প্রশ্নের জবাবে তর্ক, খুলে গেল ‘ছাত্র সমাজের’ মুখোশ

ছাত্র সমাজ, ছাত্র সমাজ- বলে যাঁরা এতদিন ধরে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়ে আসছিলেন, সাংবাদিক বৈঠকেই তাঁদের মুখোশ খুলে গেল। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে মেজাজ হারিয়ে অন্যতম নেতা শুভঙ্কর স্বীকার করে নিলেন, তিনি গর্বিত আরএসএস কর্মী। ২৭ তারিখ নবান্ন অভিযান পুরোপুরি রাজনৈতিক কর্মসূচি। বিচারের দাবি নয়, দাবি মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের। অথচ ‘অরাজনৈতিক’ আখ্যা দিয়ে চাপা দেওয়ার চেষ্টা ছাত্র সমাজের সায়ন-শুভঙ্করদের। সাংবাদিকদের বৈঠকে প্রশ্নের মুখে বেরিয়ে গেল আসল সত্যি। পুলিশের অনুমতি নেই কেন? প্রশ্নের উত্তরে জানাচ্ছেন, তাঁরা নাকি জানেনই না কীভাবে অনুমতি নিতে হয়? অথচ নিজেদের শিক্ষক বলে দাবি করছেন আন্দোলনকারীরা। প্রতিচ্ছত্রে পরস্পরবিরোধী কথা বলে ল্যাজে গোবরে হয়ে শেষ পর্যন্ত সাংবাদিক বৈঠক ছেড়ে কার্যত পালালো ‘স্বয়ংসেবক ছাত্র সমাজ’।

একের পরে এক প্রশ্নের উত্তরে জবাব না দিতে পেরে তর্ক জুড়লেন ছাত্র সমাজের নামে আন্দোলনে ডাক দেওয়া নেতারা।
প্রশ্ন ছিল আপনারা কারা?
উত্তর হাতড়াচ্ছেন নেতা সায়ন। বলেন, তিনি শিক্ষক।
এর পরেই প্রশ্ন ছিল, এত বড় অভিযানে পুলিশের অনুমতি নেননি কেন?
তার উত্তরে ‘ছাত্র সমাজ’ জানায়, তারা না কি জানেই না কীভাবে অনুমতি নিতে হয়! তার পরে আবার বলা হয়, এদিন দুপুরেই না কি পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। তাহলে এতদিন কেন নেননি? নেতা সায়ন বলেন, এটা না কি সামাজিক মাধ্যমে ডাক দেওয়া আন্দোলন। সেই কারণে তাঁরা এই বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না।

এই অভিযান থেকে ‘ছাত্র সমাজ’ মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছে- কিন্তু তার কারণ কী? বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তো প্রথম থেকেই এই নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন। রাজ্য পুলিশই একমাত্র গ্রেফতারটা করেছে। আর তদন্ত করছে সিবিআই। বিচার চলছে সুপ্রিম কোর্টে। তাহলে কী কারণে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি? প্রশ্ন করতেই কথার উত্তর দিতে পারলেন না ছাত্র সমাজের নেতারা। কেন সিজিও কমপ্লেক্সে যাচ্ছে না? উত্তর নেই। শুধু বলেন পরে যাব।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি কী করে অরাজনৈতিক হতে পারে?
উত্তর দিতে গিয়ে মেজাজ হারান সায়ন-শুভঙ্কররা। অত্যন্ত অভব্য ভাবে সাংবাদিককে চুপ করতে বলেন! বিপুল প্রতিবাদ উঠলে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন স্বঘোষিত নেতারা।

এরপরেই একে একে মুখোশ খুলে যায় সায়ন-শুভঙ্করদের। সায়ন লাহিড়ী কার্যত স্বীকার করেন তিনি বিজেপি করতেন। আর যে নেতার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ সেই শুভঙ্কর হালদার চূড়ান্ত ঔদ্ধত্য দেখিয়ে, গর্বের সঙ্গে বলেন তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের (RSS) সক্রিয় সদস্য

অর্থাৎ ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়ল। নবান্ন অভিযানকে অরাজনৈতিক আখ্যা দেওয়ার চেষ্টা হলেও, আসলে তার পিছনে রয়েছে গেরুয়া শিবিরের চক্রান্ত। আর জি করকে সামনে রেখে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের অপচেষ্টায় নেমেছে বিজেপি-আরএসএস। সব মুখোশ খসে পড়ে মুখ বেরিয়ে পড়ল এবার।

Previous articleআর জি করে ধর্ষণ-খুনের অভিশপ্ত রাতে অন্য এক মহিলাও শ্লীলতাহানি করে ধৃত সঞ্জয়
Next articleরাজ্যের বদলে মিলল শুধু জেলা! লাদাখ নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে বাড়ছে ক্ষোভ