বাংলাদেশ সীমান্তে আটকে মানুষ থেকে আনাজ, আশঙ্কা পেট্রাপোল থেকে হিলিতে

অশান্তির আঁচ ছড়িয়ে পড়ে ভারতের হিলি সীমান্তে। এপার থেকেই দেখা যায় উত্তেজিত জনতা ওপারের একটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে

0
2

উত্তর চব্বিশ পরগণার ঘোজাডাঙা থেকে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি। বাংলাদেশের অশান্তি ও অস্থিরতার আঁচ সোমবার সরাসরি পড়ল বাংলার সীমান্ত লাগোয়া এলাকায়। একদিকে সীমান্তে বাণিজ্য বন্ধ হওয়ায় ক্ষতির মুখে দেশের ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে দেশে ফেরা নিয়ে আশঙ্কায় বাংলাদেশের বিভিন্ন রোগীরা। সেই সঙ্গে এপার বাংলার প্রশাসনের মাথাব্যথা বাড়ালো সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় অশান্তির ঘটনা।

গত কয়েকদিন বাংলাদেশের অশান্তির জেরে সীমান্তে দাঁড়িয়ে শয়ে শয়ে পণ্যবাহী গাড়ি। সোমবার পেট্রাপোল ও ঘোজাডাঙ্গা দিয়ে কিছু গাড়ি বাংলাদেশে ঢুকলেও দুপুর আড়াইটে নাগাদ বন্ধ হয়ে যায় দুই স্থল বন্দরের বাণিজ্য। কবে বাণিজ্য চালু হবে সেবিষয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। ব্যবসায়ীদের অনুমান অনির্দিষ্টকালের জন্য সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেল। সেক্ষেত্রে কোটি কোটি টাকা ক্ষতি হবে বলেই অনুমান ব্যবসায়ীদের। শুধু বাংলা নয়, এই সীমান্তে আটকে পড়েছে দেশের অন্যান্য রাজ্যের পণ্যবাহী গাড়িও।

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আদা রসুন পেঁয়াজ কাঁচালঙ্কা ফল সবজি ফসলের পাশাপাশি আটকে পড়েছেন অনেক মানুষও। বাংলাদেশ থেকে বহু রোগী প্রতিদিন চিকিৎসার জন্য ভারতে আসেন। অশান্তির পরিস্থিতিতে শান্ত হওয়ার অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা। কিন্তু সোমবারের পরে এই অশান্তি আদৌ থামবে না বড় আকার নেবে, সেই আশঙ্কায় বাংলাদেশে ফিরে যেতে ভয় পাচ্ছেন তাঁরা।

অন্যদিকে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্তেও আটকে কয়েকশো ট্রাক। হিলি এক্সপোটার্স এন্ড কাস্টম ক্লিয়ারিং এজেন্ট এসোসিয়েশন জানায় বাংলাদেশের অবস্থায় তাঁরা চিন্তিত, উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। বাংলাদেশে উত্তেজনা পরিস্থতির থাকার কারনে পণ্য রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে পণ্য রপ্তানি ছাড়াও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে লোকের আনাগোনা অনেকটাই কমেছে।

অন্যদিকে, কেদ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির ডিজিদের সঙ্গে আজ সন্ধায় একটি বৈঠক করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব কুমার। সূত্রের খবর, বৈঠকে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে সীমান্ত রক্ষা বাহিনী (‌বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স)‌, স্টেট ফোর্স ও কাস্টমসের আধিকারিকদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে নিরপত্তা নিশ্চত করার বিষয়ে আলোচনা হয়। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে অনেকেরই এদেশে চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে বিএসএফকে বিশেষ নজর রাখার কথা বলা হয়েছে। উদ্দেশ্য, যাতে কেউ অনুপ্রবেশ না করতে পারে।

তবে অশান্তির আঁচ ছড়িয়ে পড়ে ভারতের হিলি সীমান্তে। এপার থেকেই দেখা যায় উত্তেজিত জনতা ওপারের একটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। পাশাপাশি বেশ কিছু জায়গায় ভাংচুরও চালানো হয়। বিএসএফ সতর্ক হয়ে যায়, চেকপোস্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। হিলি সীমান্তে বেশ কিছু দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে বালুরঘাট থেকে জেলা পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা হিলি ছুটে আসেন। তারা হিলি সীমান্তে প্রহারত বিএসএফের উচ্চ পদাধিকারিদের সাথে বৈঠক করে পরিস্থিতির উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখছে বলে জানান দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তাল। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে বলে জানান।