অপরাধী একাধিক? ঘটনার রাতে কী করেছিল সঞ্জয়, গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ সিপির

নানা ধরনের গুজব রটছে। সেগুলো হল অনেকগুলো লোক যুক্ত রয়েছে। কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এইগুলো গল্প বানানো হচ্ছে

আর জি করে পড়ুয়া ডাক্তারের খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় সঞ্জয় রায় ছাড়াও আরও কেউ যুক্ত থাকতে পারে বলে দাবি করেছেন হাসপাতালের পড়ুয়া অন্য চিকিৎসকরা। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একাংশও দাবি করছেন ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি যুক্ত থাকার। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে সেই রাতে সঞ্জয় একাধিকবার হাসপাতালে গিয়েছিল। রেইকি করার কাজ কী সে তখনই করেছিল? পুলিশ কমিশনার সংবাদ মাধ্যমের সামনে জানিয়েছিলেন সিসিটিভি ফুটেজ থেকে একাধিক ব্যক্তিকে ঘটনার রাতে সেমিনার রুমের বাইরের ক্যামেরায় দেখা গিয়েছিল। যদিও বাকিরা যুক্ত কিনা তা তদন্ত সাপেক্ষ বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। রবিবার হাসপাতাল পরিদর্শন করে গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। কারো কোনও অভিযোগ থাকলে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার দাবি জানান কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল।

ঘটনার দিন মুর্শিদাবাদ থেকে ফিরেছিলেন সঞ্জয়। পরে তিনি হাসপাতালে যান। একাধিক সিভিক ভলান্টিয়ারকে নিয়ে কে কোথায় কোন ডিউটিতে রয়েছে দেখতে যায় সঞ্জয়। সেখান থেকে বেরিয়ে সোনাগাছি এলাকায় গিয়ে মদ্যপানও করেন। সেখান থেকে ফের হাসপাতালে যায়। এরপর সে একাই সেমিনার রুমের দিকে যায় প্রায় মধ্যরাতে। এমনকি ঘটনার পরে পুলিশ ব্যারাকে গিয়ে ফের মদ্যপান করে। সকালে উঠে ক্রমাগত তাকে মদ্যপান করতে দেখা যায়। প্রমাণ লোপাটে দ্রুত রাতের জামা কাপড় ধুয়ে ফেলে সে। পুলিশের সঙ্গে যুক্ত থাকায় ফরেনসিক প্রমাণ কীভাবে লোপাট করতে হয় তা তার জানা ছিল। পরে পুলিশ যখন তাকে আটক করে তখনও মদ্যপ অবস্থাতেই পুলিশি জেরার সম্মুখিন হয় সে।

হাসপাতালে আন্দোলনরত ডাক্তারদের দাবি, পুলিশ নিশ্চিত নয় অভিযুক্ত একাধিক ছিল কিনা। সেক্ষেত্রে আসল অপরাধীকে ধরার দাবিতে তাঁরা আন্দোলনে অনড়। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, যেভাবে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তাতে কঠিন লড়াই করেছিল নির্যাতিতা। তাঁর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে চোখ থেকে রক্ত বেরোনোর ঘটনায় তা বোঝা যায়। সেক্ষেত্রে তাঁর উপর অত্যাচার চালিয়েছিল যারা তাদের শরীরেও আঘাতের চিহ্ন থাকবে। তাই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, ওই রাতে ওই জায়গায় যারা উপস্থিত ছিল তাদের সবার ডাক্তারি পরীক্ষা হওয়া প্রয়োজন।

ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি যুক্ত কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশের ১১ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল। রবিবার আর জি কর হাসপাতালে পরিদর্শনে গিয়ে কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানান, “আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন। ওনাদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তাও ওনাদের কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের বলতে পারবেন। নানা ধরনের গুজব রটছে। সেগুলো হল অনেকগুলো লোক যুক্ত রয়েছে। কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এইগুলো গল্প বানানো হচ্ছে। যদি কারোর কোনো প্রশ্ন থাকে, আমাদের কাছে যোগাযোগ করতে পারেন। পড়ুয়ারাও যদি মনে করেন আরো কেউ যুক্ত থাকতে পারেন তাহলে আমাদের জানাবেন।”

সেই দিন রাতের কর্তব্যরত আরজি কর হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশন অফ পুলিশকে সরানো হল বলেও জানান পুলিশ কমিশনার। সিপির পরিদর্শনের পরই পড়ুয়ারা দাবি করেন, পুলিশ এখনও নিশ্চিত নয় একাধিক ব্যক্তি এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কিনা। তাই স্বচ্ছ বিচার ও প্রত্যেক অপরাধীকে গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার থেকেও তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান।

Previous articleএবার বিনেশকে নিয়ে মুখ খুললেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, কী বললেন তিনি?
Next articleরাতেই শহরে আসছেন আনোয়ার, সোমবার ভারতীয় ডিফেন্ডারকে নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা ক্লাবের, রয়েছে চমক : সূত্র