Wednesday, December 24, 2025

বিজেপিকে ডুবিয়ে এবার ব্যর্থতার দায় এড়াচ্ছে “সেয়ানা” শুভেন্দু!

Date:

Share post:

তৃণমূল নেতারা শুরু থেকেই বলে আসছেন, শুভেন্দু অধিকারী যেখানে যেখানে বিজেপির প্রচার করবে বা প্রার্থী নির্বাচন করবে অথবা সাংগঠনিক দায়িত্ব নেবে, সেই জায়গায় তৃণমূল সুবিধা পাবে। আসলে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের জন্য পয়া! এবং তথ্য, পরিসংখ্যান বলছে, একুশের বিধানসভা নির্বাচন থেকে সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোট হোক, উপনির্বাচন হোক, পঞ্চায়েত কিংবা পুরভোট, শুভেন্দু যেখানে গিয়েছে, সেখানেই ডুবেছে বিজেপি! সেই শুভেন্দু এবার ব্যর্থতার দায় এড়াচ্ছে। খারাপ ফলাফলের দায় অন্যের ঘাড়ে চাপাচ্ছে। এবার বিজেপির এই দলবদলু নেতার গলায় অন্য সুর। তিনি বলছেন, “সাংগঠনিক ব্যাপারে কোনও হস্তক্ষেপ করি না। প্রার্থী নির্বাচন থেকে প্রচার কৌশল সবটাই সংগঠন ঠিক করে”! অথচ, লোকসভা ভোটের প্রচার পর্বে বঙ্গ বিজেপিকে “হাইজ্যাক” করে নিয়েছিল এই শুভেন্দু।

২০১৯ সালে কার্যত সকলকে চমকে দিয়ে বাংলা থেকে ১৮টি লোকসভা আসনে জিতেছিল বিজেপি। এরপর ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে ‘২০০ পার’ স্লোগান দিয়ে ময়দানে নেমেছিল গেরুয়া শিবির। তৃণমূল ভাঙিয়ে তাবড় নেতাদের নিজেদের দিকে টেনেছিল পদ্ম শিবির। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁকেই বিজেপি তুরুপের তাস মনে করেছিল। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে ৩ আসন পাওয়া বিজেপি ২০২১ সালে ৭৭-এ উঠে আসে। তবে ক্ষমতা দখলের থেকে বহু দূরেই থাকে তারা। তবে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি ফের বাংলায় ‘ম্যাজিক’ দেখাবে বলে আশা করেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহরা নিজে এসে দাবি করে গিয়েছিলেন যে বাংলা থেকে এবার বিজেপির ফল সবচেয়ে ভালো হবে। এমনকী বঙ্গ বিজেপির নেতারা পর্যন্ত দাবি করেছিলেন, তৃণমূলের থেকে একটি হলেও বেশি আসন এবার বিজেপি পাবে বাংলা থেকে। তবে ২০১৯ সালের ১৮ আসন থেকে বিজেপি ২৪-এ গিয়ে ঠেকেছে ১২-তে। এই ফলের দায় কার? এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এবার অন্য সুর “সেয়ানা” শুভেন্দু অধিকারীর গলায়।

ব্যর্থতার দায় অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দলবদলু নেতা এখন বলছেন, সংগঠনের কাজে তিনি তেমন আগ্রহী নন। এমনকী সংগঠনের হস্তক্ষেপ করেন না। এরপর থেকেই শুরু হয়েছে জল্পনা। কারণ লোকসভা ভোটের ফলাফলের পর থেকেই রাজ্য বিজেপি-র অন্দরে শুরু হয়েছে কোন্দল। বারবার বিভিন্ন তাবড় তাবড় বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন। চলেছে দড়ি টানাটানি। দায় ঠেলাঠেলি। একাধিকবার দলের সিদ্ধান্তকে ‘দায়ী’ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, খোদ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে বলতে শোনা গিয়েছিল, সব সিদ্ধান্ত তিনি নেন না, কিন্তু রাজ্য সভাপতি হওয়ার দরুন দায় তাঁকেই নিতেই হবে। রাজনৈতিক কারবারিদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন আকার ইঙ্গিতে এই সকল রাজ্য নেতারা কি বিজেপির ফলাফল খারাপের পিছনে আঙুল তুলছেন শুভেন্দু অধিকারীর দিকে? তাই কি বিরোধী দলনেতার অভিমান করে কৌশলী বার্তা দিয়ে বোঝলেন তিনি সংগঠনের কাজে আগেও হস্তক্ষেপ করেননি?

শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, “আমাকে যেখানে প্রচার করতে যেতে বলা হয় সেখানে যাই। সংগঠিত করার কাজ আমার নয়। কেবলমাত্র আমার জেলাতে পার্টির সংগঠনের নেতারা রাজ্যের নির্দেশিকাও যেমন পালন করেন, আমার পরামর্শও মেনে চলেন। এর বাইরে সাংগঠনিক ব্যাপারে আমি কোনও দিন হস্তক্ষেপ করি না।” একদিকে, যখন সুকান্ত মজুমদারকে বলতে শোনা গিয়েছে, “সিদ্ধান্ত হয়ত অন্য কেউ নেবে। তবে দায় আমাকেই নিতে হবে।” সেখানে আবার বিরোধী দলনেতাও বলছেন, সংগঠিত করা তাঁর কাজ নয়। তাহলে খারাপ রেজাল্টের দায় কার? উত্তর না মিললেও এর দায় ঠেলাঠেলি যে অব্যাহত রয়েছে সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

আরও পড়ুন- রাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ সাংসদ সায়নীর নজরে যুবদের স্কিল ডেভলপমেন্ট

spot_img

Related articles

তাম্রলিপ্ত পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচন অবৈধ, পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ হাইকোর্টের

তাম্রলিপ্ত পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ে বড়সড় পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের। চেয়ারম্যান চঞ্চল কুমার খাঁড়ার নির্বাচন পদ্ধতিকে অবৈধ ঘোষণা করল কলকাতা...

ফের রক্তাক্ত কোচবিহার: দিনহাটায় গুলিবিদ্ধ তৃণমূল নেতা

ফের দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য কোচবিহারে। দিনহাটার (Dinhata) বাড়ি থেকে বেরোতেই গুলি চালানো হয় তৃণমূল নেতা মিঠুন রাজভরকে লক্ষ্য করে।...

টিউশন থেকে ফেরার পথে নাবালিকাকে গলার নলি কেটে খুনের চেষ্টা! চাঞ্চল্য মালদহে 

সাতসকালে নয়, একেবারে জনবহুল সন্ধ্যার অন্ধকারে ফেরার পথে নৃশংস হামলার শিকার হল এক স্কুলছাত্রী। সোমবার সন্ধ্যায় টিউশন পড়ে...

ক্ষত্রিয় সমাজ কার্যালয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিনিময় করলেন উৎসবের শুভেচ্ছা

উৎসবের মরসুমে শহর যখন আলোর সাজে সেজে উঠেছে, ঠিক তখনই জনসংযোগের চেনা মেজাজে ধরা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।...