এখনও স্যোশাল মিডিয়ায় নির্যাতিতার ছবি! বন্ধে নোডাল অফিসার নিয়োগের নির্দেশ চন্দ্রচূড়ের, ফিল্ম নিয়ে আইনি পদক্ষেপের পরামর্শ

শীর্ষ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এখনও স্যোশাল মিডিয়ায় (Social Media) রয়েছে আর জি করের নিহত চিকিৎসক-পড়ুয়ার ছবি। এমনকী, সেই ঘটনার পটভূমিতে ছবিও তৈরি হয়েছে। ১ অক্টোবর তার মুক্তি। এই সব বন্ধ করতে সোমবার, সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) শুনানিতে আবেদন আইনজীবীদের। অভিযোগ শোনার পরে, ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি মন্ত্রককে বেআইনি পাবলিকেশন বন্ধে নোডাল অফিসার নিয়োগের নির্দেশ দিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় (D Y Chandrachur)।এদিন নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে মামলা শুরু হয়। এদিন দেরি হওয়ায় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা অনুরোধ করেছিলেন, মঙ্গলবার বা বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি করার জন্য। কিন্তু প্রধান বিচারপতি বলেন, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই মামলা। বহু লোক অপেক্ষা করছেন শুনানির জন্য। সেই কারণে আজই করা হবে শুনানি। শুনানির শুরুতেই মৃতার পরিবারের তরফ থেকে আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার পরিবারের তরফ থেকে দুটি খাম তুলে দেন। সেখানে CBI-কে লেখা চিঠি ও সোশাল মিডিয়া পোস্টের প্রতিলিপি ছিল। বৃন্দা গ্রোভার অভিযোগ করেন, হিন্দি গান দিয়ে নির্যাতিতার ছবি দিয়ে রিল করা হচ্ছে। পরিবারের জন্য খুবই কষ্টকর, তারা পোস্টের পিছনে দৌড়তে পারেন না৷ প্রধান বিচারপতি জানান, আমরা আগেই অর্ডার দিয়েছি৷ বৃন্দা গ্রোভার আবেদন জানান, এর জন্য একজন নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হোক। তুষার মেহতা জানান, এটা রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়। প্রধান বিচারপতি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার অবিলম্বে সব দিক থেকে ব্যবস্থা নিক। এখনই সঙ্গে বৃন্দা গ্রোভার আদালতে জানান, আরজি করের ঘটনা নিয়ে আগামিকাল ইউটিউবে সিনেমা রিলিজ করবে। প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, আপনি কি চান, সিনেমার রিলিজ আটকাতে? বলেন, “ছবি মুক্তি বন্ধ করতে চাইলে আইনি পন্থা নিতে হবে।”

এই ছবিটির পরিচালক এবং অভিনেত্রী দুজনকেই ইতিমধ্যে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার গুরুত্ব বুঝে ছবিটির পরিচালক আপাতত ছবি মুক্তি বন্ধ রেখেছেন বলে এদিন দুপুরেই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন।এর পরেই সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) প্রধান বিচারপতি বলেন, “বার বার নির্যাতিতার ছবি, নামের ব্যবহার সন্তানহারা বাবা-মাকে ব্যথিত করছে।” এর পরেই নোডাল অফিসার নিয়োগের নির্দেশ দেন তিনি। আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার বলেন, “নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হলে আমরা তাঁকে জানাতে পারি।” বৃন্দা গ্রোভারের আর্জি, আদালতের নির্দেশ যেন সাধারণ মানুষের কাছ পর্যন্ত পৌঁছয়, সেই ব্যবস্থা করা হোক।

আরজি কর মামলার শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির এজলাসে উপস্থিত রয়েছেন রাজ্যের আইনজীবী আস্থা শর্মা। এ ছাড়া আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার, ইন্দিরা জয়সিংহ, করুণা নন্দীরাও রয়েছেন এজলাসে। রাজ্যের হয়ে সওয়াল করছেন আইনজীবী কপিল সিব্বল ও মেনকা গুরুস্বামী। সিবিআইয়ের হয়ে আদালতে লড়ছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। নির্যাতিতার পরিবারের হয়ে রয়েছেন আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার ও শামিম আহমেদ। ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের হয়ে আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ, জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস ওয়েস্ট বেঙ্গলের হয়ে আইনজীবী করুণা নন্দী ও সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় রয়েছেন।
ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের হয়ে সওয়াল করেন প্রবীণ আইনজীবী মনিন্দর সিংহ। দিল্লি মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের হয়ে রয়েছেন আইনজীবী বিজয় হংসরিয়া। কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলাকারী শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী হিসাবে থাকছেন সিদ্ধার্থ লুথরা ও বাঁশরী স্বরাজ। জনস্বার্থ মামলাকারী বিজয়কুমার সিঙ্ঘলের হয়ে সওয়াল করছেন আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি।