প্রতিবছর পুজোর আগে শপিং ফেস্টিভ্যাল করুন, তিন মেলা উদ্বোধন করে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister) জানান, “ইতিমধ্যেই এর মাধ্যমে ৩০০০ তাঁতী, হস্তশিল্পী ও এই কাজে যুক্ত মানুষ উপকৃত হয়েছেন। প্রায় এক লক্ষ ৫০ হাজার শ্রমদিবস

বন্যায় প্লাবিত রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা। একদিকে পুজোর আগে মানুষের হাতে ত্রাণ ও আশ্রয়ের স্থান তুলে দিতে ব্যস্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। অন্যদিকে পুজোর আগে রাজ্যের হাজার হাজার তাঁতীদের ব্যবসার পথ খুলে দিতেও বদ্ধপরিকর তিনি। সেই উদ্দেশ্যে শুক্রবার রাজ্যে উদ্বোধন হল বেঙ্গল শপিং ফেস্টিভ্যাল (Bengal Shopping Festival)। রাজ্যের তিন জায়গায় ‘বাংলার শাড়ি’র বিপনির ভার্চুয়াল উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে প্রতিবছর পুজোর আগে এই উৎসব করার বার্তাও দিলেন তিনি।

কেন্দ্রের সরকার একশো দিনের কাজের টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিলেও রাজ্যের সরকার নিজেদের উদ্যোগে মানুষকে স্বনির্ভর (self help group) করার কাজে বদ্ধপরিকর। তাঁত শিল্পীদের কর্মসংস্থান তার মধ্যে অন্যতম। শপিং ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধনে ফোনে বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “শাড়ি উৎপাদনে বাংলা ভারতবর্ষের প্রথম স্থানে। রাজ্যের শাড়ির চাহিদার কথা মনে রেখে বাংলার বিভিন্ন জেলায় গ্রামে গ্রামে ব্লকে ব্লকে তাঁত বোনে। অনেক স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীও বোনে। বাংলার বিভিন্ন জেলায় উৎপাদিত সব ঐতিহ্যবাহী শাড়িকে এক ছাদের নিচে এসে এক অলিন্দে আবদ্ধ রেখে আরও ভালোভাবে বিক্রি করার জন্যই ‘বাংলার শাড়ি’ (Banglar Saree) ব্র্যান্ড।”

২০১১ সাল থেকে ক্লাস্টার তৈরি করে বস্ত্রশিল্পকে যেভাবে উৎসাহ দিয়েছে রাজ্য সরকার তাতে ১৩ গুণ বেড়ে বাংলায় এখন ক্লাস্টারের (cluster) সংখ্যা ৬৫০টি। ৬.৩১ লক্ষ তাঁতী ও সহকারী শিল্পী এর সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের কথা মাথায় রেখেই বেঙ্গল শপিং ফেস্টিভ্যালের আয়োজন। এতে তাঁতীদের পাশাপাশি স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলিও উপকৃত হবে। শুক্রবার হলদিয়ার (Haldia) দুর্গাচক, নিউটাউনের (New Town) ইকোপার্ক ও ফুলিয়ায় (Fulia) তিনটি নতুন ‘বাংলার শাড়ি’ বিপণন কেন্দ্রের উদ্বোধন হল। মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister) জানান, “ইতিমধ্যেই এর মাধ্যমে ৩০০০ তাঁতী, হস্তশিল্পী ও এই কাজে যুক্ত মানুষ উপকৃত হয়েছেন। প্রায় এক লক্ষ ৫০ হাজার শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। বাংলার তাঁতীদের আয় আরও বাড়বে। সারা পৃথিবীতে বাংলার শাড়ির মান পৌঁছে যাবে।”

বাংলার তাঁতশিল্পীদের প্রসারের জন্য রাজ্য সরকারের পরিকল্পনার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। প্রত্যেক জেলার সদর শহরে এক একর করে জমি নেবে রাজ্য সরকার। সেখানে বেসরকারি সংস্থা বা ব্যবসায়ীদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের ২৩টি জেলার সদরে এজন্য এক একর করে জমি নেওয়া হবে। সরকারি বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে  সেখানে যে যে মল হবে, তাতে নীচের দু’টো তলা সম্পূর্ণ ভাবে থাকবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির জন্য। বাকি তিনটি তলায় বিভিন্ন দোকান থাকবে। সরকার জমি দেবে, বাড়ি বেসরকারি সংস্থা তৈরি করবে। একটা সিনেমা হলও সেখানে থাকবে।

শুক্রবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গনে (Biswa Bangla Mela Prangan) উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা অমিত মিত্র, মন্ত্রী শশী পাঁজা, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ডব্লুবিআইডিসি চেয়ারম্যান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। ফোনে বার্তা দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, “গ্রামবাংলা জলে ভাসছে। আমি যেহেতু বন্যার ত্রাণ নিয়ে ব্যস্ত আছি এবং বন্যাকে মনিটরিং করছি, তাই আপনাদের কাছে সশরীরের না পৌঁছালেও আমি মানসিকভাবে আপনাদের কাছে পৌঁছে গেলাম।” পাশাপাশি এই উৎসবের সাফল্য কামনার সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “প্রতিবছর পুজোর আগে করুন, মর্যাদার সঙ্গে করুন।”

Previous articleড্র মিনি ডার্বি, মহামেডানের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র লাল-হলুদের
Next articleগুরুতর  জখম দমদমের নামী বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়া, প্রশ্নের মুখে নিরাপত্তা