চিরতরে বন্ধ চিকেন! নাহুমসে গিয়ে ভেজেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে খাদ্যপ্রেমীদের

খাদ্যরসিকদের জন্য বড়সড় দুঃসংবাদ! এবার থেকে নাহুমসে (Nahoum) চিরতরে বন্ধ হয়ে গেল চিকেন (Chicken)। হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি নাহুমসে গেলে আর চিকেনের কোনওরকম পদই পাওয়া তো দূরস্ত চোখেও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। আর রাতারাতি কলকাতার ১২২ বছরের পুরনো একমাত্র ইহুদি কনফেকশনারির (Confectionary) এমন সিদ্ধান্তে রীতিমতো মাথায় হাত খাদ্যরসিকদের। দোকানে গেলে আগের মতো আর দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না চিকেন পাফ থেকে শুরু করে চিকেন প্যাটিস, চিকেন মেয়োনিজের মত সব সুস্বাদু ও লোভনীয় পদ। অন্যদিকে আগে সপ্তাহে প্রতিদিন খোলা থাকলেও এবার থেকে প্রতি শনিবার বন্ধ থাকবে এই কনফেকশনারি। তবে আচমকা কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? সূত্রের খবর, ইজরায়েল থেকে নাহুমসের কর্ণধার অ্যাডাম নাহুমের নির্দেশের পরই পাকাপাকিভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে চিকেনের সমস্ত পদ।

কিন্তু আচমকা কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন কর্ণধার?

মনে করা হচ্ছে এমন নিয়মের পিছনে রয়েছে ইহুদিদের মাংস কাটার পদ্ধতি। ইহুদিদের নিয়ম অনুযায়ী মুরগি কাটতে হবে এমন মানুষকে যিনি ইহুদি কসাই আইন সম্পর্কে সঠিকভাবে জানেন। পাশাপাশি এক কোপেই কাটতে হবে মুরগির গলা। এছাড়াও কড়া নজর রাখতে হবে রান্নার আগে মুরগিতে যাতে কোনওরকম রক্ত লেগে না থাকে। তবে কলকাতায় মুরগি কাটার জন্য এমন ইহুদি কসাইয়ের সন্ধান মেলা ভার। সেকারণেই অনেক ভেবেচিন্তে একেবারে চিকেনের সমস্ত পদকেই দোকান থেকে সরিয়ে দিলেন কর্ণধার অ্যাডাম নাহুম। বর্তমানে নিউ মার্কেটের এই জনপ্রিয় কনফেকশনারিতে গেলে ক্রেতাদের বলা হচ্ছে, চিকেন পুরোপুরি বন্ধ। তবে ভেজ এবং চিজ খাওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১২২ বছর ধরে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ভালো কেক, কুকিস, পেস্ট্রি বা প্যাটিসের খোঁজে দূরদূরান্ত থেকে এখানে ছুটে আসেন। প্রতিদিনই এখানে ভিড় জমলেও বড়দিনে নাহুমসের কেক ছাড়া পুরো আনন্দই অসম্পূর্ণ। বর্তমান দিনেও প্রাচীন ঐতিহ্য বজায় রেখে মানুষের কাছে ভালো খাবার পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর নাহুমস। তবে আজ থেকে নয়, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধান চন্দ্র রায় থেকে শুরু করে মহানায়ক উত্তম কুমার বা মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের অত্যন্ত পছন্দ ছিল নাহুমসের প্যাটিস। তবে শুধু তাঁদের নাম বললেই ভুল হবে নাহুমসের কেক, পেস্ট্রি বা প্যাটিস খেয়ে মোহিত হননি এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। তবে আচমকা এমন সিদ্ধান্তে খাদ্যরসিকদের মন খারাপ হলেও কিছুই করার নেই বলে সংস্থার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপাতত চিকেন পর্ব শেষ, ভেজ দিয়েই রসনাতৃপ্তি মেটাতে হবে শহরবাসীকে।

Previous articleশক্তি বাড়িয়েছে নিম্নচাপ, ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎসহ ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি! 
Next articleঅলিম্পিক্সের শুরুতেই ধাক্কা ভারতের, হতাশ করলে ভারতীয় শুটাররা