙ্গলে জল ঢুকছে দ্রুতগতিতে। স্থানীয়রা বলছেন অন্য সময় ভরা কোটালে এতটা ভেতরে জল আসে না। ইতিমধ্যেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে কুলতলি- নামখানা সহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে।

সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা (Bankim Chandra Hazra) জানান যে কেন্দ্র সরকার (Government of India) এ রাজ্যের টাকা আটকে রেখে গরিব মানুষের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা করছে। রাজ্য সরকার কয়েক কোটি টাকা খরচ করে সুন্দরবনের একাধিক জায়গায় শক্ত পোক্ত বাঁধ তৈরি করেছে। কিন্তু এখনও অনেক কাজ বাকি আর তার জন্য বাংলার বকেয়া টাকা দিল্লি থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। ভোটের সময় বিজেপির নেতারা মুখে বড় বড় বুলি আওরে যান অথচ এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে আছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার।এই বিপর্যয় মোকাবেলা করার জন্য গত কয়েকদিন ধরে নবান্নে একের পর এক মিটিং হয়েছে। সমস্ত ফ্লাড সেন্টার খুলে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নীচু এলাকা থেকে মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করছে প্রশাসন। প্রত্যেক বছর যখন প্রাকৃতিক বিপর্যয় দাপট দেখাতে শুরু করে তখনই পাথরপ্রতিমা, জি প্লট নামখানা, মৌসুনি ঘোড়ামারা গঙ্গাসাগর একাধিক জায়গার দুর্বল নদী বাঁধ ভেঙে এলাকায় জল ঢুকে নষ্ট হয় চাষের জমি, ক্ষতিগ্রস্ত হন দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলো। বিজেপি নেতারা এই সময় পাশে এসে দাঁড়ান না। এর আগে প্রাকৃতিক বিপর্যয় যখন হয়েছিল তখন মুড়িগঙ্গা নদীর এক কিলোমিটার নদী বাঁধ ভেঙে যায়। প্রাথমিকভাবে সেটা সারানো হলেও স্থায়ী নদী বাঁধ তৈরি হয়নি। ভোট এলে কেন্দ্রের তরফে শুধু আশ্বাস মেলে, ভোট চলে গেলে সব আবার আগের জায়গাতেই ফিরে আসে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস শোনা মাত্রই আশঙ্কার মেঘ ঘনীভূত হয়েছে সুন্দরবন উপকূলবর্তী এলাকার মানুষের মনে। রেমালের দাপটে চোখের সামনে সাজানো ঘর, চাষের জমি, গবাদি পশু, জীবন জীবিকা সবটা আর কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই শেষ হতে চলেছে! দুশ্চিন্তা আর আতঙ্কে প্রত্যেকটা মুহূর্ত কাটছে নামখানা নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের।

 

Previous articleদিল্লির শিশু হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হয়ে মৃত ৭!
Next articleরবিতে রেমালের চোখ রাঙ্গানি, ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথে সামান্য বদল! বৃষ্টি শুরু উপকূলে