একদিকে শহরের গোটা সৌন্দর্য ঢাকা পড়েছে। অন্যদিকে যে কোনও সময়ে ঘটে যেতে পারে মুম্বইয়ের মতো দুর্ঘটনা। কার্যত তিলোত্তমাকে ঢেকে ফেলা হোর্ডিং নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই হোর্ডিং নিয়ে নতুন নিয়ম আনতে চলেছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। রাজ্যের ইতিহাসে প্রথমবার বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং নিয়ে নতুন নিয়ম তৈরি হতে চলেছে এই পদক্ষেপের হাত ধরে।
কলকাতা শহর সহ সব পুরসভা এলাকায় এবার সরকারি নিয়ম মেনে হোর্ডিং বসাতে হবে। কোথায় হোর্ডিং টাঙানো যাবে না নিয়ে নিয়ম জারি হবে। হেরিটেজ ভবন, কবরস্থান, শ্মশান, জলাশয় এবং ফরেস্ট এলাকায় হোর্ডিং লাগানো নিষিদ্ধ হতে চলেছে। এই সব এলাকা ‘নো হোর্ডিং জোন’ হিসাবে চিহ্নিত হবে। পুরসভাও নিজেদের ইচ্ছামতো হোর্ডিং লাগানোর নির্দেশ দিতে পারবে না। কোনও বাড়ির দরজা-জানালা বা খোলা জায়গা আটকে হোর্ডিং লাগানো যাবে না।
হোর্ডিং কেমন হবে, তা নিয়েও নিয়ম আনতে চলেছে রাজ্য। জাতিগত বা সাম্প্রদায়িক প্রচারে জারি থাকছে নিষেধাজ্ঞা। এছাড়াও নারী ও শিশুদের প্রতি শোষণের বার্তা ছড়ায় বা পশু পাখির উপর হিংসার বার্তা হোর্ডিং-এ দেওয়া যাবে না। কোনও নেশার বস্তু বা লটারির টিকিটের বিজ্ঞাপন হোর্ডিং-এ দেওয়া যাবে না বলেও নিয়ম আনতে চলেছে রাজ্য। সেই সঙ্গে হোর্ডিংয়ের মধ্যে লাল এবং সবুজ আলোর ব্যবহার নিষিদ্ধ হতে চলেছে।
ঝড়, বৃষ্টি বা ভূমিকম্পের মতো যেকোন রকম প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় যাতে হোর্ডিং ভেঙে না পড়ে সেই বিষয়ে নিশ্চিত করতে কোনও ইঞ্জিনিয়ারকে দিয়ে হোর্ডিংয়ের ‘স্ট্রাকচারাল ডিজাইন’ আগেই জমা দিতে হবে। হোর্ডিং তৈরির পরে তা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষন করে তার রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট পুরসভাকে জমা দিতে হবে। একদিকে যেমন বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলি নিজেরা ইচ্ছামতো হোর্ডিং লাগাতে পারবেন না, তেমনই পুরসভাও ইচ্ছামতো ছাড়পত্র দিতে পারবে না বলেই নতুন নির্দেশিকা খুব তাড়াতাড়ি প্রকাশ করতে চলেছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর।