‘গ্যারান্টি’র বচন ভুলে জোটের কাছে হাতজোড়! ‘সর্বমত’ বার্তায় অচেনা মোদি

মোদিকে বলতে শোনা যায়, "সরকার চালাতে বহুমতের প্রয়োজন হয়। গণতন্ত্রের এটাই সিদ্ধান্ত। কিন্তু দেশ চালাতে সর্বমত থাকা খুবই আবশ্যক

নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর প্রথমবার বক্তব্য পেশ করলেন নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। আর রাতারাতি নিজের নামের স্তুতি ভুলে জোটের জয়গান নরেন্দ্র মোদির মুখে। তবে ভোট প্রচারের অভ্যাস বোধহয় এখনও ভুলতে পারেননি মোদি। পুরোনো সংসদ ভবনে (old Parliament building) এনডিএ (NDA) জোটের সব সাংসদদে নিয়ে বৈঠকে যখন জোটের সাংসদরা নরেন্দ্র মোদিকে পরবর্তী মন্ত্রীসভার নেতা হিসাবে সমর্থন করছেন, তখন মোদির মুখে শুধুই I.N.D.I.A. জোটের আতঙ্ক। নির্বাচনী প্রচারে যেভাবে মোদি বিরোধী জোটকে আক্রমণ করছিলেন, সেই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে না পেরে শুক্রবার মোদির বিরোধী জোটকে আক্রমণ স্পষ্ট জানান দেয় সরকার গঠনের দাবি জানালেও যে কোনও মুহূর্তে তা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে পারে সেই আতঙ্ক ঘুম কেড়েছে মোদির।

গত পাঁচ বছরে, বিশেষত শেষ নির্বাচনী প্রচারে বিজেপি যেভাবে মোদিকে সামনে রেখে প্রচার চালিয়েছে, তাতে বোঝা গিয়েছে বিজেপি বা এনডিএ জোটের একটিই মুখ নরেন্দ্র মোদি। এনডিএ জোট ৩০০-এর কম আসন পেয়ে সরকার গঠনের দাবি জানানোর পথে যেতেই বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বদের ভোল বদল। খোদ নরেন্দ্র মোদি এখন হাত জোড় করছেন এনডিএ (NDA) জোট সঙ্গীদের কাছে। তিনি শুক্রবার পুরোনো সংসদ ভবনে মোদি বলেন, “আমি বলতে পারি এটাই সবথেকে সফল জোট। মানুষ এনডিএ-কে সুযোগ দিয়েছেন সরকার তৈরি করার এবং ২২টি রাজ্যের মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার। আমাদের এই জোট ভারতের সত্যিকারের মর্মকে তুলে ধরে।”

সেই সঙ্গে জোট শরিকদের স্বীকৃতি দিতে মোদিকে বলতে শোনা যায়, “সরকার চালাতে বহুমতের প্রয়োজন হয়। গণতন্ত্রের এটাই সিদ্ধান্ত। কিন্তু দেশ চালাতে সর্বমত থাকা খুবই আবশ্যক।” একদিকে জোট শরিকদের তুষ্ট করতে স্তুতি, অন্যদিকে সংবিধানকে প্রণাম করা মোদির মুখে গণতন্ত্রের ‘রামনাম’ যেন অন্য মোদির ছবি তুলে ধরে।

তবে সরকার গঠন করলে কোন পথে যাবেন, সেই সব পরিকল্পনার থেকে এদিন মোদির মুখে বেশি শোনা যায় কীভাবে প্রতিপক্ষ I.N.D.I.A. জোটকে প্রতিরোধ করবেন। নির্বাচনের শেষদফার দিন বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত বুথ ফেরৎ গণনার সমীক্ষা থেকে ফল প্রকাশের পরে শেয়ার বাজারের ওঠাপড়া, সব নিয়ে যে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে ও সরব হতে শুরু করেছে বিরোধীরা, তা যেন রাতের ঘুম কেড়েছে মোদির। বিজেপি ও এনডিএ-র নির্বাচনের শেষ দিকের প্রক্রিয়া নিয়ে চক্রান্ত ফাঁস হতেই মোদির দাবি, “যদি আপনারা লক্ষ্য করেন ১ জুন থেকে ৪ জুনের মধ্যে কী ধরনের ঘটনা ঘটেছে। বক্তব্য এমন পরিকল্পিতভাবে রাখা হয়েছে যাতে হিংসার উদ্রেক করা যায়। চেষ্টা চালানো হয়েছে মানুষকে ভুল বোঝাতে ও মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে।”

তবে সরকার গঠনের আগে এনডিএ-র জোট সঙ্গীদের একজোট রাখাই চ্যালেঞ্জ বিজেপির কাছে। I.N.D.I.A. জোটের পক্ষ থেকে এনডিএ শরিকদের নিয়ে কিছু বলা না হলেও বিজেপি যে আতঙ্কে রয়েছে তা প্রমাণিত হয় মোদির কথায়। তাঁর সতর্কীকরণ, “গুজব থেকে দূরে থাকুন। ব্রেকিং নিউজের উপর ভিত্তি করে দেশ চলতে পারে না।”

Previous articleবিজেপির নেতারা প্রচারের টাকা তছরূপ করেছে! হারের পর বিস্ফোরক কৃষ্ণনগরের রানিমা
Next articleপাঁচদিনে শেয়ার মার্কেট থেকে ৫৭৯ কোটি টাকা মুনাফা নায়ডু-পত্নীর!