নাম নেই FIR-এ! রাত পেরলেও অধরা ‘ভোলেবাবা’, আশ্রম থেকে খালি হাতেই ফিরল পুলিশ

মঙ্গলবার হাথরাসে (Hathras) সৎসঙ্গের আয়োজন করেছিলেন নারায়ণ সাকার হরি ওরফে সাকার বিশ্ব হরি ওরফে ভোলে বাবা (Bholebaba)। অনুষ্ঠান শেষেই হুড়োহুড়ি পড়ে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২৬। এদিকে রাত পেরিয়ে সকাল হলেও খোঁজ মেলেনি অনুষ্ঠানের আয়োজক ভোলে বাবা-র। স্বঘোষিত ওই ধর্মগুরুকে খুঁজছে পুলিশ। কিন্তু তিনি কোথায় রয়েছেন তা এখনও জানা যায়নি।  মঙ্গলবারের ঘটনার পর থেকেই হাথরসের বাসিন্দাদের একাংশের ক্ষোভ গিয়ে পড়েছে ভোলে বাবার উপর। তাঁর পোস্টার লক্ষ্য করে ছোড়া হচ্ছে ইট-পাথরও। এই ঘটনা সংক্রান্ত কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যদিও তার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

ইতিমধ্যে আগরার অতিরিক্ত ডিজিপির নেতৃত্বে বিশেষ টিম গঠন করে ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। হাথরাসে এখনও চলছে উদ্ধারকাজ। নামানো হয়েছে ডগ স্কোয়াড। চলছে ফরেনসিক পরীক্ষাও। এদিকে উদ্ধারকাজে একযোগে কাজ করছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ, এনডিআরএফ। মঙ্গলবার রাতের পর বুধবার সকালেও ভোলে বাবার আশ্রমে যায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশাল বাহিনী। কিন্তু এখনও তাঁর কোনও সন্ধান পায়নি পুলিশ। এদিকে বুধবার সকালেই এই ঘটনায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। যেখানে স্বঘোষিত ধর্মগুরু ভোলেবাবার নাম নেই। শুধুমাত্র মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে দেবপ্রকাশ মধুকরের। তিনি ওই সংস্থার মুখ্য সেবায়েত। তবে এখনও পর্যন্ত এই মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি৷

পুলিশের অনুমান, অনুষ্ঠানের পর ফুলরাই গ্রাম, অর্থাৎ যেখানে ওই পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, সেখান থেকে অন্তত ১০০ কিলোমিটার দূরে মাইনপুরীর আশ্রমে যান ভোলেবাবা‌। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে সেখানেও ওই ধর্মগুরুকে খুঁজে পায়নি পুলিশ। এদিকে বুধবারই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন বলে খবর। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইটাহ জেলার পাটিয়ালি তেহশিলে বাহাদুর গ্রামের বাসিন্দা ভোলে বাবা। সেখানেই রয়েছে তাঁর মূল আশ্রম। যদিও শুরু থেকেই সাধু ছিলেন না সুরজ। একটা সময় পর্যন্ত তিনি ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোতে চাকরি করতেন, অন্তত এমনটাই দাবি তাঁর। ২৬ বছর আগে ধর্মীয় উপদেশ দেওয়ার জন্য তিনি নাকি চাকরি ছেড়ে দেন। ধর্ম প্রচারের টাকায় বিভিন্ন জায়গায় সৎসঙ্গের আয়োজন করেন ভোলে বাবা। প্রতি মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে ভোলে বাবার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কয়েক লক্ষ ভক্ত সমাগমের সেইসব সৎসর্গে। মঙ্গলবার তেমনই এক অনুষ্ঠানে ঘটে মর্মান্তিক ঘটনা।

তবে হাথরসের ঘটনায় ইতিমধ্যে যোগী প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ছোট জায়গায় বড় জমায়েতের আয়োজন কেন করা হল? নাকি সৎসঙ্গে ছিল না কোনও শৃঙ্খলাই? বিপর্যয়ের সম্ভাব্য কারণ নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন। তবে আয়োজক সৎসঙ্গ কমিটিকেই দায়ী করছেন অনেকে। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর হুড়োহুড়ির কারণেই ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান শতাধিক মানুষ। আবার পুলিশের একাংশের অনুমান, ছোট জায়গায় জমায়েত হওয়ার ফলেই এমন ঘটনা ঘটেছে।

Previous articleহাতরাসে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২৬, আদালতে সিবিআই তদন্তের আর্জি
Next articleবাগদা উপনির্বাচন: পদ্ম পতাকা নিয়েই প্রচারে নির্দল প্রার্থী! কমিশনে নালিশ বিজেপির