বৃত্ত সম্পূর্ণ হল, উচ্ছ্বাসে ভাসলেন মোহনবাগান রত্ন সৌরভ

সোমবার, ২৯ জুলাই মোহনবাগান দিবস। ১৯১১ সালের এই দিনেই ইস্ট ইয়র্কশায়ারকে হারিয়ে প্রথমবার আইএফএ শিল্ড জিতেছিল মোহনবাগান। ধুলোয় মিশেছিল ব্রিটিশ ঔদ্ধত্য। সকাল থেকেই নানান অনুষ্ঠান ছিল এই উপলক্ষ্যে। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যায় মোহনবাগান দিবসের মূল অনুষ্ঠান হল। এবারের মোহনবাগান দিবস প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্য বিশেষ একটি দিন। কারণ এদিন মোহনবাগান রত্নে ভূষিত হলেন সৌরভ।

এবার এই সম্মান পেয়ে গর্বিত সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। নিজের ক্লাব ক্রিকেট কেরিয়ারে ৯ বছর মোহনবাগানের হয়ে খেলেছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। মোহনবাগান তাঁবুতে অমর একাদশের মূর্তি উন্মোচনের দিনও উপস্থিত ছিলেন সৌরভ। দেওয়া হয়েছিল সদস্য কার্ড। এদিনের অনুষ্ঠানেও মূল আকর্ষণ সেই সৌরভই।

গোটা অনুষ্ঠানে মধ্যমণি হয়ে থাকলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর হাতে রত্ন তুলে দিলেন সচিব দেবাশিস দত্ত। মঞ্চে তখন নক্ষত্র সমাবেশ। বললেন ,এই ক্লাবে অনেক রত্ন আছেন আজ আমি পাচ্ছি। আগামী দিনের অন্যরা পাবেন আমি অত্যন্ত গর্বিত এই রত্ন সম্মান পেয়ে।

মোহনবাগান রত্ন পেয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন ময়দানে আমার একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হল এই ক্লাবের হয়ে নয় বছর ধরে খেলেছি। একটা সময় বাবার মেম্বারশিপ কার্ড নিয়ে খেলা দেখতে আসতাম। মাঠে এখন একটাই পিচ ছিল অনুশীলনের জন্য।

তাঁর কথায়, ‘খেলার মাঠ একটা ইতিহাস তৈরির জায়গা। এই ক্লাবের অনেকেই আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন। মোহনবাগান ক্লাবের সাফল্যে তাঁরা নিজেদের গর্বিত মনে করবেন। ১৯১১ সালে মোহনবাগান ঐতিহাসিক জয়লাভ করেছিল। আর মানুষ সবসময় জয়টাই মনে রাখে। বাকি আর কিছু নয়।’ সবুজ মেরুনের সহ-সভাপতি কুণাল ঘোষ বলেন, মোহনবাগান দিবস মোহনবাগানিদের কাছে আবেগের। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছি ইতিহাস। জড়িয়ে আছে ভারতের স্বাধীনতার লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা । এদিন কৃতীদের সম্মানিত করতে পেরে আমরা গর্বিত।কীভাবে সৌরভকে দলবদলের বাজারে মোহনবাগানে সই করিয়েছিলেন, সেই স্মৃতি তুলে ধরেন সভাপতি টুটু বোস। তিনি জানান, সৌরভের বাবা চাননি ছেলে মোহনবাগানে খেলুন, কিন্তু আমি মহারাজকে লুকিয়ে রেখেছিলাম অরুণ লালের বাড়িতে। আমাকে চণ্ডী গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, তোমাকে তো পুলিশে দিতে হবে। তুমি আমার ছেলেকে কিডন্যাপ করেছ! তা আমি বলেছিলাম, তুমি একবার সৌরভের মা-কে জিজ্ঞাসা করো তো। আমি ওঁর মায়ের কথা মেনেই ছেলেকে আমাদের ক্লাবে সই করিয়েছি। মায়ের আশীর্বাদ নিয়েই মোহনবাগানে খেলতে এসেছে তোমার ছেলে।

মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত বলেন, আজ মোহনবাগান দিবসে সবাই একজোট হয়ে এগিয়ে যাওয়ার শপথ নেওয়ার দিন।

বাংলার ফুটবলকে আবার স্বমহিমায় দেখতে চান ক্রীড়ামন্ত্রী। অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা পিছিয়ে পড়ছি। ১২ বছরে সন্তোষ ট্রফি পাইনি। সম্বরণ ব্যানার্জি ছাড়া কেউ রঞ্জি দিতে পারেনি। কবে বাংলার ছেলেরা খেলবে? কবে আরেকটা শিবদাস ভাদুড়ী আসবে? কলকাতা ফুটবলের আতুরঘর।‌ তিন ক্লাবকে বলব বাংলার ছেলেদের তুলে আনতে। ১৯১১ ভারতীয় ফুটবলার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আমি চাই একটা হিন্দি সিনেমা তৈরি হোক ১৯১১ শিল্ড জয় নিয়ে।’