ফুটপাথে ঘুমন্ত যুবককে পিষে দিয়েও জেলের বাইরে! সাংসদ-কন্যার জামিন নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক

পুনের পোর্শে কাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় দেশ‌। তারমধ্যেই আরও এক পথ দুর্ঘটনাকে ঘিরে শুরু নয়া চাঞ্চল্য। এবার ঘটনাস্থল চেন্নাই (Chennai)। সূত্রের খবর, রাজ্যসভার সাংসদ বিড়া মস্তান রাওয়ের মেয়ে মাধুরীর বিরুদ্ধে রাস্তায় শুয়ে থাকা এক যুবককে গাড়ি চাপা দেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে। ইতিমধ্যে হাসপাতালে ওই পথচারীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। তবে আশ্চর্যজনকভাবে এই ঘটনায় গ্ৰেফতার (Bail) হয়েও জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সাংসদ কন্যা। আর সেই ঘটনা নিয়ে শুরু জোর সমালোচনা।

ওয়াইএসআর কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ বিড়া মস্তান রাও। এবার তাঁর মেয়ে মাধুরীর বিরুদ্ধে চেন্নাইয়ের রাস্তায় এক যুবককে গাড়িতে পিষে মারার অভিযোগ উঠেছে। সূত্রের খবর, অভিযুক্ত মাধুরী BMW গাড়ি চালাচ্ছিলেন। সেই সময় রাস্তার ধারে শুয়ে ছিলেন এক যুবক। সোমবার মধ্যরাতে মাধুরীর হাতেই ছিল গাড়ির স্টিয়ারিং, অভিযোগ এমনই। এরপর পেশায় পেন্টার ওই যুবকের ওপর দিয়ে চলে যায় মাধুরীর গাড়ি। গাড়িতে এদিন মাধুরী ছাড়াও ছিলেন তাঁর এক বান্ধবী। চেন্নাইয়ের বসন্ত নগরে এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। সূত্রের খবর, বছর ২৪ এর ওই যুবক রাস্তার ধারে মদ্যপ অবস্থায় শুয়ে ছিলেন। তার শরীরের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে পিষে দেন মাধুরী।

পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পরই মাধুরী এলাকা থেকে পালিয়ে যান। এদিকে, দুর্ঘটনার পর মাধুরীর বান্ধবী গাড়ি থেকে নেমে আসেন। ততক্ষণে এলাকায় লোকজন জড়ো হয়ে যায়। তাঁদের সঙ্গে বচসা শুরু হয় মাধুরীর বান্ধবীর। খানিক বাদে সেই বান্ধবীও এলাকা থেকে পালিয়ে যান। পথের ধারে শুয়ে থাকা আহত ওই ব্যক্তির নাম সূর্য। এরপরই সূর্যকে সঙ্গে সঙ্গে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসকরা সূর্যকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন অভিযুক্ত। পুলিশ আরও জানিয়েছে, মৃত যুবক পেশায় ছিলেন এক জন চিত্রশিল্পী। মাত্র আট মাস আগে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে থানায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন মৃতের আত্মীয়স্বজন এবং স্থানীয়েরা। এরপরই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে যে গাড়িটি সূর্যকে চাপা দিয়েছে সেটি সাংসদ বেদ রাওয়ের সংস্থার গাড়ি। সেই সূত্র ধরে সাসংদ-কন্যা মাধুরীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে গ্রেফতার হওয়ার পর পরই থানা থেকেই জামিন পেয়ে যান তিনি।

২০২২ সালে বেদকে রাজ্যসভায় পাঠায় জগন্মোহন রেড্ডির দল। তবে তাঁর আগে তিনি বিধায়কও ছিলেন। রাজনীতির সঙ্গে তাঁর বহু পুরনো সম্পর্ক। এ ছাড়াও সামুদ্রিক খাবারের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বেদ। তবে সাংসদের মেয়ে মাধুরীর জামিন পাওয়ার ঘটনা নিয়ে ক্ষুব্ধ অনেকেই। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়েই কি মেয়েকে জামিনে মুক্ত করিয়েছেন বেদ? উঠছে প্রশ্ন।