দুর্গাপুজোর জন্য রাজ্য সরকারের অনুদান দেওয়া উচিত কিনা তা নিয়ে বহু বিতর্কের পরেও রাজ্যের সরকার তাঁদের সাধ্যমত প্রতি বছর পুজোর অনুদানের (Durgapuja grant) পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করে। দুর্গাপুজোর এই উৎসবের উপর গোটা রাজ্যের যে বিরাট অর্থনীতি নির্ভর করে থাকে, তার পাশে থাকার চেষ্টাতেই এই উদ্যোগ নেয় রাজ্য সরকার। এবার সেই অনুদান নিয়ে ‘রসিকতার ঢঙে’ অনুদান বাড়ানোর বার্তা দেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। এতে বহু মানুষের জীবনযাত্রা, আবেগকে আঘাত করা বলেই দাবি করে তৃণমূল।

দুর্গাপুজোয় গোটা রাজ্যের পুজো ও তার অনুসারি শিল্পের উপর নির্ভর করে গোটা রাজ্যের একটা বিরাট অর্থনীতি। সেই দিক বিচার করেই পুজোয় ক্লাবগুলিকে (club) অনুদানের সিদ্ধান্ত করোনা পরিস্থিতিতে চালু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এমনকি রাজ্যের অর্থনীতিকে সচল রাখতে প্রতি বছর অনুদানের অঙ্ক বাড়িয়েও চলেছেন তিনি। রাজ্য সরকারের পুজোর অনুদানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম (T S Shivagnanam) রাজ্যের কাছে খরচের হিসাব দাবি করেন। সেই সঙ্গে তিনি ক্লাব গুলির থেকে পুজোর খরচের হিসাব চাওয়ার পক্ষেও পর্যবেক্ষণে জানান।

তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে তিনি মন্তব্য করেন রাজ্য সরকারের এই অনুদানের পরিমাণ ৮৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ লক্ষ করে দেওয়া উচিত। তাতে পুজো আরও ভালোভাবে হতে পারবে। প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) দাবি, রসিকতা করেও যদি প্রধান বিচারপতি এই কথা বলে থাকেন তবে তা সাধারণ মানুষ ও এই শিল্পের সঙ্গে জুড়ে থাকা সব ধরনের মানুষের আবেগে আঘাত। তিনি বলেন, “আমি ওনাকে অনুরোধ করব। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের পুজোগুলোতেও যেতে। পুজো অর্থনীতি কীভাবে ছড়িয়ে পড়ছে দেখতে।” পুজো কমিটিগুলির মনোভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যাদের প্রয়োজন, যারা এই পুজো অর্থনীতির উপর নির্ভরশীল এবং পুজো কমিটিগুলোর মাধ্যমে এই টাকাটা যায়, তাঁরা জানেন এই টাকাটার গুরুত্ব কতখানি। তাঁকে যদি কেউ রসিকতার ঢঙেও এই পদ্ধতিকে অপমান করে, সেটা দুর্ভাগ্যজনক।”

সেই সঙ্গে এই প্রসঙ্গেই রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার বিষয়টিও তুলে আনেন কুণাল। তিনি দাবি করেন, “নিশ্চয়ই আরও বেশি দিলে হয়। তাহলে উনি কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিন বাংলার বকেয়া টাকা সমস্ত কিছু দিয়ে দাও। তারপরে উনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করুন যে টাকাটা বাড়ানো যায় কিনা।” এই বক্তব্য প্রধান বিচারপতি ভুল ধারণা থেকে করেছেন বলেও দাবি করেন কুণাল।
