আর জি করের ঘটনায় হঠাৎ সরব রাষ্ট্রপতি! বিবেক ‘সমানভাবে’ জাগার বার্তা তৃণমূলের

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, "আপনার পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা বলে আর জি কর মনে পড়ল। আপনি রাষ্ট্রপতির চেয়ারে আছেন, বিজেপি নেত্রী নন

ঘটনার পরে পেরিয়ে গিয়েছে ২০ দিন। সিবিআই (CBI) তদন্তভার নিয়েছে ১৪ দিন। তদন্ত প্রক্রিয়াও সেই তিমিরেই। বিচারের আশায় এখনও অপেক্ষা করছেন আর জি করের (R G Kar Medical College and hospital) নির্যাতিতা তরুণী। এতদিন পরে হঠাৎই বিবেক দর্শনের চিন্তায় ডুবলেন দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু (President Draupadi Murmu)। গোটা দেশে সম্প্রতি একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনার পরেও বিজেপি নেত্রীর মতো আচরণ করে বাংলাকে বদনাম করতে শোনা গেল দেশের রাষ্ট্রপতিকে। ঘটনায় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। প্রশ্ন তোলা হয়েছে যে রাষ্ট্রপতি বিবেকের প্রশ্ন আর জি করের ঘটনার পরে তুলেছেন, তাঁর বিবেক মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের ঘটনাগুলিতে কেন জাগ্রত হয়নি।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বুধবার হঠাৎই সরব হন দেশের রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তিনি ‘হতাশ’ (dismayed) ও ‘আতঙ্কগ্রস্থ’ (horrified)। নারী নির্যাতন নিয়ে বলতে গিয়ে তাঁর মনে পড়ে শুধুই কলকাতার আর জি করের ঘটনা। যে ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ সেখানে ১৪ দিন ধরে কোনও দিকেই এগোতে পারেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই ঘটনা নিয়ে দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, “কলকাতায় ছাত্র, ডাক্তার, নাগরিকরা প্রতিবাদ করছেন। সেখানে অপরাধীরা অন্য কোথাও ঘুরে বেড়াচ্ছে।”

সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, “যথেষ্ট হয়েছে।” (Enough is enough) সকলের মিলিতভাবে ভুলে যাওয়ার কারণেই এই ধরনের ঘটনা বাড়ছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, “নির্ভয়ার ঘটনায় ১২ বছরের পরে অগণিত ধর্ষণের ঘটনা সমাজ ভুলে গিয়েছে। এই ধরনের সম্মিলিত ভুলে যাওয়া মেনে নেওয়া যায় না।” দেশে বারবার একই রকমের ঘটনার পরেও বলার ক্ষেত্রে দ্রৌপদী মুর্মু শুধুই কলকাতার ঘটনা উল্লেখ করায় প্রতিবাদে সরব রাজ্যের শাসকদল। রাষ্ট্রপতির পদের মর্যাদা রেখেই তাঁর পক্ষপাতমূলক আচরণের সমালোচনা করা হয়।

এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কটাক্ষ করেন, “আর জি করের পরে বিবৃতি করতে মনে হল মাননীয়া রাষ্ট্রপতির। ধর্ষণ সামাজিক ব্যাধি, গোটা দেশের ঘটে চলেছে পরের পর ঘটনা। দৈনিক গড়ে ৯০টা।” সেই সঙ্গে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, “আপনার পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা বলে আর জি কর মনে পড়ল। আপনি রাষ্ট্রপতির চেয়ারে আছেন, বিজেপি (BJP) নেত্রী নন। সোনার মেয়ে সাক্ষী মালিক (Sakshi Malik) অভিযোগ করলেন ব্রিজ ভূষণ তাকে শ্লীলতাহানি করেছে। পুলিশ দমন পীড়ন করল আন্দোলনরত মেয়েদের উপর। আর ব্রিজভূষণ বসেছিল সংসদ, যে সংসদে আপনি বক্তৃতা দিতে ঢোকেন। মুখ খোলেননি কেন? বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খুললে অসুবিধা হবে? বিজেপির নেত্রীর মতো, বিজেপির শিখিয়ে দেওয়া কথা।” কুণাল বিবেকের প্রশ্নে পাল্টা জানান, “আপনি যদি বিবেকের কথা বলতে চান বলুন। কিন্তু বিবেক মহারাষ্ট্র, উত্তরাখণ্ড, সাক্ষী মালিক – আপনার বিবেক যেন সব জায়গায় সমানভাবে জাগে।”

Previous articleTMCP-র নির্বাচনে ৫৫ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ হোক: দলনেত্রীকে প্রস্তাব অভিষেকের
Next articleআর জি কর আবহেও বক্স অফিসে রমরমিয়ে বাংলা ছবির ব্যবসা!