ইন্দিরার ২ দিনের ফি ৪০ লক্ষ টাকা! কে জোগাচ্ছে আন্দোলনকারীদের? উঠছে বাম-রাম মদতের অভিযোগ

সুপ্রিম কোর্ট আর জি কর মামলার শুনানিতে রাজ্যের হয়ে সওয়াল করছেন কপিল সিব্বল। কত তাঁর ফি? কেন দিচ্ছে সরকার? এই নিয়ে চর্চার শেষ নেই। কিন্তু আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের (Junior Doctor) হয়ে যিনি মঙ্গলবার থেকে সুপ্রিম কোর্টে মামলা লড়ছেন সেই ‘নামী-দামী’ বর্ষীয়ান আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংয়ের (Indira Jaising) ফি জানেন? সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) একদিন হাজির হতে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ফি নেন। শুধু ইন্দিরারই একদিন কোর্টে হাজির হয়ে মামলা লড়ার ফি না কি প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। তাঁর জুনিয়র-সহ টিম মিলিয়ে সেটা গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ২০ লক্ষ টাকা মতো। মঙ্গলবারের পরে আবার ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি আন্দোলনকারীদের হয়ে শীর্ষ আদালতে দাঁড়াবেন। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ৪০ লক্ষ টাকা। এই টাকা কোথা থেকে এলো? শোনা যাচ্ছে টাকার জোগাচ্ছে গেরুয়া শিবির। আর আন্দোলনের রূপরেখা বেঁধে দিচ্ছে বাম-অতিবাম সংগঠনগুলি। অর্থাৎ রংহীন জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন বলে যেটা দেখানো হচ্ছে, সেটা না কি আদতে চলছে রাম-বামের মদতে!স্বচ্ছতা বজায় রাখতে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং, দুপক্ষের ভিডিওগ্রাফির দাবি জানিয়ে ছিলেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। মঙ্গলবারের পরে ২৭ তারিখ ফের সুপ্রিম কোর্টে আর জি কর মামলার শুনানি। সেখানে তাঁদের হয়ে মামলা লড়ছেন ‘নামী-দামী’ বর্ষীয়ান আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং (Indira Jaising)। স্বচ্ছতার দাবি জানানো আন্দোলনকারীরা কী জানাবেন, এই আইনজীবীর খরচ কে দিচ্ছে? কারণ, সুপ্রিম কোর্টে একদিন হাজির হতে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ফি নেন। জুনিয়র ডাক্তাররা যদি এর জন্য চাঁদা তোলেন- তাহলে সেটাও প্রকাশ্যে আনুন- উঠছে দাবি। সম্প্রতি আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের একটি অডিও ভাইরাল হয় (ভাইরাল অডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি বিশ্ববাংলা সংবাদ)। যেখানে শোনা যায়, তাঁরা বলেছেন যে আইনি লড়াইয়ের টাকা নেই তাঁদের। এমনকী আইনজীবী নিয়োগের টাকা কোথা থেকে আসবে তা নিয়েও চিন্তায় তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ ইন্দিরা জয়সিংয়ের মতো একজন আইনজীবীকে কীভাবে নিয়োগ করলেন জুনিয়র ডাক্তাররা? ইন্দিরারই একদিন কোর্টে হাজির হয়ে মামলা লড়ার ফি ১৫ লক্ষ টাকা। এর বাইরে কনফারেন্স- অর্থাৎ মক্কেলের থেকে মামলার বিষয়ে শোনা ও আলোচনা করার জন্য তিনি নেন প্রায় ২লক্ষ টাকা করে। এত বিপুল অঙ্কের টাকা আন্দোলনরত চিকিৎসকরা কোথা থেকে জোগাড় করছেন? বারবার স্বচ্ছতার দাবি তোলা আন্দোলনকারীদের এই বিষয়েও স্বচ্ছতা বজায় রাখা দরকার। যদি এই টাকা তাঁরা চাঁদা তুলে জোগাড় করেন, তাহলে সেই বিষয়টিও সামনে আনুন। কারা দিলেন টাকা? সেই টাকা নগদে এসেছে, না ব্যাঙ্কের মাধ্যমে? সব বিষয়েই স্পষ্ট হওয়া দরকার।এখানেই খরচের শেষ নয়। মামলা নিয়ে আলোচনা করতে, আইনজীবী নিয়োগ করতে দিল্লি উড়ে গিয়েছিল জুনিয়র ডাক্তারদের একটি দল। রাজধানী থেকে সাংবাদিক বৈঠকও করেন তাঁরা। আর জি করের চিকিৎসক তরুণীর ধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) যে প্রশ্নগুলি তুলেছিল, কার্যত সেগুলিই তুলে ধরে সেখানে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট ও রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন। তাঁদের আসা-যাওয়ার খরচ কে দিল? সেই বিষয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি সব কিছু প্রকাশ্যে আনার দাবি করা চিকিৎসকরা! বৈঠকের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা জুনিয়র চিকিৎসকরা নিজেদের লড়াইয়ের রসদ নিয়ে স্বচ্ছতা রাখছেন কি- উঠছে প্রশ্ন।

বারবার অরাজনৈতিক মঞ্চ বলে দাবি করা হচ্ছে জুনিয়র ডাক্তারদের ফ্রন্টকে। কিন্তু সূত্রের খবর, এই আন্দোলনের রাজনৈতিক মেরুকরণ হয়ে গিয়েছে। আন্দোলন কোন পথে চালিত হবে- তার রাশ চলে গিয়েছে বাম ও অতিবাম সংগঠনগুলির হাতে। এর জেরে অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের সিদ্ধান্তে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারছেন না আন্দোলনকারীরা। কিন্তু বাঘের পিঠ চড়ে এখন সব সিদ্ধান্তই নিজেদের বলে সংবাদ মাধ্যমে জানাতে হচ্ছে। বিশেষ করে এক্ষেত্রে না কি জেলার মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক-পড়ুয়াদের সঙ্গে মতবিরোধ হচ্ছে কলকাতার মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া-ডাক্তাদের। আর এই আন্দোলনে রসদ দিচ্ছে বিজেপি। বাংলায় ভোট বক্সে হালে পানি না পেয়ে, এখন এই আন্দোলনকে সামনে রেখে পিছন থেকে আঁতাঁত করে কলকাঠি নাড়তে চাইছে রাম-বাম- অভিযোগ রাজনৈতিক মহলের একাংশের।

Previous articleসন্ধ্যায় বৈঠক নবান্নে, জুনিয়র ডাক্তারদের ইমেলের জবাবে জানালো রাজ্য
Next articleএএফসি এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু-র মূলপর্বে বুধবার অভিযান শুরু মোহনবাগানের