ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে সুর চড়ালেন মমতা, পাল্টা চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে

রাজ্যকে না জানিয়েই জল ছাড়া হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ডিভিসির চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করা হলেও, তিনি তা শোনেননি।

ডিভিসির (DVC) ছাড়া জলে ‘ম্যান মেড বন্যা’ বাংলায়। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে জল ছাড়ার যে অভিযোগ উঠেছে তার বিরোধিতা করে জবাব দিয়েছিল কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রক। এবার তাদের দাবিকে নস্যাৎ করে তথ্য পরিসংখ্যান তুলে নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) পাল্টা চিঠি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। হাওড়া, হুগলি, মেদিনীপুরের প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (CM)। এর আগে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের (DVC) সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন। যেখানে স্পষ্ট ভাবে জানানো হয় যে রাজ্যের অনুমতি না নিয়ে অপরিকল্পিতভাবে জল ছাড়ার ফলে বাংলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এরপর কেন্দ্রে জলশক্তি মন্ত্রকের তরফে সেই অভিযোগ খারিজ করা হয়। শনিবার চারপাতার চিঠিতে তারই পাল্টা উত্তর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটতে না কাটতেই ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত হাওড়ার আমতা, উদয়নারায়ণপুর, হুগলির খানাকূল, পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল। বিপর্যস্ত জনজীবন। এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে কেন্দ্র এবং দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে রাজ্যকে কার্যত অন্ধকারে রেখে ডিভিসিরি জল ছাড়ার অভিযোগ করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “জলশক্তি মন্ত্রকের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আমি এই চিঠি লিখছি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দাবি করেছেন ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ন্ত্রণ কমিটিতে বাংলার প্রতিনিধিও রয়েছেন। আমি তা মানতে পারছি না। এক্ষেত্রে সব সময়ই কেন্দ্রীয় জল কমিশন এবং জলশক্তি মন্ত্রকই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়। রাজ্যকে না জানিয়েই জল ছাড়া হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ডিভিসির চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করা হলেও, তিনি তা শোনেননি। রাজ্যের তরফে আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। প্রথমে ২.৩ লক্ষ কিউসেক এবং পরে ২ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার অনুরোধ রাখা হয়নি। ডিভিসি সময়মতো উত্তর না দেওয়ায় পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। সম্প্রতি মাত্র সাড়ে ৩ ঘণ্টা নোটিশ দিয়ে ৯ ঘণ্টা জল ছাড়া হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার প্রয়োজনই ছিল না। আর এত বিপুল পরিমাণ জল ছাড়া না হলে দক্ষিণবঙ্গে এহেন বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হত না।” এখানেই শেষ নয় ডিভিসির কমিটি থেকে রাজ্যের প্রতিনিধি তুলে নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।