বিরোধীদের হিংসার দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়ে বাংলার নাম উল্লেখ করে স্বীকার নির্বাচন কমিশন স্বীকার করে নিল বাংলায় নির্বাচনে হিংসা হয়নি। রাজ্যের বিরোধীদলগুলি প্রত্যেক দফার পরে বারবার নির্বাচনী হিংসার অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হলেও, আদতে তাঁদের দাবিকে নস্যাৎ করে দিলেন খোদ নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, “যেভাবে নির্বাচনে হিংসার ঘটনা দেখা যেত, তেমন কোনও বড় হিংসার ঘটনা এবার ঘটেনি। এটাই নির্বাচন প্রক্রিয়ার সাফল্যের কাহিনী। ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, মণিপুর, ত্রিপুরা, বাংলা, কাশ্মীর সহ সারা দেশে সে রকম কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি।”

নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার আগেই নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে পর্যালোচনা পেশ করল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। রাজীব কুমারের দাবি, “এটা একটা অন্যতম সাধারণ নির্বাচন যেখানে আমরা হিংসা দেখিনি। আপনাদের মনে থাকবে কেমন ধরনের হিংসার ঘটনা আমরা দেখতাম। জম্মু ও কাশ্মীর, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, ওড়িশা, মহারাষ্ট্রের অতিবামপন্থী এলাকা, ত্রিপুরা, বাংলা। সেটা বন্ধ করা কোনও সহজ কাজ ছিল না। এর জন্য দুবছরের কঠিন প্রস্তুতি প্রয়োজন হয়েছে। সারাদিন আগে টিভিতে হিংসার খবর দেখানো হত। একটা ছোট হিংসার ঘটনা ঘটলেও সারাদিন ট্রিকার দেখানো হত। এবার কোনও ট্রিকার চলেনি। পোলিং স্টেশনের পরিবেশ ছিল একেবারেই উৎসবমুখর, প্রচণ্ড গরম সত্ত্বেও।” যদিও নির্বাচন কমিশনার স্বীকার করে নেন ভোট প্রক্রিয়া এই সময়ে করা ভুল হয়েছে।
প্রায় ৪৩ ভোটকর্মীর মৃত্যু। নির্বাচনের নিরাপত্তায় থাকা প্রায় ৭ জওয়ানের মৃত্যু। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তুষ্ট করতে গিয়ে যে দীর্ঘ নির্বাচন প্রক্রিয়া গরমে আয়োজন করেছিল কমিশন, তার তীব্র বিরোধিতা বিরোধী সব রাজনৈতিক দলই করেছিল। কিন্তু নির্বাচন প্রক্রিয়া এর থেকে কম সময়ে করা সম্ভব নয় বলে নিজেদের ব্যর্থতাও এদিন মেনে নেয় কমিশন। বারবার এই বিষয় নিয়ে সরব হয়েছে অ-বিজেপি দলগুলি। বাংলার শাসকদল এই তীব্র গরমে এত দীর্ঘ ভোট প্রক্রিয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল। কিন্তু সেই সময় সেসবে কর্ণপাত করেনি বিজেপি অঙ্গুলি হেলনে চলা কমিশন। এখন সব মিটে যাওয়ার পর স্বীকারোক্তি করে কী লাভ! প্রশ্ন সবমহলের। রাজীব কুমারের স্বীকারোক্তি, “নির্বাচন আমাদের অন্তত একমাস আগে শেষ করা উচিত ছিল। অনেক বড় নির্বাচন, অনেক পদক্ষেপ নিতে হয়। এর থেকে কম সময়ে করা সম্ভব নয়। কিন্তু এর আগে করতে পারতাম, এত গরমে করা উচিত হয়নি।”

ভোট গণনার আগেরদিন গণনা প্রক্রিয়া নিয়ে নির্দেশিকাও বিরোধীদের চাপে প্রকাশ করল কমিশন। সেই প্রক্রিয়া নিয়ে এদিন কমিশন জানায় –
সব কেন্দ্রেই পোস্টাল ব্যালট গণনা প্রথমে হবে
তার আধঘণ্টা পরে ইভিএম গণনা শুরু হবে
ইভিএম গণনা শেষ হলে VVPAT গণনা হবে

তবে বারবার ভোটদানের হার নিয়ে কমিশনের গরমিলের যে দাবি বিরোধীরা তুলেছিল তা নিয়েও অজুহাত দিতে নির্বাচন কমিশনারকে শোনা যায়। তিনি দাবি করেন, “যে পদ্ধতি রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে তাই হয়েছে, তাতে কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। রাত তিনটে-চারটে পর্যন্ত ভোট প্রক্রিয়া চলেছে। পরের দিন স্ক্রুটিনি। তারপরে পুনর্নির্বাচনের প্রক্রিয়া। তার আগে সঠিক ভোটদানের হার প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
