দ্রব্যমূল্য থেকে বেকারত্ব বাড়ছে, অথচ নির্মলার উত্তর ‘অর্থনীতি স্থিতিশীল’!

অর্থনৈতিক সমীক্ষায় দাবি করা হয়, রাজ্যগুলি বিজেপির তৈরি শ্রমআইন কার্যকর করলেই রাজ্যে বেকারত্ব কমবে। কারণ এই নতুন আইন আগের থেকেও কড়া

একদিকে বাজারে নুন থেকে বিলাসের সামগ্রীর দাম ক্রমশ বেড়ে চলেছে। অন্যদিকে সেই নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা দেশের মানুষের। চাকরি হারিয়ে নতুন চাকরির পথ খুঁজে পেতে আত্মহত্যার পথ নিতে হচ্ছে যুব সমাজকে। সেখানে দেশের অর্থমন্ত্রী (finance minister) দাবি করছেন গত আর্থিক বর্ষে অর্থনীতি স্থিতিশীল (stable) ও মুদ্রাস্ফীতি (inflation) নিয়ন্ত্রণে। এমনকি গত আর্থিক বর্ষের সমীক্ষায় দাবি ১০০ দিনের কাজের সমীক্ষা দিয়ে গ্রামাঞ্চলের দারিদ্রকে পরিমাপ করা সম্ভব হবে না। বিরোধীরা বারবার গ্রামের মানুষের ক্ষমতায়নে একশো দিনের কাজের উল্লেখ করায় এবার বিজেপি সরকার সেই প্রকল্পকেই বাদের তালিকায় ফেলে দিতে তৈরি।

লোকসভা নির্বাচনের আগে অর্থনীতিবিদ তথা অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের (Nirmala Sitharaman) স্বামী পারাকালা প্রভাকর (Parakala Prabhakar) দাবি করেছিলেন নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির একটি কারণ হবে দেশের অর্থনীতি। সেক্ষেত্রে তিনি উল্লেখ করেছিলেন দেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য (inquality), বেকরত্ব (unemployment) ও মুদ্রাস্ফীতি বিজেপির পক্ষে ভোট দিতে বাধা দেবে সাধারণ মানুষকে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ২০২৫ আর্থিক বর্ষে মুদ্রাস্ফীতির হার ৪.৫ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে। সেই মুদ্রাস্ফীতিকেও নিয়ন্ত্রণে বলে লোকসভার বাজেট অধিবেশনের শুরুতে দাবি করেন অর্থমন্ত্রী।

সোমবার লোকসভায় ২০২৩ অর্থবর্ষের অর্থনৈতিক সমীক্ষা রিপোর্ট পেশ করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী দাবি করেন, আগের আর্থিকবর্ষে যে সব রাজ্য গ্রামীণ বেকারত্ব বেশি ছিল, তারা গত (২০২৩-২৪) আর্থিক বর্ষে সবথেকে বেশি কর্মদিবস দেখাতে পেরেছে। সেই যুক্তিতে বিজেপি সরকারের দাবি, একশো দিনের কাজ দিয়ে আর গ্রামীণ বেকারত্ব বা অর্থনৈতিক অবস্থাকে মূল্যায়ন করা যায় না।

অর্থনৈতিক সমীক্ষায় দাবি করা হয়, রাজ্যগুলি বিজেপির তৈরি শ্রমআইন কার্যকর করলেই রাজ্যে বেকারত্ব কমবে। কারণ এই নতুন আইন আগের থেকেও কড়া। অথচ নতুন কাজের পথ তৈরি বা শিক্ষিত বেকার সমাজে যে ব্যাপক বেকারত্ব, সেই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি সমীক্ষার রিপোর্টে। যদিও রাজ্যগুলির উপর দায় চাপিয়ে বেকারত্বের সমস্যাকে কেন্দ্রের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলার পন্থা নিয়েছে বিজেপি সরকার।

শুধুমাত্র জিডিপির ঘাড়ে চেপে দেশকে চরম আর্থিক উন্নতিতে দেখানোর মরিয়া প্রয়াস করেছে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। তাঁর দাবি, আগামী অর্থবর্ষে (২০২৪-২৫) দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হারের অনুমান রাখা হয়েছে ৬.৫ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের জিডিপি বৃদ্ধির হার হতে চলেছে অন্তত ৮.২ শতাংশ। চলতি অর্থবর্ষের চারটি ত্রৈমাসিকের মধ্যে তিনটিতেই আর্থিক বৃদ্ধির হার ৮ শতাংশের বেশি থাকবে। আর এই মাপকাঠিতেই নাকি বিচার হবে দেশের অর্থনীতি শক্ত খুঁটির উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে।

Previous articleজামিন অযোগ্য পরোয়ানা জারির আর্জি! বিজেপি সাংসদ কঙ্গনার বিরুদ্ধে আদালতে জাভেদ 
Next articleমুম্বইতে ফের অডি-আতঙ্ক, বেপরোয়া ধাক্কা দুই অটোতে