“ব্র্যান্ড বুদ্ধ” নিয়ে মাতামাতি ডুবিয়েছিল সিপিএমকে, এবার মীনাক্ষীকে “ব্র্যান্ড” বানিয়ে ভরাডুবি

যৌবনের ডাকেও সাড়া মেলেনি। সিপিএম আছে সিপিএমে-ই! ৫ শতাংশ ভোট নিয়ে এবারও সাফল্যের ঝুলিয়ে শূন্য! ২০১৯, ২০২১, ২০২৪, টানা তিনটি বড় ভোটে শূন্যের হ্যাট্রিক! চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনেও রাজ্য থেকে মেলেনি একটিও আসন। নতুন প্রজন্মকে লড়াইয়ের ময়দানে নামিয়েও ওঠেনি ফসল। বামেদের ৩০ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৮ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত! যাদবপুরের সৃজন থেকে শ্রীরামপুরের দিপ্সিতা কিংবা তমলুকে সায়ন, যৌবনের কোনও ছাপ পড়েনি ইভিএমে। হাল ফেরেনি লালের। বরং আরও বেহাল দশা হয়েছে।

এরই মাঝে আজ, শনিবার রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর বিশেষ বৈঠক আলিমুদ্দিনে। সেখানে ভোটের ভরাডুবিই পর্যালোচনা করা হবে। তার আগে একাধিক জেলাগুলি থেকে যে রিপোর্ট এসেছে, সেখানে কার্যত কাঠগড়ায় সিপিএমের “ক্যাপ্টেন” মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। “জো দিখতা হ্যায় ও বিকটা নেহি…”! অর্থাৎ, যে মীনাক্ষীকে নিয়ে লম্ফঝম্প, সোশ্যাল মিডিয়ায় কমরেডদের ঢক্কানিনাদ! সেই ক্যাপ্টেনের জঘন্য পারফর্ম্যান্স এখন বড়সড় প্রশ্নের মুখে। সিপিএমের অন্দরেই মীনাক্ষী নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বিরোধীদের আক্রমণ করতে গিয়ে চমকদার, চটকদার কথা বলে হাততালি কুড়ানো যায়, কিন্তু দক্ষ সংগঠক হওয়া যায় না।

ভোটের আগে সিপিএম, শুধু রাজ্যে জুড়ে ইনসাফ যাত্রায় মীনাক্ষিকে মুখ করে ঘোরায়নি, তাঁকে ২০২৬ সালের ‘প্রজেক্টেড মুখ্যমন্ত্রী’ হিসেবেও দেখানো শুরু হয়েছিল। বারবার এই মীনাক্ষিকেই “ক্যাপ্টেন” আখ্যা দিয়ে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। দেদারে ছড়িয়েছে তাঁর বন্দনায় রিলস। তবে ভোটের ফল সামনে আসতেই, বোঝা গিয়েছে যে, বাস্তবে কোথায় দাঁড়িয়ে এই সিপিএমের নতুন প্রজন্মের এই নেত্রী! জনমানসে মীনাক্ষী ফ্যাক্টর কোনও কাজই করেনি। নিজভূমেই ধরাশায়ী হয়েছেন তিনি। নিজের কেন্দ্র কুলটিতে সিপিএম ভোট পেয়েছে মাত্র তিন শতাংশ! সোশ্যাল মিডিয়ায় মীনাক্ষীকে নিয়ে হিড়িকই বুমেরাং হয়েছে সিপিএমের।

 

জেলাগুলিতে জমা পড়া রিপোর্টে বেশিরভাগেরই মত, কেন মীনাক্ষীকে নিয়ে এই মাতামাতি। কেন হল এরকম ব্যক্তিপ্রচার? যেখানে সিপিএম মানে সামগ্রিক আন্দোলন, সংগঠন ও মতাদর্শ শেষ কথা। সেখানে একজনকে নিয়ে হইচই কেন হবে! অনেকেরই মত সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপ্লবীদের নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে আরও বেশি সচেষ্ট হতে হবে আলিমুদ্দিনকে। প্রশ্ন উঠেছে আলিমুদ্দিনের শীর্ষ নেতাদের অবস্থান নিয়েও। একটা সময় “ব্র্যান্ড বুদ্ধ” নিয়ে মাতামাতি করতে গিয়ে ডুবেছিল সিপিএম, এবার মীনাক্ষীকে “ব্র্যান্ড” করতে গিয়ে ডুবল বামেরা।