শেষ দফার ভোটে ৯-এ ৯ হবে— আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল (TMC)। একদফা বাকি থাকতেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) জানান, আগের ৬দফাতেই তৃণমূলের (TMC) ঝুলিতে এসেছে ২৩টি আসন। তাহলে, এবার কি রাজ্যের শাসকদলের ঝুলিতে রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে আসছে ৩২টি! অন্তত তৃণমূলের হিসেব সেটাই বলছে।লোকসভা ভোটে শনিবার সপ্তম তথা শেষদফার ভোট। দেশের আটটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে মোট ৫৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে বাংলার ৯টি কেন্দ্র রয়েছে। কলকাতা দক্ষিণ, কলকাতা উত্তর, যাদবপুর, ডায়মন্ড হারবার, মথুরাপুর, জয়নগর, বারাসত, দমদম উত্তরে ভোট নিয়ে রয়েছে টানটান উত্তেজনা। এই ৯টি কেন্দ্রে তৃণমূলের সংগঠন ও গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নাতীত। ২০২১-এর মতো এই লোকসভা নির্বাচনে গত ৬ দফাতে নিশ্চিতভাবেই বাংলার মানুষ বহিরাগত বিজেপিকে বুঝিয়ে দিয়েছেন শান্তির বাংলায় তাদের কোনও জায়গা নেই। সপ্তম দফা নির্বাচনেও এই ধারা বজায় থাকবে।

বিজেপির মিথ্যে প্রতিশ্রুতি ও এজেন্সি-নির্ভর রাজনীতি-বাংলার বকেয়া না দেওয়া-মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব-সহ একাধিক ইস্যুতে গোটা দেশ জুড়ে প্রবল চাপে মোদি সরকার। তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক গত দু’মাসের প্রচারপর্বে বারবার বলেছেন এই সরকার আর ফিরছে না। ৪ জুন ফল প্রকাশের পর কেন্দ্রে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক ইন্ডিয়া জোটের সরকার তৈরি হবে। আর তারপরেই জনবিরোধী যেসব সিদ্ধান্ত ও আইন গায়ের জোরে পাশ করিয়েছে সেগুলি প্রত্যাহার করা হবে। ঢালাও কেন্দ্রীয় বাহিনী-যখন-তখন অফিসার বদলি-ভোট চলাকালীনও ইডি সিবিআই-সহ কেন্দ্রীয় এজেন্সির হানা-তৃণমূল নেতাদের ডেকে পাঠানো অব্যাহত থেকেছে।


এত সব প্রতিকূল পরিস্থিতির বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে লড়াই করছে তৃণমূল। বিশেষ করে রামমন্দির ইস্যু বাংলায় প্রভাব না ফেলতে পারায় সন্দেশখালির মতো ঘটনা চক্রান্ত করে বাংলার মহিলাদের সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে বিজেপি। পরবর্তীতে সন্দেশখালির বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়ালের ভিডিও ভাইরাল হতেই পরিস্থিতি ঘুরে গিয়েছে। গোটা ঘটনা যে গভীর ষড়যন্ত্রের ফসল তা জেনে গিয়েছে বাংলা-সহ গোটা দেশ। বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সেই সন্দেশখালিতেও শেষদফায় ভোট। সেখানেও ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে বিজেপি। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের মতো প্রধানমন্ত্রী-সহ বিজেপির দিল্লির তাবড় নেতা-মন্ত্রীরা ডেলি প্যাসেঞ্জারি করেছেন বাংলায়। সেই একই চিত্রের পুনরাবৃত্তি এবারও। ভোট শেষ আসা-যাওয়াও শেষ। বাংলার মানুষ যে এই ভোট পাখি বিজেপিকে চায় না সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

সন্দেশখালি ছাড়াও নজর থাকবে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের দিকে। যদিও বিজেপি এই কেন্দ্রে প্রথমে প্রার্থী খুঁজে পায়নি। নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার এক মাস পর তারা প্রার্থী ঘোষণা করে। এরপর বিস্তর ডামাডোল চলে বিজেপির অন্দরে। প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করে কয়েক হাজার মানুষ। ২০১৪ সাল থেকে এই কেন্দ্রে টানা জিতে আসছেন অভিষেক। তিনি কখনও এখানকার মানুষের কাছে ভোট চাননি। সারা বছর তাঁদের সঙ্গে থেকেছেন পরিবারের একজন হয়ে। অভিষেক আগেই জানিয়েছেন, আমতলায় থাকবেন। ভোটের দিন তিনি কোনও বুথে যাবেন না। কারণ, এতে মানুষের অসুবিধা হয়। তৃণমূলের ভরসা সপ্তম ও শেষ দফার ভোটে নিশ্চিতভাবেই মা-মাটি-মানুষের উজাড় করা ভালবাসা ও আশীর্বাদ পেতে চলেছেন দলীয় প্রার্থীরা।

