পরমাত্মা সরাসরি মোদিজির আত্মার সঙ্গে কথা বলে: সংসদে বিজেপির ‘ধর্ম’কে কটাক্ষ রাহুলের

আপনি যদি প্রভু শিবের ছবি দেখেন, তবে বুঝবেন হিন্দুরা কখনও ভয়, হিংসা ছড়াতে পারে না। কিন্তু বিজেপি সর্বক্ষণ ভয়, ঘৃণা ছড়িয়ে বেড়ায়

বিজেপির ধর্মীয় চিন্তা গোটা ভারত, এমনকি হিন্দু ধর্মের সঙ্গেও খাপ খায় না। সংসদের অধিবেশনে একের পর এক উদাহরণ তুলে বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদিকে তুলোধোনা রাহুল গান্ধীর। যে হিংসার ধর্ম বিজেপি প্রচার করে তা হিন্দু ধর্ম নয় বলে দাবি করেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। যে ধর্মের প্রচারকে সামনে রেখে লোকসভা ভোটে লড়াই করেছে, সেই ধর্মীয় তাসই লোকসভায় দাঁড়িয়ে মুখোমুখে ফেরৎ দিলেন বিরোধী দলনেতা।

নির্বাচনী প্রচারে নিজেকে নন-বায়োলজিকাল বলে দাবি করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সেই বার্তাকে কটাক্ষ করে রাহুল সোমবার দাবি করেন, “প্রধানমন্ত্রী ঈশ্বরের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। পরমাত্মা মোদিজির আত্মার সঙ্গে সরাসরি কথা বলে। আমারা সবাই জৈবজাত। আমাদের জন্ম, মৃত্যু আছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী অজৈবজাত। আর সেই প্রধানমন্ত্রী বলেন গান্ধীজির অস্তিত্ব নেই। একটি চলচ্চিত্রের মধ্যে দিয়ে তাঁকে লোকে চিনেছে।”

যে সহনশীলতা হিন্দুধর্মে প্রচারিত হয়, বিজেপি তার কথা কখনও বলে না। সেই প্রসঙ্গ বোঝোতে গিয়ে শিবের ছবি সংসদে তুলে ধরেন রাহুল। তিনি দাবি করেন, “আপনি যদি প্রভু শিবের ছবি দেখেন, তবে বুঝবেন হিন্দুরা কখনও ভয়, হিংসা ছড়াতে পারে না। কিন্তু বিজেপি সর্বক্ষণ ভয়, ঘৃণা ছড়িয়ে বেড়ায়।” এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “সব মহান ব্যক্তিরা অহিংসার এবং ভয় নির্মূল করা কথা বলেছেন। কিন্তু যারা নিজেদের হিন্দু বলেন তাঁদের মুখে সবসময় হিংসা, ঘৃণা, অসত্য। আপনারা হিন্দু হতেই পারেন না।”

এই বক্তব্যের জেরেই উত্তাল হয় সংসদ। বিরোধী দলনেতাকে পাল্টা বলতে গিয়ে হিন্দুদের অপমানের অভিযোগ তোলেন মোদি। তাঁর দাবি, “গোটা হিন্দু সম্প্রদায়কে হিংসাশ্রয়ী বলে দেগে দেওয়া খুবই বিপজ্জনক।”

যে ধর্মনিরপেক্ষ ইস্যুতে বিজেপি ও বিরোধীরা গোটা লোকসভা নির্বাচনে প্রচার চালিয়েছেন, সেই নেতারাই ধর্মের ছবি ও আলোচনায় সংসদের একটি দিনের অধিবেশনের অর্ধেকের বেশি কাটালেন। এমনকি ধর্মীয় বিতর্ককে পাল্টা যুক্তি দিতে গিয়ে সংবিধানকেই হাতিয়ার করেন নরেন্দ্র মোদি। শিবের ছবি তুলে হিন্দুধর্মের ইতিবাচক দিক তুলে ধরা রাহুলকে কটাক্ষ করতে গিয়ে মোদির দাবি, “গণতন্ত্র এবং আমাদের সংবিধান আমায় শিখিয়েছে আমি যেন বিরোধী দলনেতাকে গুরুত্ব দিয়ে গ্রহণ করি।” যদি বিরোধী দলনেতার শুধুমাত্র বিরোধী দলনেতার ধর্মীয় আলোচনাকে তিনি গুরুত্ব দিয়ে নেন তবে তা গণতন্ত্র বা সংবিধানের প্রতি কতটা সুবিচার করা হবে, তা পরবর্তী অধিবেশনে প্রমাণিত হবে।

Previous articleটি-২০ বিশ্বকাপ জয়ের পরই ভারতের পরবর্তী লক্ষ্য স্থির করে দিলেন বোর্ড সচিব
Next articleকেন্দ্রের বঞ্চনা সত্ত্বেও ডেঙ্গু মোকাবিলায় তৎপর রাজ্য