দুর্গতদের পাশে মুখ্যমন্ত্রী, বুধবার আকাশ পথে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন

দুর্যোগে যারা কবলিত আমি তাঁদের পাশে কাল রাত থেকে আমি ছিলাম। বিকাল পর্যন্ত কাজ করে তবে এসেছি। যারা দুর্যোগে কবলিত হয়েছেন আমি পরশুদিন একবার বেরোবো

যে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগে রাজ্যের মানুষের কাছে ছুটে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রথার ব্যত্যয় হচ্ছে না রেমালের সময়ও। বুধবার তিনি আকাশ পথে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করবেন। মঙ্গলবারই এলাকাগুলিতে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে আকাশ পথে যাওয়ার জন্য বায়ুসেনার হেলিকপ্টার না থাকায় তিনি বুধবার যেতে বাধ্য হচ্ছেন। ওই দিন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শনের পর বারুইপুরে জনসভা করবেন।

রেমালের দুর্যোগ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষের জন্য বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। তাঁদের পাশে থাকার যে বার্তা তিনি দিয়েছিলেন তা পালনও করেছিলেন রবিবার বিনিদ্র রজনী কাটিয়ে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গ নদীমাতৃক রাজ্য, বঙ্গোপসাগরের উপকূলে। প্রতিবছরই তাই আমাদের নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয়। এবারো সাইক্লোন ‘রেমালে’র প্রভাবে আমাদের রাজ্যে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হল ও হচ্ছে। কিন্তু সবার উপরে মানুষের জীবন। সৌভাগ্যক্রমে এবং অবশ্যই রাজ্য প্রশাসনের তৎপরতায় এবার জীবনহানি তুলনামূলকভাবে অনেক কম। নিহতদের পরিবারবর্গকে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই, তাঁদের নিকটজনের হাতে অবিলম্বে আর্থিক সহায়তা পৌঁছাবে। ফসলের ও বাড়িঘরের যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণের বন্টন আইন-মোতাবেক প্রশাসন এখনই দেখে নেবে এবং নির্বাচনের আচরণবিধি উঠে গেলে আমরা এই সব বিষয় আরো গুরুত্ব দিয়ে পুরোটা বিবেচনা করব।

নির্বাচনী বন্দোবস্তের ব্যস্ততা সত্ত্বেও সর্বস্তরে আমাদের প্রশাসন দুর্যোগ মোকাবিলায় এবার প্রস্তুত ছিল। মুখ্যসচিব থেকে শুরু করে আমার রাজ্যের সম্পূর্ণ সচিবালয়, জেলা প্রশাসন থেকে ব্লক প্রশাসন দুর্যোগের মোকাবিলায় সকলে সংহতভাবে সবসময় মানুষের পাশে রয়েছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। দুলক্ষ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় ১৪০০ শিবিরে সরানোর কৃতিত্ব আমাদের পুরসভা পঞ্চায়েতগুলিরও। এজন্য আমি রাজ্য ও স্থানীয় প্রশাসনের সকলকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

আমি বিশ্বাস রাখি, সকলের সহযোগিতায় এই ঝড়ও আমরা কাটিয়ে উঠব।

আমি জানি, এই দুর্যোগে আপনারা চিন্তিত। আমরাও চিন্তিত। কিন্তু ভয় পাবেন না, চিন্তা করবেন না। পরিস্থিতির মোকাবিলায় যা যা করণীয়, আমরা সবটাই করবো।

সোমবার কলকাতা উত্তর কেন্দ্রে পদযাত্রা শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দুর্যোগে যারা কবলিত আমি তাঁদের পাশে কাল রাত থেকে আমি ছিলাম। বিকাল পর্যন্ত কাজ করে তবে এসেছি। যারা দুর্যোগে কবলিত হয়েছেন আমি পরশুদিন একবার বেরোবো। আমি উপর থেকে যতটা পারব দেখব, যেহেতু জল ভরা আছে নিচে নামা যাবে না, ততটা দেখে নেব। যাদের রিলিফ ক্যাম্পে রাখা হয়েছে, যাদের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে, বা যাদের বাড়ি আংশিক ভেঙেছে, যাদের কৃষি জমি বা ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে, আপনাদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। দিদি আছে আপনাদের পাহারাদার। মানুষ যখন বিপদে পড়ে সবসময় পাশে থাকে। আপনাদের কাউকেই খালি রাস্তায় আমি থাকতে দেব না। সবাইকেই সাহায্য করব যতটা মানবিক হিসাবে সাহায্য করা যায়। প্রশাসন ঢেলে সাহায্য করছে, রিলিফ ক্যাম্পে যারা আছেন তাঁদের খাওয়া দাওয়া, চিকিৎসা থেকে শুরু করে। আপনারা শুনলে খুশি হবেন, নির্বাচন চলা সত্ত্বেও আমি কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ উচ্চপদাধিকারী আধিকারিকদের পাঠিয়েছি যেসব জায়গাতে এই দুর্যোগ হয়েছে। সবাই ভালো থাকুন।”

Previous articleসিপিএমকে তাড়িয়েছি এবার তাড়াব বিজেপিকে: হুঙ্কার মমতার
Next articleরেমালের‌ দুর্যোগেও বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের তৎপরতায় ৪৯ টি সাবস্টেশন ঠিক হয়েছে: অরূপ বিশ্বাস