‘মানহানি’ দাবি করা রাজ্যপালের মুখ পুড়ল, ‘বাকস্বাধীনতা’র কথা বলল আদালত

শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতে আদালতের পর্যবেক্ষণ, রাজ্যপাল সম্পর্কে যেকোন মন্তব্য করতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রী সহ চার তৃণমূল নেতা

মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্যের চার তৃণমূল নেতা যে সত্য প্রকাশ করার জন্য রাজ্যপাল সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন, কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট তুলে ধরা হল সেই কথা। সেই সঙ্গে রাজ্যপাল সম্পর্কে যে কোনও মন্তব্য করা যাবে বলে জানায় আদালত। তবে সেই বক্তব্য যেন মানহানির পর্যায়ে না যায় তা লক্ষ্য রাখার কথা উল্লেখ করা হয়। নিজেকে আইনের ঊর্ধ্বে মনে করা রাজ্যপাল যে আদৌ কারো বাকস্বাধীনতা খর্ব করতে পারেন না তা স্পষ্ট করে দিল বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশ্বরূপ চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ।

রাজভবনে অস্থায়ী মহিলা কর্মীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় সত্য প্রকাশে বাধা দেওয়ার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের মন্ত্রীরা একাধিক প্রশ্ন তোলেন। সেই প্রসঙ্গেই মানহানি মামলা করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই মামলায় হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেয়, ১৪ অগস্ট পর্যন্ত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না মুখ্যমন্ত্রী বা চার তৃণমূলনেতা। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতে আদালতের পর্যবেক্ষণ, রাজ্যপাল সম্পর্কে যেকোন মন্তব্য করতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রী সহ চার তৃণমূল নেতা। যদিও মন্তব্য করার সময় মনে রাখতে হবে সেটা যেন মানহানির যে সংজ্ঞা আছে বা মানহানি সম্পর্কিত যে আইন আছে তাকে লঙ্ঘন না করে।

হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট উল্লেখ করে, মানুষের বাকস্বাধীনতা খর্ব করা যায়না। যদিও এই বাকস্বাধীনতার কিছু কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। সত্যি জানার অধিকার সবার আছে।

রাজ্যপালকে নিয়ে করা মুখ্যমন্ত্রী বা চার তৃণমূলনেতার মন্তব্য আদৌ মানহানিকর কিনা তা বিচারের জন্য এই মামলা ফের সিঙ্গল বেঞ্চে ফেরৎ পাঠায় ডিভিশন বেঞ্চ। পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয় এই সত্য প্রকাশের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী বা উচ্চপদে থাকা ব্যক্তিদের অনেক বেশি দ্বায়িত্বশীল থাকতে হয়। বিচারপতি কৃষ্ণা রাও-এর সিঙ্গল বেঞ্চ মামলায় হলফনামা আদান প্রদান করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে এই মামলায়।

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণের পরে তৃণমূলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয় তৃণমূলের পক্ষ থেকে। প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেন, “রাজভবন নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে তদন্ত হওয়া উচিত। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে যে নারী নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে রাজ্যপালের উচিত সেই তদন্তে সহযোগিতা করা। অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ এসেছিল। সেই অভিযোগগুলো নিয়ে তদন্ত চাওয়া কারো মানহানি হতে পারে না।”

Previous articleফের চাপে রাজ্যপাল, ন্যায়বিচার চেয়ে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি ‘নির্যাতিতা’র
Next articleনজরে উত্তরের বন্যা পরিস্থিতি, বিধানসভায় ইন্দো-ভুটান জয়েন্ট রিভার কমিশনের প্রস্তাব পেশ