পেপার সিগনাল পেয়েছিলেন মালগাড়ির চালক, তাহলে কীভাবে তিনিই অপরাধী?

TA 912 ছাড়া মালগাড়ি সিগনাল ভেঙে এগোলে সেটাও গার্ডের নজরে আসার কথা। কারণ গাড়ি তিনটি সিগনাল পেরিয়েছিল

তদন্ত হয়নি। তার আগেই দোষী সাব্যস্ত মালগাড়ির চালক। তরতাজা যুবক মালগাড়ির চালককেই কাঠগড়ায় তুলেছে রেল দফতর। যদিও সরকারিভাবে এক যাত্রীর তরফে ঘটনায় যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে তাতে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির ঘাড়েই দোষ চাপানো হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হবে বুধবার থেকে। যদিও তার আগে যে পেপার সিগনাল পেয়ে মালগাড়ি এগিয়েছিল কাঞ্চনজঙ্ঘার পিছনে সেই ফর্ম TA 912 প্রকাশ্যে আসার পরে দেখা যাচ্ছে মালগাড়িকে সেই ফর্ম বা পেপার সিগনাল দেওয়া হয়েছিল। তবে কোনও যুক্তিতে তদন্ত শুরু হওয়ার আগে চালককে দোষী সাব্যস্ত করলেন রেলের সিইও, প্রশ্ন তুলছেন রেল কর্মীদের সংগঠনগুলি।

TA 912 ফর্ম থাকলে যে কোনও গাড়ির চালক কোনও সিগনাল অমান্য করে এগোনোর ক্ষমতা পেয়ে থাকেন। এটাই সহজ কথায় পেপার সিগনাল। একমাত্র এই সিগনাল পেলেই মালগাড়ির চালকের এগোনোর কথা ছিল। সেক্ষেত্রে যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে তার আগে তিনটি লাল সিগনাল পেয়েছিলেন তিনি। সেগুলি পেরিয়েছিলেন কীভাবে তিনি, যদি না পেপার সিগনাল তাঁর কাছে থাকত। যদি সেই সিগনাল ছাড়া মালগাড়ির চালক লাল সিগনাল ভাঙলে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা ছিল স্টেশন মাস্টারের হাতে। রেলের ব্যবস্থায় স্টেশন মাস্টার দেখতে পান সিগনাল ভাঙার বিষয়টি। তিনি বিদ্যৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন বা অন্য উপায়ে মালগাড়িটি আটকাতে পারতেন। কারণ তিনি জানতেন সামনে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস রয়েছে।

অন্যদিকে পেপার সিগনাল স্টেশন থেকে পেলে ট্রেনের গার্ডেরও সেটা জানার কথা। TA 912 ছাড়া মালগাড়ি সিগনাল ভেঙে এগোলে সেটাও গার্ডের নজরে আসার কথা। কারণ গাড়ি তিনটি সিগনাল পেরিয়েছিল। অন্তত একটি সিগনালে গার্ডের সেটা লক্ষ্য করার কথা ছিল। আর তাঁর কাছেও এমার্জেন্সি ব্রেক থাকে। চালক ভুল করলে তিনি গাড়ি থামাতে পারতেন। একসঙ্গে পেপার সিগনাল না পেয়েও একই ভুল মালগাড়ির চালক, সহকারী চালক থেকে গার্ড সবাই ভুল কীভাবে করলেন, প্রশ্ন তুলছেন রেলের কর্মী সংগঠনগুলি।

সোমবারই কাঞ্চনজঙ্ঘার এক যাত্রী দুর্ঘটনার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই অনুযায়ী বুধবার থেকে তদন্তে নামবে রেলের তদন্তকারী দল। তবে তাঁর আগেই রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান যদি মালগাড়ির চালককে কাঠগড়ায় বসিয়েই দেন, তাহলে তদন্তকারী দলের উপরও তা বাড়তি চাপ হয়, দাবি কর্মচারী সংগঠনগুলির। সেই সঙ্গে একই ট্র্যাকে অল্প সময়ের ব্যবধানে দুটি ট্রেনকে যেতে দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।