স্বতঃস্ফূর্ত জমায়েতে জনসংখ্যা আগে বোঝা সম্ভব নয়: জানালেন CP, গুজব না ছড়ানোর আবেদন

নেতৃত্বহীন স্বতঃস্ফূর্ত কোনও জমায়েতে জনসংখ্যা আগে থেকে ধারণা করা সম্ভব নয়। আর জি করে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। কিন্তু অত লোক একসঙ্গে হামলা চালালে সামলানো মুশকিল। বুধবার, রাতে আর জি কর হাসপাতালে (R G Kar Medical College And Hospital) হামলার ঘটনা নিয়ে শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই কথা জানালেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল (Vinit Goyel)। একই সঙ্গে আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস ধর্ষণ-খুনের ঘটনা নিয়েও গুজব না ছড়ানোর আবেদন জানান তিনি। হামলার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান বিনীত।এদিন সাংবাদিক বৈঠকে প্রথমে সেদিনের হামলার CCTV ফুটেজ দেখান পুলিশ কমিশনার। ১.২৮ মিনিট এবং ১.০৮ মিনিটের ২টি ভিডিও-তে দেখা যায়, কী ভাবে হাসপাতালে ঢুকছে জনস্ত্রোত। এক সময় জায়গা ধোঁয়ায় ভরে যায়। বিনীত গোয়েল (Vinit Goyel) বলেন, স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে কোনও জমায়েত হলে, তা নিয়ন্ত্রণ করা তুলনামূলক কঠিন হয়। কারণ, সেখানে কোনও নেতা থাকে না। নেতা থাকলে তার সঙ্গে কথা বলে জনসংখ্যা নির্ধারিত করা যায়। সেই রাতে সারা শহরে নানা রকম জমায়েত হয়েছিল। সর্বত্র নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করেছিল কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)।

পুলিশ কমিশনারের কথায়, আন্দোলন যে হঠাৎ হিংসাত্মক হয়ে উঠবে, তা পুলিশ আন্দাজ করতে পারেনি। বিনীত বলেন, “একে আমাদের ব্যর্থতা বললে বলতে পারেন।“ তিনি জানান, আর জি করে পর্যাপ্ত পুলিশও মোতায়েন ছিল। ডিসি নর্থ নিজে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু ডিসিপি নিজের আহত হওয়ায় সাময়িক ভাবে পুলিশ ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।

আর জি করের ঘটনায় সমাজমাধ্যমে নিয়ে নানা ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ পুলিশ কমিশনার বলেন, যে যেমন পাচ্ছে ঘটনার বিশ্লেষণ করছেন। তিনি স্পষ্ট জানান, কোনও পুলিশ আধিকারিক মৃতার বাড়িতে ফোন করে আত্মহত্যার কথা বলেননি। সিপি জানান, “কখনও বলা হচ্ছে গণধর্ষণ হয়েছে, ১৫০ গ্রাম বীর্য পাওয়া গিয়েছে। কখনও আবার কোনও মহাপাত্র পদবিধারীকে বিশেষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পদবির সঙ্গে জুড়ে দোষী হিসাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।“ এর তীব্র বিরোধিতা করে কলকাতার পুলিশ কমিশনার জানান, “আমাদের প্রমাণ দরকার। প্রমাণ ছাড়া কাউকে আমরা ধরতে পারি না। আমাদের কাউকে বাঁচানোর নেই। প্রমাণের অপেক্ষায় রয়েছি। দয়া করে গুজব ছড়াবেন না।“

আদালতের নির্দেশ আর জি কর-কাণ্ডে তদন্তভার এখন সিবিআইয়ের হাতে। তদন্তকারী সংস্থার প্রতি ভরসা রাখার আর্জি জানান বিনীত। তাদের পুলিশ সাহায্য করা হয়।

একই সঙ্গে এ দিন সিপি দাবি করেছেন, কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে আর জি কর-কাণ্ডে কোনও কিছুই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়নি। মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে পুলিশ। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মানে আত্মহত্যা নয়। যে কোনও রকম অস্বাভাবিক মৃত্যুতে এই ধারায় মামলা করে নিয়ম বিরুদ্ধ কিছু করেনি বলেই দাবি বিনীতের৷

সিপি জানান, হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার প্রমাণ লোপাটের জন্যই হাসপাতালে হামলা হয়েছে- এই অভিযোগ সরাসরি উড়িয়ে দিয়েছেন বিনীত ঘোয়েল। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদেও সেরকম কোনও তথ্য মেলেনি বলেই দাবি করেছেন তাঁর।