২০২১-এর নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকে বাংলাকে MGNREGS-এ কোনও অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। মঙ্গলবারই এই বিষয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, মালা রায়, খলিলুর রহমন, দীপক অধিকারী (দেব) লিখিত প্রশ্নের জবাবে তথ্য দিয়ে স্বীকার করল মোদি সরকার। এরপরেই সংসদের বাইরে ফের গর্জে উঠলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর কথায়, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী টিপ্পনি না কেটে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন। তাহলেই সত্য প্রকাশ্যে চলে আসবে। তিনি জানান, এদিন মোদি সরকারের মন্ত্রীর বিবৃতিতেই দুধ আর জল আলাদ হয়ে গিয়েছে।
লোকসভার পরে যখন রাজ্যসভায় বাজেট বক্তৃতায় নির্মলা সীতারমণ বলেন, গত ১০ বছরে বাংলার জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল কিন্তু রাজ্য সরকার সেই অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেনি। এর পাল্টা ধুয়ে দেন অভিষেক। বলেন, “আমি নির্মলা সীতারামণের কাছে একটি সহজ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছিলাম – ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি হেরে যাওয়ার পরে, আবাস এবং MGNREGA স্কিমের জন্য কত বরাদ্দ করা হয়েছিল? ২৯ জন তৃণমূল সাংসদ আজ হাউসে ছিলেন। আমরা ভেবেছিলাম অর্থমন্ত্রী একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করবেন। কিন্তু তিনি তা করতে পারেননি। তীব্র কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, পরিকল্পিতভাবে উভয় কক্ষে মিথ্যাচার করেছেন এবং দেশের পাশাপাশি বাংলার মানুষকেও বিভ্রান্ত করেছেন নির্মলা।“
তৃণমূল সাংসদ তোপ দেগে বলেন, “যদি আমার কাছে শ্বেতপত্র থাকে, আমি তা দিতে দ্বিধা করব না। তাঁরা জনসমক্ষে এমন একটিও কাগজ দেখাতে পারছেন না। কারণ তাঁদের কাছে তথ্য নেই। আজ অবধি, তারা বাংলার ১.৭২ লক্ষ কোটি টাকা আটকে রেখেছে। দুদিন আগে, একই ইস্যু তুলতে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী নীতি আয়োগে গিয়েছিলেন। যেখানে তিনিই ছিলেন একমাত্র বিরোধী মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপির সঙ্গে তাঁর মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু জনগণের স্বার্থে তিনি গিয়েছিলেন।“ অভিষেকের (Abhishek Banerjee) কথায়, “আমরা মাথা নত করতে প্রস্তুত কিন্তু আমাদের অধিকার ভিক্ষা চাই না।“ মুখ্যমন্ত্রীকে নীতি আয়োগের বৈঠকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ জানান অভিষেক। সেখানে গোয়া, অন্ধ্র এবং অসমের মুখ্যমন্ত্রীদের প্রায় ২০ মিনিটের জন্য কথা বলার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে 2 মিনিটের বেশি যেতে দেওয়া হয়নি এবং ঘণ্টা বাজিয়ে বাধা দেওয়া হয়েছিল। বাজেটের বাংলার বঞ্চনা নিয়েও সরব হন অভিষেক। বাংলা থেকে নির্বাচিত ১২ জন BJP সাংসদকে জিজ্ঞাসা করা উচিত, তাঁদের মধ্যে একজনও কি আবাস এবং MGNREGA-এর জন্য বাংলায় প্রকাশিত তহবিলের বিষয়ে একটি শ্বেতপত্রের দাবিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কাছে চিঠি লিখছেন? তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথায়, “আমরা আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে হেরেছি। যান এবং একজন মহিলা খুঁজে বের করুন যিনি বলেছেন যে তিনি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাননি। এমনকী পুরুলিয়া বা কাঁথিতে এমন একজন মহিলাকে খুঁজে বের করুন যিনি বলতে পারেন, যে তৃণমূলকে ভোট দেননি বলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাননি। আমরা বৈষম্যের রাজনীতি করি না। যাঁরা এ ধরনের কথা বলছে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।“ এই কারণেই তিনি শ্বেতপত্রের দাবি জানাচ্ছেন বলে মত অভিষেকের।