কলকাতা হাইকোর্ট ৫ লক্ষ অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণ তুলে দেওয়ার রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারের হলফনামা তলব করল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। কলকাতা হাইকোর্ট কীভাবে রাজ্য শাসন করার চেষ্টা করছে, সেই তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেন রাজ্যের পক্ষে আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং। এক সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা তলব করেছে সর্বোচ্চ আদালত।

গত ২২ মে রাজ্য সরকারের জারি করা ৫ লক্ষ ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায়ের বিরোধিতায় সোমবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে রাজ্য সরকারের তরফে সওয়াল করতে গিয়ে প্রবীণ আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিং কলকাতা হাইকোর্টর রায়ের উপরে স্থগিতাদেশ চেয়েছিলেন। তিনি উল্লেখ করেন সব জাতিকে নজরে রেখে মণ্ডল কমিশনের সুপারিশ মেনে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণ করা হয়েছিল। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট দাবি করে শুধু মাত্র ধর্মীয় লাভের জন্য এই সংরক্ষণ করা হয়। সুপ্রিম কোর্টে ইন্দিরার জোর সওয়াল, “সরকার রাজ্যটা চালাতে চায়। কিন্তু আদালত চাইছে রাজ্য চালাতে। তবে আদালতই রাজ্য চালাক।” এই প্রসঙ্গেই তিনি তুলে ধরেন সরকারের পক্ষে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হলে তা বিচার ব্যবস্থার দ্বারে চলে যায়। এর ফলে বাংলায় শিক্ষাক্ষেত্রেও কোনও সংরক্ষণ করা যায়নি।
শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূঁড়ের পর্যবেক্ষণ, সংরক্ষণ কমিশনের সুপারিশ মেনে হয়েছে কিনা তা নিয়ে। তবে এই ঘোষণায় কোনও মৌলবাদী প্রতিক্রিয়া তৈরির করার দাবিটি অগ্রাহ্য করেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, এই সংরক্ষণে মৌলবাদী প্রতিক্রিয়া হবে এমন কথা বললে বাংলার জন্য় কোনও সংরক্ষণই হবে না। এটাই মৌলবাদ, বিরোধী আইনজীবীকে প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির।

সোমবারের শুনানির প্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ, মামলা বিস্তারিত শুনতে হবে। কীসের ভিত্তিতে রাজ্য ৭৭টি অনগ্রসর শ্রেণীকে সংরক্ষণ তালিকাভুক্ত করেছে তার বিবরণ পেশ করতে হবে আদালতে। ৩৭টি শ্রেণিকে অনগ্রসর ঘোষণার আগে আলোচনার অভাব হয়েছিল কি না, তাও পেশ করতে হবে। কীভাবে সমীক্ষা চালানো হয়েছে, সেই তথ্য পেশ করতে হবে। সেই সঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশের আবেদনও করতে হবে। ‘খোলা মনে’ই মামলার বিচার হবে বলে জানান প্রধান বিচারপতি। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৬ অগস্ট।
