সরকারি কর্মচারীদের আরএসএস করতে বাধা নেই! ৫৮ বছরের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার কেন্দ্রের

সরকারি কর্মচারীরা ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন। ১৯৬৬ সালে তৎকালীন কংগ্রেস পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল বর্তমানে নরেন্দ্র মোদি সরকার তা প্রত্যাহার করে নিল। ফলে এখন থেকে সরকারি কর্মচারীদের আরএসএসের (RSS) সঙ্গে যুক্ত থাকার ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা রইল না। যদিও সেই নিষেধাজ্ঞা এতদিন খাতায় কলমেই সীমাবদ্ধ ছিল। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য মোদি সরকারের এমন সিদ্ধান্তের খবর এক্স হ্যান্ডেলে প্রকাশ করে লিখেছেন, জানিয়েছেন, ৫৮ বছর আগে করা ‘অসাংবিধানিক’ একটা নিষেধাজ্ঞা অবশেষে তুলে নিল মোদি সরকার৷

এদিকে কংগ্রেস সহ বিরোধীরা কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছে। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের কথায় গান্ধী হত্যার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বল্লভভাই প্যাটেল আরএসএসের (RSS) উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। পরে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। কিন্তু ইন্দিরা গান্ধীর জারি করা নিষেধাজ্ঞা অটল বিহারী বাজপেয়ীর সরকারও বাতিল করেনি। নিশ্চয়ই এর পিছনে কোনও কারণ ছিল।

কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ গত ৯ জুলাই জারি করা একটি অফিস মেমরেন্ডাম সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন৷ নথিটি কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ, পাবলিক গ্রিভ্যান্স এবং পেনশন দফতরের৷ সেই নথি অনুযায়ী, এরপর থেকে আরএসএস-এর কোনও কাজে যোগ দিতে আর বাধা থাকবে না কোনও সরকারি কর্মীর৷ নথির ছবি শেয়ার করে পোস্টে জয়রাম রমেশ লিখেছেন, “গান্ধিজির হত্যার পরে সর্দার প্যাটেল ১৯৪৮ সালে আরএসএস-কে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন৷ তারপরে ভাল কার্যক্রমের আশ্বাসের উপর ভিত্তি করে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়৷ তারপরও কিন্তু, নাগপুরে আরএসএস কোনওদিন জাতীয় পতাকা ওড়াইনি’৷ জয়রাম রমেশ জানিয়েছেন, তারপর ১৯৬৬ সালে সরকারি কর্মীদের আরএসএস-এর কাজে যুক্ত থাকার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার৷

তাঁর দাবি, গত ৪ জুনের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং আরএসএস-এর মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে৷ তার ঠিক পরেই ৯ জুলাই ৫৮ বছরের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল মোদির সরকার৷ যে নিষেধাজ্ঞা অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলেও বহাল ছিল৷ তাহলে কি আরএসএস-কে তুষ্ট করতেই মোদি সরকারের এই ছোট্ট উদ্যোগ? জয়রাম রমেশ ১৯৬৬ সালে জারি হওয়া সেই নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত নথিও একইসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন৷

বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও। দলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়ান এক্স হ্যান্ডেলে বিয়টি নিয়ে তির্যক মন্তব্য করেন। ডেরেক বলতে চেয়েছেন, গোটা কেন্দ্রীয় সরকার, বিজেপি পরিচালিত রাজ্য সরকার ও তাদের আমলারা তো প্রায় সকলেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত। প্রায় ৬০ বছরের একটি নির্দেশিকাকে প্রত্যাহার করে সরকারি কর্মচারীদের জন্য আরএসএসের দরজা খুলে দিল মোদি সরকার।

আরও পড়ুন: আজ থেকেই শুরু বাজেট অধিবেশন, বিরোধীদের লাগাতার চাপে ব্যাকফুটে মোদি সরকার 

 

Previous articleনির্বাচনের আগেই ছন্দপতন, আচমকাই প্রেসিডেন্টের দৌড় থেকে সরে দাঁড়ালেন বাইডেন!
Next articleমুখে বিকাশের বুলি! বাজেটের আগে ফের মিথ্যাচার মোদির, পাল্টা প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা বিরোধীদের