“মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইব, আধিকারিকের কাছে নয়”, ইস্তফা দেওয়ার আগে প্রতিক্রিয়া অখিলের

‘বিত্তবান নয়, বিবেকাবান নেতা চাই তৃণমূলে’—একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে এই বার্তা রাজ্যের কোণায় কোণায় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তৃণমুল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, এর বাইরে গেলে ছেঁটে ফেলতে দু’বার ভাববেন না তিনি। হাতেনাতে তার প্রমাণ মিলে গেল। মহিলা রেঞ্জ অফিসারের সঙ্গে অভব্যতার কারণে অবশেষে ইস্তফা দিতেই হল মন্ত্রী অখিল গিরিকে (Akhil Giri)।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে আজ, সোমবারই কারামন্ত্রী পদে ইস্তফা দেবেন অখিল গিরি (Akhil Giri)। বিধানসভায় নিজে হাতে মুখ্যমন্ত্রীকে ইস্তফাপত্র দিতে চান তিনি। তবে মন্ত্রিত্ব যাওয়া নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই তাঁর, সেটা আগেও জানিয়েছিলেন।

এদিন পদত্যাগ করার আগে সংবাদ মাধ্যমকে অখিল বলেন, “রেঞ্জ অফিসারের দুটো কথাতেই গ্রামবাসীরা রেগে যান। তিনি গ্রামবাসীদের গুণ্ডা বলেছেন। অথচ ওই গুণ্ডাদের পয়সাতেই উনি বেতন পান।” তাঁর সংযোজন,“উত্তেজনাবশত বনদপ্তরের রেঞ্জ অফিসারকে আমি কিছু কথা বলেছি। তার জন্য আমি অনুতপ্ত। মানুষের জন্য লড়াই করতে গিয়ে হয়তো কোথাও ভুল করেছি। কিন্তু, তাঁদের জন্য লড়াই জারি থাকবে। মন্ত্রিসভা থেকে চলে যাচ্ছি, তাতে কোনও ক্ষোভ নেই। কিন্তু উত্তেজনার বশে যে কথাটা বলে ফেলেছি, তার জন্য আমি অনুতপ্ত। সুব্রত বক্সী বলেছেন যে মুখ্যমন্ত্রী সারাদিন টিভিতে দেখার পরই পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন।”

কিন্তু বনদফতরের ওই মহিলা আধিকারিকের কাছে কি ক্ষমা চাইবেন? এই প্রসঙ্গে এদিন অখিল গিরি বলেন, “কোনও আধিকারিকের কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই নেই। তবে আমার আচরণে মন্ত্রিসভা যদি কালিমালিপ্ত হয়ে থাকে, সরকারের ভাবমূর্তি যদি নষ্ট হয়ে থাকে, তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী হয়ে চিঠি লিখছি।”এদিন বিধানসভায় গেলেও অধিবেশনে উপস্থিত থাকবেন না অখিল গিরি। নিজের হাতে চিঠি দেবেন বলেই বিধানসভায় যাচ্ছেন তিনি।

২০২১ সালে মন্ত্রী হয়েছেন অখিল গিরি। মাত্র তিন বছরেই তাঁর মন্ত্রিত্ব চলে গেল। তবে নির্দেশ দেওয়ার পরও মহিলা আধিকারিকের কাছে অখিল গিরি যদি ক্ষমা না চান, তাহলে আগামিদিনে দলগতভাবে আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না, সেই চর্চা চলছে। এরই মধ্যে বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেছেন, ‘দলের নির্দেশ সকলকে মেনে চলা বাধ্যতামূলক। আর সোমবার বিধানসভায় গিয়ে আমিও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গোটা ঘটনার রিপোর্ট দেব।’ রাজনৈতিক মহলে এখন চর্চা চলছে, অখিল গিরির জায়গায় কে আসবেন? পূর্ব মেদিনীপুর থেকেই বা রাজ্য মন্ত্রিসভার প্রতিনিধিত্ব কে করবেন? সূত্রের খবর, এই জেলা থেকে নতুন মন্ত্রী হিসেবে উঠে আসছে বিধায়ক উত্তম বারিকের নাম। তিনি এবার কাঁথি লোকসভা নির্বাচনেও ভালো লড়াই দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: লোকসভা ভোটের ফান্ড নয়ছয়ের অভিযোগে একের পর এক নেতার ইস্তফায় অস্বস্তিতে বিজেপি