অশিক্ষা আর অন্ধবিশ্বাসের কতটা অন্ধকারে ঢেকে রেখেছে যোগীরাজ্যকে, তার উদাহরণ একটি দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়াকে নিজের প্রাণ দিয়ে দিতে হল। স্কুলের সমৃদ্ধি ও সুনাম প্রচারের জন্য বলি দিতে হবে স্কুলেরই কোনও পড়ুয়াকে। যেমন অন্ধবিশ্বাস, তেমন কাজ। পড়াশোনা, নিরাপদ জীবনের জন্য যে স্কুলের হস্টেলে সন্তানকে রেখেছিলেন বাবা-মা, সেখানেই তাকে খুন করে ফেলে রাখল স্কুলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (managing director) ও তার বাবা। সঙ্গী স্কুলের আরও তিন শিক্ষক। পরে অভিযোগ পেয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে।

উত্তরপ্রদেশের (Uttarpradesh) হাথরসে একটি বেসরকারি স্কুল ডিএল পাবলিক স্কুলে (D L Public School) প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ারা হস্টেলে থাকে। স্কুলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর দিনেশ বাঘেলের বাবা যশোধন সিং কালো জাদুতে (black magic) বিশ্বাস করেন। সেই বিশ্বাসের জেরে তিনি নিজের ছেলে ও স্কুলের কিছু শিক্ষককে প্রভাবিত করেন। তার দাবি ছিল কোনও একটি পড়ুয়াকে বলি (sacrifice) দিতে পারলে স্কুলের সুনাম ও সমৃদ্ধি বাড়বে। সেই মতো তারা একটি শিশুকে হত্যার চেষ্টা করে। কিন্তু ব্যর্থ হয়।

তবে অন্ধবিশ্বাসে ডুবে থাকা যশোধন হাল ছাড়েননি। সহযোগীদের নিয়ে খুন করে দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়াকে। গত সোমবার সকালে স্কুলের হস্টেলে দ্বিতীয় শ্রেণির (class-II) পড়ুয়া ছাত্রটিকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পায় স্কুলের নিরাপত্তা রক্ষীরা। ওই পড়ুয়ার বাবা ক্রিশান কুশওয়াহাকে খবর দেওয়া হয় তাঁর সন্তান অসুস্থ। অন্যদিকে মৃতদেহটি হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে ডিরেক্টর (MD) দিনেশ নিজের গাড়িতে দেহটি নিয়ে শহরে ঘুরতে থাকে। ক্রিশান স্কুলে এসে নিজের ছেলেকে দেখতে না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন।

পুলিশি তল্লাশিতে দিনেশের গাড়ি থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার হয়। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কালো জাদুর সত্য বেরিয়ে আসে। পুলিশ দিনেশ, তার বাবা যশোধন সহ স্কুলে তিন শিক্ষককে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে স্কুল পড়ুয়া ৬০০ শিশুর পরিবার ঘটনায় আতঙ্কিত। কীভাবে সন্তানদের নিরাপত্তা দেবেন তা নিয়ে চিন্তায় হাথরসের অভিভাবকেরা।
