সাদামাটা শাড়ি। কপালে টিপ। মাথায় সিঁদুর। আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে কোনও পরিবারের ছাপোষা এক গৃহবধূ। একনজরে দেখলে বোঝার উপায় নেই আপাত নিরীহ ৪৯ বছরের মধ্যে বয়স্কা ‘চাচি’ আসলে বড় বড় ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত। রেইকি করা থেকে দুষ্কৃতীদের আশ্রয় দেওয়া, অপরাধে ব্যবহারে গাড়ি জোগাড় থেকে লুঠের সামগ্রী পাচার – যাবতীয় কাজ দক্ষতার সঙ্গে অর্গানাইজ করে চাচি! প্রতি ডাকাতিতে তার ভাগ ৬-১০ লক্ষ টাকা!

প্রকৃত আশা দেবী। বাড়ি বিহারের সমস্তিপুরে। হাওড়ার ডোমজুড়ে ডাকাতির ঘটনায় বিহারের বেগুসরাই থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিহার এসটিএফের সঙ্গে চালানো এই যৌথ অভিযানে ধরা পড়েছে আরও একজন। এর আগে এই ঘটনায় সুবোধি সিং ঘনিষ্ঠ এবং ডোমজুড় ডাকাতির মূল চক্রী রবীন্দ্র সাহানী-সহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তারা এই মুহূর্তে বিহারের একটি মামলাতে হেফাজতে রয়েছে।


পুলিশ সূত্রের খবর, ডোমজুরের ডাকাতির বেশ কিছুদিন আগে এ রাজ্যে আসে আশা দেবী ওরফে চাচি। এক আত্মীয়র মাধ্যমে আসানসোলের একটি বাড়িতে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে। সেখান থেকেই তিনটে চোরাই বাইক কেনে ডাকাতির জন্য। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এরপর ডেকে পাঠায় ডাকাতদলটি। তার ফোন পেয়ে বিহার থেকে একে একে এসে পৌঁছয় রবীন্দ্র সাহানী, বিকাশ কুমার ঝা, মনীষ কুমার মাহাতো – অলোক কুমার পাঠক। বেশির ভাগই সমস্তিপুরের বাসিন্দা। চাচীর ভাড়া নেওয়া বাড়িতে থাকতে শুরু করে গ্যাং।

এরপর চাচি হাওড়ার অঙ্কুরহাটিতে চলে আসে। কিছুদিন সেখানে থেকে নিশানায় থাকা সোনার দোকানের রেইকি করে চাচি। সব কিছু প্ল্যান মোতাবেক হওয়ায় চাচির থেকে সবুজ সঙ্কেত পেয়ে ডাকাতির দিন কয়েক আগে অঙ্কুরহাটিতে পৌঁছে যায় রবীন্দ্র,বিকাশরা। সাজানো ব্লু প্রিন্ট অনু্যায়ী গত জুন মাসে ডোমজুরে সোনার দোকানে গুলি চালিয়ে ডাকাতি করে পালায়। চাচির ভূমিকা এখানে শেষ নয়। লুঠের পর সোনা কোন পথে, কার মাধ্যমে বিহারে পৌঁছানো, লুঠের পর কোথায় যাবে সেই নির্দেশ দিয়ে দেয়।


হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠী জানান, ডাকাতির ঘটনায় সাহায্যের জন্য ৬-১০ লক্ষ টাকা পেত চাচি। আজ, বৃহস্পতিবার চাচি-সহ দুজনকে হাওড়া নিয়ে এসে আদালতে পেশ করা হয়।

আরও পড়ুন: অর্ণবের পিএইচডি নিয়ে কেন ‘অনাবশ্যক জটিলতা’ তৈরি সংকীর্ণমনা উপাচার্যের? সরব কুণাল
