গণধর্ষণে অভিযুক্তদের জামিন! যোগীরাজ্যে বিজেপির ‘ভণ্ড নারীপ্রীতি’র পর্দাফাঁস

শনিবার এলাহাবাদ হাইকোর্ট জামিন দেয় কুণাল পাণ্ড্য ও অভিষেক চৌহানকে। সক্ষম প্যাটেলের জামিনের মামলার শুনানি ১৬ সেপ্টেম্বর

আর জি করের ঘটনা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল করা বিজেপি আদৌ যে নারীর সম্মান নিয়ে ভাবে না, তার আরও একটা প্রমাণ মিলল শনিবার। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটি পড়ুয়ার গণধর্ষণের ঘটনায় বিজেপির ইন্ধনে জামিন পেয়ে গেলেন দুই অভিযুক্ত। বিলকিস বানোর ধর্ষণে অভিযুক্তরা যেভাবে মুক্তি পাওয়ার পরে বীরের সম্মান পেয়েছিলেন, সেভাবেই দুই জামিন পাওয়া বিজেপি আইটি সেল কর্মীকে শনিবার বীরের অভ্যর্থনা জানালো বিজেপি। নরখাদকদের জেলে পচিয়ে রাখার পরিবর্তে যোগী সরকার যে ভূমিকা নিয়েছে, তার কড়া সমালোচনা করেছে তৃণমূল।

গতবছর নভেম্বরের ১ তারিখ বিএইচইউ-এর এক ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভিতরে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। প্রায় দুইমাস ক্যাম্পাসে দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন চালান পড়ুয়ারা। দুমাস পরে অবশেষে মূল অভিযুক্ত কুণাল পাণ্ড্য, অভিষেক চৌহান ও সক্ষম চৌহানকে গ্রেফতার হয়। গ্রেফতারির পরই সামনে আসে তিন দুষ্কৃতীর আসল পরিচয়। তিনজনই বিজেপির আইটি সেলের পদাধিকারী। তবে সাতমাস তদন্তের পরে যোগীরাজ্যের পুলিশ এমন তথ্য পেশ করে যে জামিন পেয়ে যায় দুই অভিযুক্ত।

বাংলায় চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় রাজ্যের প্রশাসন শুধুই দোষীদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া দ্রুত করেনি, রাজ্য সরকার আইন আনতে চলেছে ধর্ষণের মতো অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রণয়ন করতে। সেখানে শুধুমাত্র রাজনীতিকে জিইয়ে রাখতে আন্দোলনের খেলা খেলে চলেছে বিজেপি। অথচ উত্তরপ্রদেশে বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে ক্যাম্পাসের ভিতরে ঢুকে গণধর্ষণের ঘটনাতেও বিচার দিতে পারছে না বিজেপি সরকার। উল্টে কীভাবে সেই দোষীদের মুক্ত করা যাবে, তার প্রচেষ্টায় যোগী প্রশাসন। এই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল।

শনিবার এলাহাবাদ হাইকোর্ট জামিন দেয় কুণাল পাণ্ড্য ও অভিষেক চৌহানকে। সক্ষম প্যাটেলের জামিনের মামলার শুনানি ১৬ সেপ্টেম্বর। আদালতের এই রায়ের পরই তৃণমূলের দাবি, অমিত মালব্য-র আইটি সেলের তিন ধর্ষক কর্মীর মধ্যে দুজন যারা আইআইটি-বিএইচইউ ছাত্রীর গণধর্ষণে অভিযুক্ত, তাদের শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। এই ধরনের নরখাদকরা জেলের ভিতরেই থাকুক, এই নিশ্চয়তা দেওয়ার থেকে বিজেপির মেশিনারি তাদের আইনের বিরাট খাঁড়ার ঘা থেকে বাঁচাতে ঢাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কারণ, এভাবেই নিজেদের হাতের ভিতরে থাকা ধর্ষক ও অপরাধীদের পুরস্কৃত করে।