একই ট্র্যাকে ট্রেন আছে জানানোই হয়নি! চাঞ্চল্যকর দাবি মালগাড়ির সহ-চালকের

কেন কাঞ্চনজঙ্ঘার কথা মালগাড়িকে জানানো হয়নি, এই প্রশ্ন তুলে সহকারী চালক রেলকেই বিপদে ফেলে দিয়েছেন

রেল দুর্ঘটনা হলেই কোনও একজন মৃত রেলকর্মীর নামে দোষ চাপিয়ে দুর্ঘটনায় রেলের সামগ্রিক অব্যবস্থাকে লুকানোর চেষ্টা মোদি সরকারের রীতি। তবে কাঞ্চনজঙ্ঘার দুর্ঘটনায় এবার আর সেভাবে পার পাচ্ছে না রেল দফতর। দুর্ঘটনায় কোনওমতে প্রাণে বেঁচে যাওয়া মালগাড়ির সহকারী চালকের চাঞ্চল্যকর বয়ান সামনে এসেছে, যেখানে রেলের সামগ্রিক ব্যবস্থার গাফিলতির ছবিটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে চিফ লোকো ইন্সপেক্টরও তাঁর বয়ানেও মালগাড়িকে ভুল ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন। সহকারী চালক মনু কুমার সুস্থ হয়ে মুখ খুলতেই কার্যত ফুটো হতে শুরু করেছে রেলের মিথ্যের ফানুস।

কাঞ্চনজঙ্ঘার দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান দাবি করেছিলেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে মালগাড়ির সহকারী চালক মনু কুমারের। অর্থাৎ তখন থেকেই দুর্ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শীকে সবার নজরের আড়ালে রেখে দিতে চেয়েছিল রেল। কিন্তু মনু কুমারের পরিচয় প্রকাশ্যে আসার পর আর তার বয়ান চাপা রাখতে পারেনি রেল। মনু কুমারের স্পষ্ট দাবি, যে ট্র্যাকে মালগাড়ি ছিল সেখানে সামনে যে একটি গাড়ি রয়েছে তা তাঁদের জানানোই হয়নি। যে জায়গায় দুর্ঘটনাটি ঘটে তার ২০০ মিটার আগেই ছিল একটি বাঁক। বাঁক ঘুরতেই সামনে ট্রেন দেখে মালগাড়ি থামানোর সব রকম চেষ্টা করা হয়। কিন্তু দুর্ঘটনা এড়ানো যায়নি। সেই সঙ্গে পাশের লাইন দিয়ে সেই সময় আরও একটি গাড়ি থাকায় অন্য কিছু চোখে পড়েনি তাঁদের।

ইতিমধ্যেই যে সাত সদস্যের চিফ লোকো ইন্সপেক্টরের প্যানেল দুর্ঘটনার তদন্ত করেছেন, তাঁদের মধ্যে ওম প্রকাশ শর্মা নামে লোকো ইন্সপেক্টর দাবি করেছেন সিগনাল খারাপ থাকা অবস্থায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ছাতরপুর স্টেশন পৌঁছে না যাওয়া পর্যন্ত ওই ট্র্যাকে কমপ্লিট ব্লক থাকার কথা ছিল। এমনকি যে পেপার সিগনাল দেওয়া হয়েছিল সেটিও ভুল দেওয়া হয়েছিল, যেখানে স্পীড লিমিটের উল্লেখ ছিল না।

রেলকর্তাদের মুখ বাঁচানোর জন্য মালগাড়ির চালক ও সহকারী চালকের ঘাড়ে বন্দুক রাখার যে পন্থা রেল নিয়েছে কার্যত মনু কুমারের বয়ানে সেই পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেওয়া হয়েছে। কেন কাঞ্চনজঙ্ঘার কথা মালগাড়িকে জানানো হয়নি, এই প্রশ্ন তুলে সহকারী চালক রেলকেই বিপদে ফেলে দিয়েছেন। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে তাতে মালগাড়ির গতির অভিযোগ করা হয়েছে। এবার তার পাল্টা রেলকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছেন মনু কুমার।

Previous articleসন্দেশখালিতে বিজেপির হা.মলায় আ.ক্রান্ত মহিলা তৃণমূল কর্মী
Next article‘বিচিত্র বিশ্বকাপ’, উৎপল সিনহার কলম