মঙ্গলের মধ্যরাতের মৌখিক দাবি বুধের মধ্যাহ্নে লিখিত আকারে গেল নবান্নে। যে জুনিয়র ডাক্তাররা (Junior Doctors) মুখ্যসচিবের উপস্থিতি সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী না থাকলে বৈঠক করবেন না বলে এতদিন দাবি করছিলেন, তাঁরাই এবার মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আন্দোলনরত ডাক্তারদের ৯৯ শতাংশ দাবি মেনে নেওয়ার পর নতুন দাবি নিয়ে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়ে ইমেইল পাঠালো WBJDF। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে (Manoj Panth) পাঠানো অফিসিয়াল মেইলে বলা হয়েছে যে এখনো পর্যন্ত তাদের কয়েকটি দাবি সরকার মেনে নেয়নি। সেই সংক্রান্ত আলোচনার প্রয়োজন। যদিও বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে থাকতে হবে এরকম কোনও ‘শর্ত’ তাঁরা দেননি। অর্থাৎ এটা থেকে পরিষ্কার যে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চাইছেন আন্দোলনরত ডাক্তাররা। একের পর এক দাবির তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে অথচ ধর্না বা কর্মবিরতি ওঠার বিষয়ে এখনও কোনও স্পষ্ট বার্তা দেননি আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা। অর্থাৎ এখনই উঠছে না কর্মবিরতি।

সোমবার কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে দীর্ঘ বৈঠকের পর জুনিয়র ডাক্তাররা (Junior Doctor) জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ হওয়ার পর তাঁরা কর্মবিরতি তোলার বিষয় সিদ্ধান্ত নেবেন। কথা রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ-সহ স্বাস্থ্য অধিকর্তাদের সরানো হয়েছে। কিন্তু এটিও মনঃপূত হয়নি জুনিয়র ডাক্তারদের। এখন স্বাস্থ্যসচিবকে সরানোর বিষয় নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা চাইছেন বলে জানান আন্দোলনরত চিকিৎসক অনিকেত মাহাত। মঙ্গলবার রাত প্রায় দেড়টা নাগাদ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “আমাদের চতুর্থ এবং পঞ্চম দফা দাবি এবং স্বাস্থ্যসচিবকে নিয়ে আমাদের যে দাবি ছিল তা নিয়ে ফের আলোচনায় বসতে চাই। রাজ্য সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন।” যদিও বুধবারে পাঠানো ই-মেইলে স্বাস্থ্যসচিবের পদত্যাগের কথা উল্লেখ নেই বলেই সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে। রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিই এদিন নবান্নকে লেখা চিঠিতে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যের জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের (WBJDF) তরফের দাবি, রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন এবং ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রতিনিধি বাছাই করা হোক। যদিও এই দাবি আগের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে উল্লিখিত ছিল না। অর্থাৎ একটা দাবি মিটতেই আর একটা দাবি নিয়ে হাজির হয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। কিন্তু নিজেদের অবস্থান থেকে এতটুকু সরছেন না। ডক্টরস ইউনিয়নের আইনি স্বীকৃতি থেকে নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে পরোক্ষভাবে হলেও কোথাও যেন আন্দোলনে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য’ যুক্ত থাকার বিষয়টিকেই নির্দিষ্ট করে দিলেন তাঁরা, এমনটাই মনে করছে নাগরিক সমাজের একাংশ।
