Monday, May 12, 2025

মিথ্যাচার! জুনিয়র ডাক্তারদের ‘নেতৃত্বের’ অভিযোগের পাল্টা প্রমাণ দিয়ে ধুয়ে দিলেন কুণাল

Date:

Share post:

দুপুরে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। একঘণ্টার মধ্যেই তথ্য-সহ জবাব দিলেন তৃণমূল (TMC) নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। জানান, পুলিশ কমিশনারকে তাঁরই ইস্তফা দেওয়ার স্মারকলিপি দেওয়া এবং লালবাজারের সামনে থেকে আন্দোলন প্রত্যাহারের রূপরেখা দুপুর বারোটার মধ্যেই স্থির হয়ে যায়। একই সঙ্গে তথাকথিত জুনিয়র ডাক্তারদের নেতৃত্বকে ঠুকে কুণাল বলেন, কে বড় নেতা- এটা প্রমাণ করতে গিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনটার ক্ষতি করবেন না।

সোমবার বিকেল থেকে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের (Vinit Goal) অপসারণ চেয়ে লালবাজারের সামনে অবস্থানে বসেছিলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার বিকেলে তাঁদের সেই অবস্থান নিয়েই ফেসবুকে পোস্ট করেন কুণাল ঘোষ। বুধবার, দুপুরে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট-এর তরফে সংবাদিক বৈঠক থেকে অভিযোগ করা হয়, তাঁদের লালবাজার অভিযান নিয়ে কুণাল ঘোষ যা পোস্ট করেছেন- সেটা ঠিক নয়। ফ্রন্ট-এর তরফে জুনিয়র চিকিৎসক কিঞ্জল নন্দ (Kinjal Nanda) বলেন, “মঙ্গলবার একটি ছবি পোস্ট করে কুণাল ঘোষ দাবি করেছিলেন যে আন্দোলনকারীদের তরফে ওনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছিল লালবাজারের অভিযান নিয়ে মধ্যস্থতার জন্য। আমরা ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট থেকে পরিষ্কারভাবে জানাচ্ছি, ওর সঙ্গে আমরা কোনও যোগাযোগ করিনি। ঘটনাচক্রে একটি সংবাদপত্রের অফিসে ওনার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। সেখানে না জানিয়ে উনি আমাদের প্রতিনিধিদের ছবি তুলে অপপ্রচার করেছেন।”

এর পরেই সাংবাদিক বৈঠক করে কুণাল দাবি করেন, চাইলে যে কেউ যে কোনও তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে তাঁর ফোন পরীক্ষা করিয়ে দেখতে পারেন- জুনিয়র ডাক্তারদের তরফ থেকে তাঁর কাছ মধ্যস্থতার প্রস্তাব এসেছিল কি না। তিনি বলেন, আমি মিথ্যে বলতে পারি কিন্তু ফোন-কল বা চ্যাট তো মিথ্যে বলবে না।

এরপরেই ব্যাখ্যা দিয়ে কুণাল (Kunal Ghosh) জানান, ডাক্তারদের কর্মবিরতি কোনও মানুষের উপকারে লাগতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সবাই কর্মবিরতি তুলে কাজে ফিরতে আবেদন জানিয়েছেন। কারণ, সারাবাংলায় রোগী হয়রানি হচ্ছে। রোগী মৃত্যু হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোম খোলা। গরিব মানুষকে বাধ্য হয়ে সেখানে যেতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে কুণালের আবেদন রিলে কর্মবিরতি করুন। কিন্তু পরিষেবা শুরু করুন।

কুণালের কথায়, ন্যায় বিচারের আন্দোলন করার অধিকার জুনিয়র ডাক্তারদের রয়েছে। তাতে তাঁদের সমর্থন রয়েছে। কারণ, জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলন মন থেকে করছেন। কিন্তু তৃণমূল নেতার অভিযোগ, কয়েকজন সেই আন্দোলনের রাশ নিজেদের হাতে নিয়ে নেতা হতে চাইছেন।

