শিয়ালদহ শাখায় (Sealdah Division Rail Service)লাইনের কাজের নামে যখন পরিষেবা নিয়ে ছেলেখেলা করছে রেল, তখনই দার্জিলিং মেলে (Darjeeling Mail) ছিনতাইয়ের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে যাত্রী নিরাপত্তা (Passengers Safety)। কেন্দ্রীয় সংস্থার নিয়ন্ত্রণাধীন ভারতীয় রেল (Indian Railways) যে কতটা অপদার্থ এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন- তার প্রমাণ মিলেছে। শিয়ালদহ থেকে হলদিবাড়িগামী দার্জিলিং মেল-এ দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব। রাতের গভীরে চলন্ত ট্রেন থেকে যাত্রীর ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গেছে। শুক্রবার রাতে কলকাতার হরিদেবপুরের বাসিন্দা শিয়ালদহ থেকে দার্জিলিং মেল ট্রেনে করে নিউ জলপাইগুড়ি যাচ্ছিলেন। ফারাক্কার কাছে ট্রেন পৌঁছতেই তিনজন দুষ্কৃতী কামরার ভেতরে ঢুকে যাত্রীর কাছ থেকে জোর করে ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রেলযাত্রীরা। এখানেই শেষ নয় এই ঘটনার পর দু’ঘণ্টা কেটে গেলেও কোন আরপিএফ, টিকিট পরীক্ষক, জিআরপি বা পুলিশের দেখা না মেলায় ক্ষোভ বাড়তে থাকে। কার্যত যাত্রীদের সুরক্ষা নিরাপত্তা নিয়ে রেলের এই ছিনিমিনি খেলা বরদাস্ত করছেন না সাধারণ মানুষ।

১২৩৪৩ আপ শিয়ালদহ হলদিবাড়ি রুটের (Sealdah to Haldibari) দার্জিলিং মেলে সফররত যাত্রীরা বলছেন S 3 কোচের এই ঘটনায় পুলিশের তরফে কোন তৎপরতা দেখানো হয়নি। এমনকি দু’ঘণ্টা পরে একজন পুলিশ ওই কম্পার্টমেন্টে আসেন কিন্তু তিনি কোনও লিখিত অভিযোগ নিতে চাননি। এরপর নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে (NJP) পৌঁছে আক্রান্ত ঐ ব্যক্তি কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। যাত্রীরা বলছেন, দার্জিলিং মেল-এর মতো এরকম একটা ট্রেনে এই ঘটনা কখনই কাঙ্খিত নয়। মেডিকেল এমার্জেন্সির সামান্য সুযোগটুকু পর্যন্ত ট্রেনে নেই। নিরাপত্তা নেই, পরিষেবার মান নিম্নগামী অথচ যথেষ্ট দাম দিয়ে এই ট্রেনের টিকিট কাটতে হয়। পরিবার নিয়ে রাতের ট্রেনে যদি এমন দুর্ভোগ এবং আতঙ্ক নিয়ে সফর করতে হয় তাহলে তো রেল কর্তৃপক্ষের ট্রেন চালানোই বন্ধ করে দেওয়া উচিত।ক্ষোভে ফুঁসছেন যাত্রীরা।


গত কয়েক মাস যাবত ভারতীয় রেলের পরিষেবা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। যেভাবে ট্রেন দুর্ঘটনার খবর বাড়ছে তার পাশাপাশি রেলের রক্ষণাবেক্ষণের কারণে পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে তাতে কেন্দ্রীয় সরকারের এই সংস্থার উপর ভরসা করতে পারছেন না আম আদমি। রাজ্যের লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত রেল পরিষেবার মান যে বিজেপি সরকারের আমলে তলানিতে থেকেছে তা বলাই বাহুল্য। নিত্যদিন হাওড়া এবং শিয়ালদহ ডিভিশনে ট্রেনের গন্ডগোল। তার মধ্যে গত শুক্রবার থেকে শিয়ালদহের মতো ব্যস্ত স্টেশনে পাঁচটি প্ল্যাটফর্ম বন্ধ রেখে মান উন্নয়নের কাজ হচ্ছে। এতে যেমন ভিড় বাড়ছে অন্যদিকে ট্রেন বাতিলের জেরে চূড়ান্ত নাকাল হচ্ছেন যাত্রীরা। প্যাসেঞ্জাররা বলছেন, ‘রেলের বর্তমান যা অবস্থা সেখানেই সঠিক পরিষেবা দিতে ব্যর্থ, তার উপর এরা আবার আবার মান উন্নয়ন নিয়ে মানুষের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে।’ একটা সময় ট্রেন পরিষেবা ভারতবর্ষের গর্বের কারণ ছিল। অথচ আজ কেন্দ্রের অধীনস্থ যে কটি সংস্থা রয়েছে তার মধ্যে সবথেকে ‘অপদার্থ’ ভারতীয় রেল। শনিবার সকাল থেকেও শিয়ালদহ শাখায় চূড়ান্ত নাকাল যাত্রীরা। দমদম এবং শিয়ালদহের মাঝে এক থেকে দু’ঘণ্টা করে ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকায় লাইন দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রশ্ন উঠছে, যখন কাজ করতেই হবে তাহলে কেন আগে থেকে বিকল্প ব্যবস্থা ভাবা হলো না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সব মিলিয়ে কাঠগড়ায় ভারতীয় রেল।
