আর জি কর (RG Kar Hospital) কাণ্ডে তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাস্থল বহু চর্চিত সেমিনার হল নিয়ে এখনও বিতর্ক তুঙ্গে। সিবিআই সূত্রে খবর, এই সেমিনার হলে নাকি পায়ের ছাপ পাওয়া যায়নি ধৃত সঞ্জয় রায়ের। এখানেই শেষ নয়, সেমিনার রুমে ধর্ষিতার পায়ের ছাপও নাকি মেলেনি! থ্রি-ডি ম্যাপিংয়ের পর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা নাকি এমনই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।
সিবিআইয়ের এমন দাবির পর জটিলতা আরও বাড়ছে আর জি করে (RG Kar Hospital) ধর্ষণ ও খুনের তদন্তে। কারণ, এই কেন্দ্রীয় এজেন্সির এই তত্ত্বে ঘটনাস্থল নিয়েই আরও একবার প্রশ্ন উঠে গেল? এক্ষেত্রে দু’টি সম্ভাবনা থাকতে পারে। প্রথমত, ধর্ষণ-খুনের পর বহু লোক সেমিনার রুমে ঢুকে আসায় মৃতা এবং অভিযুক্তের ফুটপ্রিন্ট মুছে গিয়েছে। দ্বিতীয়ত, সেমিনার রুম ঘটনাস্থলই নয়। অন্য কোনও কোথায় ধর্ষণ ও খুনের পর সেমিনার রুমে এনে রাখা হয়েছিল নির্যাতিতাকে। তাহলে আবার প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে, সেমিনার রুমে ঢোকার একটাই তো রাস্তা, তাহলে করিডরের সিসি ক্যামেরায় তা ধরা পড়ল না কেন? কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজে ধৃত সঞ্জয়কে সেমিনার রুমে ঢুকতে ও বের হতে দেখা গিয়েছে।
খুনের ঘটনায় আততায়ীর সংখ্যা নিশ্চিত করতে হাত ও পায়ের ছাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে কী ধরনের জুতো তারা পরেছিল, সেটাও জানা যায়। সিবিআই দাবি করেছে, প্রথাগত পদ্ধতি তো বটেই, থ্রি ড্রি ম্যাপিংয়েও এই দু’জনের পায়ের ছাপ তারা পায়নি। অথচ ওই রুমের লাগোয়া দু’টি ঘরে তরুণীর ফুটপ্রিন্ট মিলেছে। সেখানে আরও বেশ কয়েকজনের পায়ের ছাপ পেয়েছে সিবিআই। এটাই রহস্য বাড়িয়েছে। সেমিনার হলে নমুনা না মেলার কারণ হিসেবে এজেন্সির ব্যাখ্যা, সেখানে ঢোকা-বেরোনোর রাস্তা একটাই। নির্যাতিতার দেহ মেলার পর এলাকা ঘেরা না থাকায় একাধিক ব্যক্তি হুড়মুড়িয়ে দেহের কাছে গিয়েছে। তাঁদের পায়ের ছাপে নির্যাতিতা ও সঞ্জয়ের ফুটপ্রিন্ট নষ্ট হতে পারে। একাধিক ব্যক্তির পায়ের ছাপে আলাদাভাবে ওই দুজনের নমুনা আলাদা করা যাচ্ছে না।
রহস্য আরও বাড়ায়, পলিগ্রাফ টেস্টে সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয়ের বয়ান। ঘরে ঢুকে সে নাকি তরুণীকে পড়ে থাকতে দেখেছিল। ধাক্কা দেওয়ার পর সাড়া না মেলায় ভয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। তখনই হোঁচট খেয়ে তার নেকব্যান্ড মেঝেয় পড়ে যায়। সিবিআইয়ের দাবি, পরে এত লোক ঘরে ঢোকায় সেই নেকব্যান্ড পায়ের ধাক্কায় অন্যত্র চলে যাওয়ার কথা ছিল। তার বদলে মৃতার ম্যাট্রেসের নীচে রাখা হল কীভাবে? আবার গোয়েন্দাদের দাবি, সঞ্জয়ের মেডিক্যাল রিপোর্ট অনুযায়ী, তার দুই হাতের আঁচড় পুরনো। একমাত্র পিঠে ও মুখে নতুন আঁচড়ের দাগ আছে।
আরও পড়ুন: সিবিআইয়ের হাতে বন্দি সন্দীপের বাড়িতে সাতসকালে হাজির ইডি