রেমালে বিপর্যয়: রাজ্যে মৃত্যু ৬ জনের, জলমগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিস্তীর্ণ এলাকা

গাছ কাটতে যেতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি৷ বাবাকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হতে দেখে বাঁচাতে যান ছেলে তরুণ সিং (৩০) এবং সেখানেই তাঁরও মৃত্যু হয়

সিভিয়ার সাইক্লোন রেমাল রাজ্যের মাটি ছাড়েনি এখনও। সোমবার দুপুরেও ভারী বৃষ্টির পাশাপাশি ঘন কালো মেঘে ঢাকা রাজ্যের দক্ষিণের জেলাগুলি। তারই মধ্যে রাজ্যে মর্মান্তিক মৃত্যু ৬ জনের। আহত বেশ কয়েকজন। সেই সঙ্গে সমুদ্র ও দক্ষিণের নদীগুলি ফুলে ফেঁপে ভাসিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার ঝড়খালি, সন্দেশখালি এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকা। জলমগ্ন পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক সহ একাধিক এলাকা।

রেমালের তাণ্ডবে কলকাতায় এন্টালি এলাকার বিবির বাগানে মাথায় সিমেন্টের চাঁই পড়ে মোহাম্মদ সজীব (৫১) নামে এক ব্যক্তি মারা গিয়েছেন। অন্যদিকে মৌসুনি দ্বীপে আচমকা ঝড়ের প্রভাবে পাশের একটি বড় গাছের ডাল ভেঙে পড়ে রেণুকা মণ্ডল (৮০) নামে এক বৃদ্ধার ঘরের অ্যাসবেসটসের চালের উপর। তাতে ঘরের চাল ভেঙে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান বৃদ্ধা। উত্তর ২৪ পরগণার পানিহাটির সুখচর এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক ব্যবসায়ীর। গোপাল বর্মন (৩০) নামে ওই যুবক রাস্তার ধারে শৌচকর্ম করতে গিয়েছিলেন। বিদ্যুতে তার পড়েছিল জলে। তার থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল ওই যুবকের।

অন্যদিকে পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় বাবা-ছেলের। রবিবারের ঝড়বৃষ্টিতে বাড়ির কলা গাছ ভেঙে পড়ায় সোমবার সকালে সেই গাছ কেটে সরাতে যান ফঁড়ে সিং (৬৪)৷ কিন্তু গাছের সঙ্গে যে বিদ্যুতের তার জড়িয়ে ছিল তিনি লক্ষ্য করেননি৷ গাছ কাটতে যেতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি৷ বাবাকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হতে দেখে বাঁচাতে যান ছেলে তরুণ সিং (৩০) এবং সেখানেই তাঁরও মৃত্যু হয়। অন্য একটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার নুঙ্গিতে বাড়ির সামনেই মৃত্যু হয় তাপসী দাস (৫৩) নামে এক প্রৌঢ়ার। বাড়ির বাইরে জমা জলে বিদ্যুতের তার পড়েছিল। বেখেয়ালে সেই জলে পা দিতেই মৃত্যু হয় তাঁর।

সেই সঙ্গে জলমগ্ন কলকাতার ছবিও ধরা পড়ল সোমবার। মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা সারাদিন থাকল জলমগ্ন। রবিবার রাত সাড়ে ১১টায় গঙ্গার সব লকগেট বন্ধ হয়ে যায়। ফলে শহরের জমা জল আটকে যায়। ফের দুপুর তিনটে নাগাদ লকগেট খোলার পরে জল নামার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে পুরসভার কর্মীরা রাতভর ভেঙে পড়া গাছ ও বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা ছিঁড়ে পড়া তার পরিষ্কার করার কাজে ব্যস্ত থাকেন। আগের থেকে অনেক নির্বিঘ্নে সপ্তাহের প্রথমদিন কাজে যোগ দিতে যাওয়ার সুযোগ পান নগরবাসী। যদিও এদিনই প্রথম নজিরবিহীন সাড়ে চার ঘণ্টার মেট্রো বিপর্যয়েরও সম্মুখিন হয় শহর কলকাতা।

Previous articleআইপিএল শেষ হতেই মাঠ কর্মীদের জন্য বিশেষ ঘোষণা বোর্ড সচিবের
Next article‘তোমার শহর’ কলকাতায় মোদি! নিজেরাই নিজেদের গায়ে ‘বহিরাগত’ তকমা সাঁটলো BJP