বলিউড স্টাইলে এয়ার পিস্তল শুটিং, অলিম্পিক্সের আলোচনায় শুধুই ইউসুফ ডিকেচ

অলিম্পিক্সের (Paris Olympics 2024) মতো প্রতিযোগিতায় নিত্যদিন নানা কাণ্ড স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল। কখনও লক্ষ্যর সুপার হিউম্যান শট তো কখনও সিন্ধু বিদায় পর্ব। কর দখলে কত পদক সেই হিসেবের মাঝেই প্যারিসের প্রতিযোগিতায় উঠে এল বলিউড স্টাইল। সিনেমার ‘ঠোক দে…’ ভঙ্গিমায় ১০ মিটার এয়ার পিস্তল শুটিং বিভাগে রুপো জিতে হইহই কাণ্ড করে ফেলেছেন তুরস্কের মিক্সড টিমের পুরুষ সদস্য à§«à§§ বছরের ইউসুফ দিকেচ (Yusuf Dikec)। নিয়ম মাফিক শুটিংয়ের জন্য বিশেষ চশমা বা কানে বাইরের শব্দ আটকানোর ইয়ারগার্ড কোনওটাই ছিল না তাঁর। শুধু নিজের পাওয়ারওয়ালা চশমা পরে বাঁ হাত পকেটে রেখে ডান হাতে পিস্তল উঁচিয়ে শট মারলেন। ব্যাস এতেই ঘায়েল নেটদুনিয়া। এই নাহলে ‘swag’, বলছেন স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা।

à§«à§§ বছর বয়সী ভাইরাল শুটার মাতিয়ে দিলেন অলিম্পিক গেমস! সাধারণত মনোসংযোগ বৃদ্ধি ও দৃষ্টির স্বচ্ছতা রাখতে শুটিং চশমা ও শ্রবণরোধী ‘বর্ম’ পরেন শুটিং বিভাগে প্রতিটি প্রতিযোগীই। এটাই চেনা দৃশ্য। কিন্তু, এই বিভাগের ফাইনালে ইউসুফকে পুরো হিন্দি সিনেমা ‘আব তক ছাপ্পান’ স্টাইলে “ঠোক দে…” মার্কা প্রেজেন্টেশন দিতে দেখা গেল বিশ্বের অন্যতম বড় প্রতিযোগিতায়। রেকর্ড বলছে ফাইনাল রাউন্ডেই নয়, দিকেচ শুরু থেকেই এই স্টাইলে পিস্তল চালিয়ে বাকি প্রতিযোগীদের টেক্কা দিয়েছেন। অবশেষে ফাইনালে তিনি ও তাঁর সঙ্গিনী প্যারিস অলিম্পিক্সে রুপোর পদক গলায় ঝুলিয়ে নিলেন। এই ইভেন্টে সোনা জিতেছেন সার্বিয়ার জোরানা আরুনোভিচ ও দামির মাইকেচ। ব্রোঞ্জ পেয়েছেন ভারতের মনু ভাকের এবং সরবজ্যোৎ সিং। মাথায় পাকা চুল, চোখে পাওয়ারফুল চশমা, হালকা ভুঁড়ি- একেবারে সল্ট -পিপার লুকে বাজার কাঁপানো তুর্কির শুটারের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চর্চা চলছেই। একটি ভাইরাল পোস্ট এই মুহূর্তে তুমুল শোরগোল ফেলে দিয়েছে যেখানে বলা হচ্ছে, ডিভোর্স হওয়ার পরই নাকি তিনি শুটিং-এ আসেন। যদিও এটি সম্পূর্ণ ভুল বলেই নেটপাড়ার একাংশের দাবি। ইউসুফ আসলে প্রাক্তন মিলিটারি অফিসার। যিনি ২০০৭ সালে ভারতের হায়দরাবাদ থেকে সিলভার মেডেল জিতেছিলেন। কিন্তু অলিম্পিক্সে কীভাবে? স্যোশাল মিডিয়ার খবর অনুযায়ী ইউসুফ নাকি মর্নিং ওয়াকে বেরিয়ে প্রতিযোগিতার খবর পান। এরপর অলিম্পিক্সে শুটিং পর্বে এতটাই কুল স্টাইলে গুলি ছুড়লেন যেন মেলায় বেলুন ফাটাচ্ছেন।

ইউসুফ তুরস্কের ন্যাশানাল জেন্ডারমেরি ফোর্স-এর (National Gendarmerie Force) প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মিলিটারি অফিসার। দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। মাত্র একুশ বছর বয়সে জেন্ডারমেরি মিলিটারি স্কুলে ভর্তি হন তিনি। ১৯৯৯ সালে মিলিটারি সার্জন হয়ে যান। ট্রেনিং চলাকালীন তাঁর নিখুঁত নিশানা সকলের নজর কাড়তে শুরু করে। এরপর পরিচিতদের উৎসাহে ২০০১ সালে শুটার হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন। এর দুবছর পর থেকেই নিজের আসল খেলা দেখানো শুরু করেন। ২০০৩ এবং ২০০৪ সালেই ইউরোপিয়ান মিলিটারি চ্যাম্পিয়নশিপে পদক জিতে নেন। তারপর থেকে ইন্ডিয়া, জার্মানি, ব্রাজিল, ক্রোয়েশিয়া জেখানেই পা রেখেছেন মেডেল জিতেছেন। এখনও পর্যন্ত ১১টা গোল্ড মেডেল, ১১টা সিলভার এবং ৬টা ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছেন। যখন সবাই রিটায়ারমেন্ট লাইফ নিয়ে পরিকল্পনা করেন তখন ইউসুফ তাঁর ‘কুল’ স্টাইল নিয়েই আগামী ২০২৮ সালের লস এঞ্জেলস অলিম্পিক্সে সোনা জেতার ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী। আর সিনেম্যাটিক ‘ভাইলোগ’ স্টাইলে তাঁর পিস্তল শুটিং দেখতে অধীর আগ্রহে তামাম দর্শকমণ্ডলী।