প্রশ্ন ফাঁস বিতর্কে নজর ঘোরানোর চেষ্টা কেন্দ্রের, দেশজুড়ে চালু পাবলিক এগজামিনেশন অ্যাক্ট

যেভাবে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (NTA) পরীক্ষার মাথায় বসে দুর্নীতি করে চলেছে আর তাকে সাহায্য করছে বিজেপি, সেখানে দেশের মানুষের নজর ঘোরাতে দায় এড়ানোর জন্য নতুন নাটক করল এই সরকার।

দেশজুড়ে NET-NEET কাণ্ডে যখন প্রশ্নের মুখে শিক্ষা ব্যবস্থা, তখন গোটা বিষয় থেকে নজর ঘোরাতে চাপের মুখে পড়ে রাতারাতি পাবলিক এগজামিনেশন অ্যাক্ট (Public Examinations Act 2024) চালু করলো কেন্দ্র। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই এই আইন পাশ হলেও, শুক্রবার NEET- NET বিতর্কের মাঝে কেন্দ্রের তরফে এই আইনের নির্দেশিকা জারি করা হয়। প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও পরীক্ষায় নকল করা রুখতে এই আইন আনা হয়েছে বলে কেন্দ্র সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে। বিষয়টিকে নিয়ে তোপ দেগেছেন বিরোধীরা। যেভাবে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (NTA) পরীক্ষার মাথায় বসে দুর্নীতি করে চলেছে আর তাকে সাহায্য করছে বিজেপি, সেখানে দেশের মানুষের নজর ঘোরাতে দায় এড়ানোর জন্য নতুন নাটক করল এই সরকার। এভাবেই কেন্দ্রকে নিশানা করলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা মুখপাত্র শান্তনু সেন (Shantanu Sen)। তাঁর কথায়, বিজেপি শাসিত দেশে অপরাধীরাই প্রতিষ্ঠানের মাথায় বসে আছে। সুর চরিয়েছেন বিরোধীরাও। এসব করে কোনভাবেই দুর্নীতির দায় এড়াতে পারে না বিজেপি ও কেন্দ্র, বলছে বাম- কংগ্রেস।

কেন্দ্রের আনা নতুন আইনে বলা হয়েছে যদি কোনও এক বা একাধিক ব্যক্তি প্রশ্নপত্র ফাঁস করতে গিয়ে ধরা পড়েন, তবে তার ন্যূনতম ৩ বছরের জেলের সাজা হবে। সর্বাধিক ৫ বছর পর্যন্ত জেল এবং ১০ লক্ষ টাকা জরিমানাও হতে পারে। কেউ উত্তরপত্রেও পরিবর্তন করলে একই শাস্তি মিলবে এবং জামিন অযোগ্য ধারায় এই মামলা দায়ের করা হবে। কোনও নিয়ামক সংস্থা বা পরীক্ষা আয়োজক সংস্থা পরীক্ষায় নকল বা কোনও রকম জালিয়াতি সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও রিপোর্ট না করলে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে। তদন্ত চলাকালীন কোনও আধিকারিক অপরাধের সঙ্গে যুক্ত বলে প্রমাণ মিললে ন্যূনতম ৩ এবং সর্বাধিক ১০ বছরের জেল হতে পারে।পাশাপাশি ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে।আয়োজক সংস্থা নিজেই অপরাধে যুক্ত থাকলে, ন্যূনতম ৫ বছর ও সর্বাধিক ১০ বছর জেল হতে পারে। ১ কোটি টাকা জরিমানার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’র উল্লেখ থাকলেও জানানো হয়েছে, তা কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারাগুলিই এই আইনের ক্ষেত্রে কার্যকর থাকবে।

ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা নিট-এর পর গবেষণা করার জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা নেট-এও (NET ) প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। NEET তদন্ত চালাচ্ছে বিহারের আর্থিক দুর্নীতি দমন শাখা (EAU)। নেট পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের তদন্তে নেমেছে সিবিআই। নিটকাণ্ডে à§§à§© জনকে গ্রেফতার করা হলেও নেটকাণ্ডে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এই বিতর্কের মধ্যেই স্থগিত হয়েচে আরও এক সর্বভারতীয় পরীক্ষা। ২৫ ও ২৭ জুন যে CSIR-UGC-NET পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল শুক্রবার তা স্থগিত বলে জানিয়ে দিয়েছে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (NTA)। NTA-এর তরফে জানানো, ‘অনিবার্য কারণে’ ও ‘লজিস্টিক সমস্যার’ জেরে এই পরীক্ষা আপাতত স্থগিত রাখা হল। এই পরীক্ষার সংশোধিত সময়সূচি পরে সরকারি ওয়েবসাইটে ঘোষণা করবে NTA।