কালিম্পঙের ‘মর্গান হাউস’ সংস্কার শুরু, পুজোতে রেকর্ড ভিড়ের আশা পর্যটন বিভাগের

পাহাড়ের প্রতি মানুষের ভালবাসা চিরন্তন। তাই ছুটি পাওয়া মাত্রই কখনও দার্জিলিং (Darjeeling)আবার কখনও কালিম্পং (Kalimpong)পাড়ি দেয় বাঙালি। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে রাজ্য সরকারের তরফে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই তালিকায় নাম রয়েছে ব্রিটিশ শাসনকালের অন্যতম মর্গান হাউসের (Morgan House)। এই স্থাপত্যের ইউরোপীয় নির্মাণশৈলি বজায় রেখে নতুন করে সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (Government of West Bengal)তরফে।

শিলিগুড়ি থেকে ঘন্টা খানেকের দূরত্বে কালিম্পং শহরের ডম্বর চক এলাকার ২ কিলোমিটার বিস্তৃত গল্ফ কোর্স, তার ঠিক বিপরীতে রয়েছে ব্রিটিশ আমলের গা ছমছমে মর্গান হাউস। এই স্থাপত্যের সঙ্গে জড়িয়ে একাধিক ভুতুড়ে কাহিনী। লেডি মর্গানের নাম জড়ানো বিশিষ্ট পাহাড়ি অতিথি নিবাস, যার নাম মর্গান হাউজ নামেই খ্যাত। ব্রিটিশ আমলে তৈরি এই মর্গান হাউস এখন রাজ্য সরকারের পর্যটন দপ্তরের ‘বুটিক’ হোটেল হিসেবেই পরিচিত। যেখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং রোমহর্ষক অভিজ্ঞতা নিতে উৎসুক পর্যটকেরা ভিড় জমান সারা বছরই। ভূতের কথা উঠলেই পাহাড়ের দু-একটি জায়গা যার নাম শুনলেই আতকে ওঠে বঙ্গবাসী তারমধ্যে অন্যতম এই মর্গান হাউজ।এই বিষয়টি যাঁরা জানেন তাঁদের শিরদাঁড়া দিয়ে একটা হিমেল স্রোত বয়ে যায় এই হাউসের কথা উঠলেই। কেউ কেউ সেখানে মর্গান সাহেব ও তাঁর স্ত্রীর ভূতকে ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন বলে দাবি করেন। এই কথায় প্রচুর সঙ্গতি এবং অসঙ্গতি রয়েছে। কেউ বলেছে প্রমাণ রয়েছে আবার কেউ বলেছে প্রমাণ নেই। এমন অনেকেই রয়েছে যাঁরা রাত কাটানোর পর এখানে ভুতুড়ে ছায়ামূর্তির দেখা পেয়েছেন বলে দাবি করেন। মরসুমে এই হাউসে পর্যটকদের ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয়। কিন্তু আগে থেকে বুকিং করা থাকলেও পর্যটকদের তরফে অভিযোগ করা হচ্ছিল যে এখানে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব দেখা যাচ্ছে। তাই এবার সংস্কারের তোড়জোড় শুরু।

সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্য পর্যটন দফতরের তরফে উত্তরবঙ্গে ৬টি অতিথি নিবাস সংস্করণ হবে বলে জানা গিয়েছে। বিভিন্ন অতিথি নিবাসের সঙ্গে পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী মর্গান হাউসের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১০ কোটি টাকার প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। তবে লোকসভা ভোটের জন্য কাজ আটকে যায়। আগস্ট মাসে পাহাড়ের পাঁচটি অতিথি নিবাসের জন্য আলাদা করে কয়েক কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেখান থেকে মর্গান হাউজের জন্য ২২ লক্ষ টাকা দেওয়া হচ্ছে। জানা গিয়েছে, শুধু মর্গান হাউজের ভেতরের অংশ সংস্করণের জন্য দেড় কোটি টাকা আলাদা করে টেন্ডার করা হচ্ছে, পুরো টেন্ডার প্রক্রিয়া কলকাতা থেকে করা হবে। রাজ্য পর্যটন দফতরের এক যুগ্ম সচিবের কথায়, পাহাড়ে মর্গান হাউসের চাহিদা এখন তুঙ্গে। সাধারণ পর্যটকদের থাকা থেকে শুরু করে প্রি-ওয়েডিং শুট (Pre Wedding Shoot) সমস্তটাই মর্গান হাউসে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে পুরনো বাংলোটিকে সংস্করণের প্রয়োজন পড়েছে। যার জন্য বিশেষ করে পাইন কাঠ এবং পাথরের তৈরি এই বাংলোটি অবিকল রেখেই সংস্কার হবে, তবে পুজোর মরশুমের আগেই বাঙালির রোমহর্ষক পর্যটন কেন্দ্রে পুজোর ছুটি কাটাতে আরও বেশি ভিড় হবে বলে দাবি করছেন রাজ্যের পর্যটন বিভাগ।


Previous articleওজন বেশি, শরীরের ভারসাম্য না রাখতে পেরে আউট পাক ক্রিকেটার আজম খান
Next articleগণধর্ষণে অভিযুক্তদের জামিন! যোগীরাজ্যে বিজেপির ‘ভণ্ড নারীপ্রীতি’র পর্দাফাঁস