মোদির “কালা কানুন”-এ অপরাধের ধারা মনে রাখতে কালঘাম ছুটছে পুলিশের

দেড়শো বছরেরও বেশি প্রাচীন, ব্রিটিশ আমলের ভারতীয় দণ্ডবিধির দিন শেষ। পয়লা জুলাই থেকে সরকারিভাবে বাতিলের খাতায় চলে গিয়েছে ইন্ডিয়ান পেনাল কোড, ১৮৬০! একইসঙ্গে ইতিহাস হয়ে গিয়েছে ফৌজদারি দণ্ডবিধি (সিআরপিসি ১৯৭৩) এবং ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট, ১৮৭২ও। গতকাল, সোমবার থেকে দেশে চালু হয়েছে “মোদির কালা কানুন”! আমূল বদলে গিয়েছে ভারতের ফৌজদারি আইন। বিরোধীদের প্রবল আপত্তিকে উড়িয়ে দিয়ে কার্যকর হল নরেন্দ্র মোদি সরকারের তিনটি নতুন ফৌজদারি আইন—ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (Bhartiya Naya Sanhita), ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম।

ফৌজদারি মামলাগুলির ক্ষেত্রে একেবারে শূন্য থেকে শুরু করতে হচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন, আইনজীবী, এমনকী বিচারক-বিচারপতিদেরও। ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় (Bhartiya Naya Sanhita) অপরাধের নতুন ধারা মনে রাখতে ঘাম ছুটছে পুলিশ অফিসার থেকে শুরু করে আইনজীবী, এমনকি বিচারপতিদেরও।

অপরাধের এফআইআর কোন সেকশনে করতে হবে, তাই নিয়ে বারবার আইনের বইয়ের পাতা ওল্টাতে ব্যস্ত রাজ্য পুলিশের বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়ির অফিসাররা। সাধারণ অপরাধের মামলা লিখতে গিয়ে পরামর্শ করতে হল সরকারি আইনজীবীদের সঙ্গে। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সময় না দিয়ে মোদি সরকার তাড়াহুড়ো করে এই আইন চালু করে দেওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন পুলিশের একটা বড় অংশ।

কেন্দ্রীয় সরকার আগেই জানিয়ে দিয়েছিল ১ জুলাই থেকে এই আইন কার্যকর হবে। কিন্তু মোদি-অমিত শাহরা সম্ভবত ভুলে গিয়েছিলেন দেশে লোকসভা নির্বাচন রয়েছে। যেখানে ব্যস্ত থাকতে হবে তামাম পুলিশ পরিবারকে। সমস্যার বিষয়টি তাঁরা ধর্তব্যের মধ্যেই আনেননি। আড়াই মাস ধরে দেশে নির্বাচন চলেছে। তাই নতুন আইন কার্যকর করার আগে যে ধরনের প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণের দরকার ছিল, তার কোনওটিই করে উঠতে পারেননি রাজ্যের থানা ও ফাঁড়ির অফিসাররা। নির্বাচন পর্ব মিটলে বিভিন্ন জেলায় অশান্তি বা গোলমাল থামাতে ছুটে যেতে হয়েছে তাঁদের। তার মাঝে কিছু ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে অফিসারদের জন্য। কিন্তু সময় কম থাকায় সমস্ত বিষয় কেবল ছুঁয়ে যেতে হয়েছে আইনের ক্লাস নিতে আসা শিক্ষকদের। অনেক অফিসারই ঠিকভাবে বুঝে উঠতে পারেননি নতুন আইন। তাড়াহুড়োয় সেখানে অনেক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ হয়নি। মোদি সরকারকে এই তারিখ বদল করার কথা বলা হলেও তাতে কানই দেয়নি তারা। আর তার ফল ভুগতে হচ্ছে সাধারণ পুলিশ কর্মীদের। শুরুর দিনেই নতুন ধারায় মামলা লিখতে গিয়ে বার বার হোঁচট খেতে হচ্ছে পুলিশকে।

আরও পড়ুন:এবার তমলুক, চুরির অভিযোগে ২ মহিলা সহ শিশুকে বেধড়ক মার ক্ষিপ্ত জনতার!

 

 

Previous articleডিভোর্সের জল্পনা অতীত, রং মিলন্তি সাজে কলকাতা ছাড়লেন অনির্বাণ-মধুরিমা
Next articleপরকীয়ার ‘অপরাধে’ সালিশিসভার নামে মারধর! আত্মঘাতী মহিলা, গ্রেফতার ৪