এর পরেই কুণাল জানান, “আমি নিজেই জানিয়েছি, যে গতকাল আমার সঙ্গে সংবাদ প্রতিদিনের দফতরে যে ৪ জুনিয়র ডাক্তারের দেখা হয়েছিল, তাঁদের সঙ্গে আমার আন্দোলন নিয়ে কোনও কথা হয়নি। দেখা হওয়া কিছুক্ষণ আড্ডা হয়েছে।“ এই বিষয়টি নিজের স্যোশাল মিডিয়া পোস্টে স্পষ্ট করে দেন কুণাল ঘোষ। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, “ঠাকুর ঘরে কে, আমি তো কলা খাইনি”-র মতো কয়েকজন তথাকথিত ‘নেতা’ সেই বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করছেন। দাদাগিরি করে আন্দোলনের হাইজ্যাক করার চেষ্টা করছেন বলেও আক্রমণ করেন কুণাল।

এর পরেই তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ জানান, যে জুনিয়র ডাক্তাররা লালবাজার অভিযানে ছিলেন তাঁদের একাংশ মঙ্গলবার সকালে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, দুপুরের পর থেকে বাইরে শক্তি সেখানে জড়ো হয়ে আন্দোলন নিজেদের দখলে নিতে চাইছেন। সেটা তাঁরা মানছেন না। কুণালের কথায়, দুপুর ১২টার মধ্যেই ঠিক হয়, যাঁর পদত্যাগ চাইছেন সেই কলকাতারা নগরপালের হাতেই স্মারকলিপি দিয়ে আন্দোলনরত চিকিৎসকরা যেতে চান। সরকার পক্ষ যেন নরম হন- যাতে সিপি নিজেই সেটা গ্রহণ করেন।

কারণ বিকেলের পরে আন্দোলন যে আকার নেবে সেটা ডাক্তারদের হাতে থাকবে না। ঠিক হয়, লোহার গেট যে খুলে যাবে। ডাক্তাররা এগোবেন। সিপির পদত্যাগের দাবিতে দেওয়া স্মারকলিপি তিনি নিজেই গ্রহণ করবেন। তার পর সেখান থেকেই আন্দোলন তুলে নেবেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সিপিকে তখনই ইস্তফা দিতে হবে না। জুনিয়র ডাক্তাররা সম্মানজনক রফাসূত্র চেয়েছিল। কুণাল সেটাতেই মধ্যস্থতা করেছেন। চাইলে এই বিষয়ে আন্দোলকারীদের সঙ্গে চ্যাট ও ফোনালাপ তিনি প্রকাশ করতে পারেন বলে জানান তৃণমূল নেতা।

এর পরেই বিরক্ত কুণাল বলেন, আমার দায় পড়েছে মিথ্যাচার করতে। দু-একজন ডাক্তার নেতার দাবি হচ্ছে, তাঁদের মুখ দেখাতে দিতে হবে। তাঁদের নেতৃত্ব দিতে হবে। তাঁরই কথা বলবেন। এই দাদাগিরি আন্দোলনের ক্ষতি করবে বলে মত তৃণমূল নেতার।  










spot_img

Related articles

পুলওয়ামার আত্মঘাতী হামলায় মদতের কথা স্বীকার করে ফেলল পাকিস্তান

২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে আত্মঘাতী হামলা হয়। শহিদ হন ৪০ জন CRPF জওয়ান। জঙ্গি...

দেশের স্বার্থ বিরোধী: অশান্তির পরিস্থিতিতে বামেদের মিছিলকে ধুইয়ে দিলেন কুণাল

পাকিস্তানী সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে যখন কেন্দ্রের সরকার অপারেশন সিন্দুর-এর মতো অভিযান চালাচ্ছে দেশের সেনা, সেই সময় পাশে দাঁড়িয়েছে গোটা...

ঝাড়গ্রামে ‘সাদা পাহাড়’ ঘিরে নয়া পর্যটন কেন্দ্র

ঝাড়গ্রামের (Jhargram) পর্যটন পরিকাঠামোয় বড়সড় উন্নয়নে পদক্ষেপ করছে রাজ্য। বেলপাহাড়ির ‘সাদা পাহাড়’ বা স্থানীয়দের কথায় ‘চেতন ডুংরি’ এলাকায়...

মহানগরীর পরিবহন ব্যবস্থায় বড় বদল! ধর্মতলায় ভূগর্ভস্থ পার্কিং প্লাজা-টানেল

মহানগরীর পরিবহন ব্যবস্থায় বড় বদল আনতে চলেছে রাজ্য সরকার। মেট্রো (Metro) সম্প্রসারণের ফলে ধর্মতলা দ্রুতই হয়ে উঠবে কলকাতার...