সৌজন্য সাক্ষাৎ: মুখ্যমন্ত্রী আসায় আনন্দিত BJP সাংসদ অনন্ত মহারাজ, জল্পনা রাজনৈতিক মহলে

সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে একটি আসন পেয়েছে তৃণমূল। বিজেপিকে হঠিয়ে কোচবিহার আসনটি দখল করেছে রাজ্যের শাসকদল। ভোটের ফল প্রকাশের পরেই কোচবিহার গিয়ে মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিলেন তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তারপরেই তিনি দেখা করলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজের (Ananta Maharaj) সঙ্গে। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান তাঁর বাড়ি আসায় খুবই আনন্দিত বলে জানান বিজেপি সাংসদ। আর তাঁর বাড়ি দেখে মমতাও প্রশংসা করছেন বলে জানিয়েছেন অনন্ত মহারাজ। তবে, এই সাক্ষাৎ ঘিরে জল্পনা রাজনৈতিক মহলে।

মঙ্গলবার, সকালে অনন্ত মহারাজের (Ananta Maharaj) বাড়ি যান মমতা। বাড়ির গেটে থেকে রাজবংশী সংস্কৃতিতে কাঁচা পান-হলুদ ও গামছায় মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানান তিনি৷ কোচবিহারের চকচকা গ্রামে অনন্ত মহারাজের বাড়িতে প্রায় আধঘণ্টা ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস৷ আলোচনা শেষে মুখ্যমন্ত্রী হাসি মুখে বেরিয়ে হাসিমারার উদ্দেশে রওনা দেন। সাক্ষাৎ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে মমতা কিছু না জানালেও অনন্ত মহারাজ জানান, রাজনৈতিক আলোচনা নয়, তাঁদের মধ্যে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ হয়েছে। এই প্রথমবার কোনও মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বাড়িতে এসেছেন। স্বল্পাহারী মুখ্যমন্ত্রী শুধু গ্রিন টি খেয়েছেন। উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও দাবি অনন্ত মহারাজের।কোচবিহার লোকসভা আসন জেতার পর কোচবিহার মদনমোহন মন্দিরে এদিন মা মাটি মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে পুজো দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কোচবিহারের জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মিনা সহ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ, নবনির্বাচিত তৃণমূলের সাংসদ জগদীশ বর্মা বসুনিয়া, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্র পরিবহন সংস্থার চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়-সহ দলের সকলকে নিয়ে মন্দিরে পুজো দেন। তার আগে জেলা নেতাদের নিয়ে সার্কিট হাউজে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷

মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি মা মাটি মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে সকলের জন্য শুভ কামনা করেছি, যাতে সবাই শান্তিতে থাকে ভালো থাকে। সকলের কামনায় পুজো দিলাম। কোচবিহার মদনমোহন মন্দিরে আমি প্রায়ই আসি। সময় থাকলে শিবযজ্ঞ মন্দিরেও যেতে পারতাম। আমার গোত্র একটাই মা-মাটি-মানুষ গোত্র। যেহেতু কোচবিহারের মানুষ দুই হাত তুলে আমাকে আশীর্বাদ করেছে তাই আমি সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্যই আমার কোচবিহারে ছুটে আসা। মদনমোহন মন্দিরের গেস্ট হাউস উন্নয়নের কাজ ভালো ভাবে করা হচ্ছে। হেরিটেজ টাউনের কাজও নতুন ভাবে শুরু হবে। নির্বাচনের জন্য মাস তিনেক কাজ বন্ধ ছিল। নবদ্বীপ ও কোচবিহারে সেরা হেরিটেজ টাউন হচ্ছে।”

অনন্ত মহারাজ (Anant Maharaj) জানান, ”পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এসেছেন আমার বাড়িতে, এটা খুবই আনন্দের। উনি এসেছিলেন। আমি যথাসম্ভব আপ্যায়ণ করেছি। তবে রাজনীতির কোনও কথা হয়নি। সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল।” মুখ্যমন্ত্রী কী বললেন? সাংসদ জানান, ”আমার বাড়ি দেখে উনি খুব খুশি। বললেন, এত সুন্দর বাড়ি আমি আগে দেখিনি। খুব ভালো লেগেছে ওঁর। বাড়ির প্রশংসা করছিলেন।”

তবে, তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে অনন্ত মহারাজের সাক্ষাৎকে ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে। সাংসদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এমনিতেই কোচবিহারের লোকসভা আসন হারিয়ে কোণঠাসা অবস্থা গেরুয়া শিবির। সেই পরিস্থিতিতে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদে তৃণমূল সভানেত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ঘিরেও চরম জল্পনা।