বিরোধীদের ধর্মীয় কটাক্ষের জবাবে বাংলাকে স্মরণ মোদির, লোকসভায় লাগাতার স্লোগান

এই দেশ যুগ যুগ ধরে শক্তির উপাসক। আমাদের বাংলা মা দুর্গার পূজা করে, শক্তির উপাসনা করে। বাংলা মাকালীর উপাসনা করে

বিজেপির ধর্মীয় নীতি কতটা ভ্রান্ত তা সোমবার উদাহরণ দিয়ে তুলে ধরেছিলেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। লোকসভার রেকর্ড থেকে সেই অংশ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বাদ দেন স্পিকার ওম বিড়লা। মঙ্গলবার প্রত্যাশিতভাবে সেই আক্রমণের পাল্টা দিলেন নরেন্দ্র মোদি। তবে সেখানেও তাঁকে বাংলার মা দূর্গার ঐতিহ্যকে টেনে আনতে হল। গোটা লোকসভা নির্বাচনে রামমন্দিরের ধ্বজা ওড়ানো মোদির মুখে রামলালার নাম এলো না। তবে এদিন বিরোধীদের প্রবল স্লোগানের মধ্যে গোটা রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তৃতা সম্পূর্ণ করতে মোদিকে।

লোকসভার বিরোধী দলনেতা দাবি করেছিলেন, বিজেপি যেভাবে হিংসার ধর্ম প্রচার করে, হিন্দু ধর্মে সেই হিংসার উপাসনা হয় না। তারই পাল্টা বলতে গিয়ে মোদি দাবি করেন, “এই দেশ যুগ যুগ ধরে শক্তির উপাসক। আমাদের বাংলা মা দুর্গার পূজা করে, শক্তির উপাসনা করে। বাংলা মাকালীর উপাসনা করে। সমর্পিত হয়ে করে।” এমনকি এদিন সংসদে নীল জহর কোট পরেও উপস্থিত হন তিনি। যদিও মোদির বক্তব্যের পিছনে বিরোধীরা বলতে থাকেন, “ঝুট বোলে কাউয়া কাটে।” বিরোধীদের দাবি, বাংলায় মাদুর্গা বা মাকালীর পূজা হলেও তাতে যে শক্তি ও হিংসার প্রকাশের দাবি বিজেপি করে, তা মিথ্যা।

লোকসভার প্রচারের সময়ও বাংলায় দুর্গাপুজো বা সরস্বতী পুজো না হওয়া নিয়ে মিথ্যা প্রচার চালিয়েছিলেন মোদি। বারবার বাংলার সংস্কৃতিকে কালিমালিপ্ত করেছিলেন ইউনেস্কো স্বীকৃতি পাওয়া দুর্গাপুজো নিয়ে মিথ্যা বলে। সেই নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার সংসদে দাঁড়িয়ে নিয়ে স্বীকার করলেন বাংলায় দুর্গাপুজো, কালীপুজো যুগ যুগ ধরে চলে আসছে।

তবে ধর্মীয় তিরে বিদ্ধ মোদি একবারও রামমন্দিরের নাম নেননি এদিন। যদিও হিন্দু ধর্মের কথাই মোদির বক্তব্যের ৮০ শতাংশ জুড়ে ছিল। সোমবারের প্রসঙ্গ টেনে এনে ধর্মীয় উস্কানি দিতেও ছাড়েননি তিনি। তাঁর কথায়, “সদনে গতকালের দৃশ্য দেখে এবার হিন্দু সমাজকে ভাবতে হবে এই অপনামজনক কথা কাকতালীয় না কোনও চক্রান্ত তৈরি হচ্ছে।”

বিরোধীদের তোলা দুর্নীতি বা কেন্দ্রের স্বৈরাচারী নীতিগুলির বিষয়ে যে আলোচনার দাবি জানানো হয়েছিল তার মধ্যে একমাত্র NEET কেলেঙ্কারি নিয়ে মুখ খোলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। কার্যত দুর্নীতির দায়ে বারবার অভিযোগের তিরে বিদ্ধ কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে আড়ল করতেই মাঠে নামেন তিনি। তাঁর দাবি, এই ধরনের কেলেঙ্কারি ঠেকাতে সরকার বদ্ধপরিকর। অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে এই দুর্নীতির তদন্ত চলছে।

মঙ্গলবার উত্তর প্রদেশের হাথরসে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় প্রায় ১০০ জনের। লোকসভার বক্তৃতা থেকেই সেই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন নরেন্দ্র মোদি। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানান তিনি।

Previous articleমুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে রাজ্যপাল
Next articleগণপিটুনির ঘটনায় জিরো টলারেন্স! পুলিশকে আরও নজরদারির নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর