ধর্নামঞ্চে ডাক্তারদের উল্লাস, আরজি কর থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে হার্টের রোগীকে 

একই বঙ্গের দুই ভিন্ন ছবি। একদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জুনিয়র ডাক্তারদের সব দাবি মেনে নিতেই স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্না মঞ্চে জুনিয়র ডাক্তাররা যখন নাচে গানে উল্লাস করতে ব্যস্ত, অন্যদিকে হাসপাতলে ভর্তি হতে না পেরে আর জি কর (RG Kar Medical College and Hospital) থেকে ফিরতে হচ্ছে হার্টের পেশেন্টকে। নবান্নের (Nabanna) সঙ্গে সদর্থক বৈঠকের পরও কর্মবিরতি না তুলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার বার্তা দিচ্ছেন যখন জুনিয়র ডাক্তাররা (Junior Doctors) , তখন দক্ষিণবঙ্গের প্লাবিত এলাকায় জলের মধ্যে অনায়াসে নেমে দুর্গতদের কথা শুনছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। নিজেদের দায়িত্ব ভুলে দাবি আদায়ের নামে রাজনীতিতে ব্যস্ত জুনিয়র ডাক্তারবাবুরা, আর রাজনীতিকে সরিয়ে রেখে মানুষের দুর্ভোগে পাশে দাঁড়ালেন জনতার মমতা।

আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের মর্মান্তিক মৃত্যুতে বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। প্রতিমুহূর্তে ধর্না মঞ্চের ছবিটা সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে আসছে যেখানে কখনও আলোড়িত হচ্ছে নাচে গানে প্রতিবাদের নামে উল্লাস, আবার কখনও কুৎসিত ভাষায় স্লোগান।

দিনের পর দিন ডাক্তারির শপথ ভুলে সকাল থেকে রাত আন্দোলনের নামে চিঠি চালাচালি, মিটিং আর মধ্যরাতে সাংবাদিক বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। অন্যদিকে হাসপাতালে রোগীকে ভর্তি করা যাচ্ছে না। কারণ পরিষেবা দেওয়ার মতো ডাক্তার নেই। সুপ্রিম আদালতে চিকিৎসকদের আইনজীবীরা বলছেন কোথাও কোনও সমস্যা নেই কারণ সিনিয়র ডাক্তাররা নাকি ডাবল ডিউটি করছেন। কিন্তু বাস্তবে হার্টের সমস্যা নিয়ে আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি হতে আসা গীতা সাহারা (Geeta Saha) জানেন আসল ছবিটা কী। বাড়ির লোক দিশেহারা, এবার কোথায় যাবেন? কিন্তু ডাক্তারবাবু এবং তাঁদের সমর্থনকারী সোশ্যালমিডিয়া ব্যবহারকারীদের তা নিয়ে কোন হেলদোল নেই। পুজোর আগে বন্যায় প্লাবিত বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। বহু মানুষের অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে বারবার জুনিয়র ডাক্তারদের অনুরোধ করা হয়েছিল কাজে ফেরার জন্য। কিন্তু তাঁরা ব্যস্ত নিত্যনতুন দাবি নিয়ে সরকারের সঙ্গে বৈঠকের মেইল পাঠাতে। মধ্যরাতে জিবি মিটিং করে সকলকে জানিয়ে দেওয়া যে “আজও কর্মবিরতি উঠছে না” – এটাই যেন প্রতিদিনের শিডিউল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবার প্রশ্ন করছেন সাধারণ মানুষ, আর কবে কর্মবিরতি প্রত্যাহার হবে? আর কত রোগীকে পরিষেবা না পেয়ে ফিরতে হবে? আর কত পরিবারে স্বজন হারানোর শোক নেমে আসবে? জবাব দেবেন কি আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারবাবুরা, রইল প্রশ্ন।


Previous articleআর জি কর কাণ্ডে মীনাক্ষীকে তলব সিবিআইয়ের, আজই হাজিরা বাম যুবনেত্রীর 
Next articleবানভাসি দক্ষিণবঙ্গে জলযন্ত্রণার ছবি, অন্তঃসত্ত্বাদের সরানো হচ্ছে মাদার্স হাবে