সরকারে আস্থা রেখে সিবিআইয়ের কাছে দ্রুত বিচার চাইছেন অভিনেত্রীরা

যাঁরা রাস্তায় আন্দোলন করেন, তাঁরা জানেন না পরের দিন কী হবে। কিন্তু সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত থামব না।

আরজি কর-কাণ্ডের ন্যায়বিচারের দাবিতে রবিবার পথে নেমেছিলেন সেলিব্রিটিরা। কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা নাগরিক সমাজের এই মিছিলে পা মিলিয়ে অপর্না সেন বলেন, মানুষের মধ্যে বিচারের দাবি নিয়ে যে সচেতনতা বেড়েছে, সেটা দেখে মনে হচ্ছে মেয়েদের সুরক্ষা ব্যবস্থার দিকটা এবার হয়তো আশানুরূপ হবে।সরকারের প্রতি আস্থা রেখে তিনি বলেন, এই ধরনের ঘটনার বিচার কিন্তু চটজলদি পাওয়া যায় না। বিদেশেও এমন হয় না। তিন সপ্তাহ হয়েছে খুব সম্ভবত। এটা যদি পিছিয়ে গিয়ে কিছু না হয়, তখন আমরা আবার নিশ্চয় বলব। কিন্তু তাই বলে এখনই কিছু হচ্ছে না, এমন ভেবে অস্থির হলে চলবে না। এখনই হাল ছেড়ে দেওয়ার মতো কিছু হয়নি। আজ আন্দোলনের জন্য সমস্ত জায়গা থেকে নানা শ্রেণির নাগরিকের কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে। আমরা নাগরিক হিসেবে কর দিই। আমাদেরও যে কথা বলার জায়গা রয়েছে, এই আন্দোলন সেই জায়গাকে ফিরিয়ে দিচ্ছে।

অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আমাদের অভিভাবক। তার ওপর আস্থা আছে। কিন্তু তদন্ত এখন সিবিআইয়ের হাতে। সিবিআইয়ের তদন্ত কোন পথে চলেছে, খবর আমাদের কাছে নেই।জনসাধারণকে বোকা ভেবে লাভ নেই। একটা মানুষকে দোষী হিসেবে সামনে আনা হচ্ছে, কিন্তু আমরা কেউ বিশ্বাস করি না, একা এত বড় কাণ্ড ঘটিয়েছে সে। সেটা অসম্ভব।

অভিনেত্রী চৈতি ঘোষাল বলেন, ১৪ অগাস্ট থেকে প্রতিবাদ শুরু করেছি। এই প্রতিবাদ চলতে থাকবে। দোষীর কড়া শাস্তি চাই। সিবিআই কেন এখনও গ্রেফতার করছে না? তদন্ত কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে, আমরা জানতে চাই। এর পরে কী হবে জানি না। যাঁরা রাস্তায় আন্দোলন করেন, তাঁরা জানেন না পরের দিন কী হবে। কিন্তু সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত থামব না।

অভিনেত্রী উষসী চক্রবর্তী বলেন, আমাদের হাতে কিছু নেই। শেষ অবধি বিচারের দাবি থাকবে। এক জন কর্মরত চিকিৎসকের যদি সুরক্ষা না থাকে, তা হলে আমরা কেউ নিজেদের কর্মস্থলে সুরক্ষিত নই। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী খুব জনপ্রিয়। বিপুল ভোটে তিনি জয়ী হয়েছেন। মহিলা হিসেবে ওঁর কাছে আবেদন জানাচ্ছি, সমস্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে দোষীকে আটক করুন। তা হলে আমরা নিরাপদ বোধ করব।

সোহিনী সরকারের হুঙ্কার, এই থ্রেট কালচার বন্ধ না হওয়া অবধি আন্দোলন চলবেই।

অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া বলেন, আমি সে দিনও ভিড়ের মধ্যেই ছিলাম। এক জন সাধারণ মানুষ হিসেবে বিচারের দাবি করছি। আলাদা করে আমার পরিচিতির প্রয়োজন নেই। এটা মনুষ্যত্বের আমি এখন কিছু চাই না। যত ক্ষণ না সুবিচার আসছে, মাথায় অন্য কিছু আসছে না। কাল যদি আমার সঙ্গে এমন কিছু ঘটে, কত দিন আমার মা-বাবা লড়তে পারবেন আমার জন্য? সত্যি জানি না কত দিন ধরে লড়ে যেতে হবে।

অভিনেত্রী  অনন্যা বলেন,  আমরা অন্যায়ের বিচার চাইছি। সিবিআইয়ের কাছে এই তদন্তের বিচার চাইছি। যদি এই ঘটনায় কোনও বিষয় ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে থাকে কেউ, বা প্রমাণ লোপাট করা হয়ে থাকে, তাদেরও যেন চিহ্নিত করা হয়। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য— দফা এক, দাবি এক, সব দোষীরা শাস্তি পাক।

মধুরিমা বলেন, আমি আসলে আমার লড়াই লড়তে নেমেছি। আমি যাঁদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছি, তাঁদের সঙ্গে মিছিলে এসেছি। তবে প্রত্যেকেরই প্রতিবাদের ভিন্ন ভাষা থাকে। আমি রাস্তায় নেমেছি বলেই সকলকে রাস্তায় নামতে হবে এমন নয়। আমি কাউকে দেখে রাস্তায় নামিনি। আমার মনে হয়েছে রাস্তায় নাম উচিত। তাই নেমেছি।আমাদের আর আশা করার কোনও জায়গা নেই। আমরা বিচার ছিনিয়ে নেবই। তার জন্য যত দিন সময় লাগবে আমরা রাস্তায় থাকব। আমাদের সংগঠনে ভিন্ন মতের মানুষ রয়েছে। কিন্তু সকলের দাবি একটাই।

অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীর দাবি, তদন্তে সময় লাগুক। কিন্তু ফাঁকফোকড় দিয়ে অনেক কিছু গলে যাচ্ছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে, কিন্তু সেটা আমরা হতে দেব না। তার জন্য এই চাপটা আমরা বজায় রাখব। লোকের ঠাট্টা-টিটিকিরিতে আমাদের কিছু যায় আসে না। আমরা থামব না। এই ব্যভিচারী, অত্যাচারী, যারা শুধু ক্ষমতা-টাকার জন্য মানুষকে মানুষ জ্ঞান করে না। কোনও নীতিবোধ নেই। তাদের সবার মাথা ধরে ধরে বিচার চাই।”
অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত বলেন, উত্তর যতক্ষণ না মিলবে, এই আন্দোলন চলবে। অপরাজিতা আঢ্য বলেন, বিচার হওয়াটা জরুরি। বিচার না পাওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।

 

Previous articleউদ্বোধনের আধ ঘণ্টায় লুট গোটা মল! পাকিস্তানে লুটেরা ক্রেতারাই
Next article৮৬ বছরে থামলেন বেবিদা, বন্ধ হল অ্যাকর্ডিয়ানের সুর