Thursday, December 25, 2025

আমি কথা দিচ্ছি মিঠুনদাকে আর ভালবাসব না, কিন্তু…কুণালকে এ কী বললেন দেব!

Date:

Share post:

তৃণমূল সাংসদ হয়েও বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তীর প্রতি তাঁর অনুরাগের কথা গোপন করেননি দেব। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু অম্লমধুর কথা চালাচালিও হয়েছে তাঁর। বৃহস্পতিবার ‘বিশ্ববাংলা সংবাদ’-এ ‘কফি উইথ কুণাল’ অনুষ্ঠানে মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কের সমীকরণের ব্যাখ্যা দিলেন সুপারস্টার দেব।

এদিন, ধরা বাঁধা সাক্ষাৎকার নয়, রীতিমতো খোলামেলা আড্ডার মেজাজ ছিলেন তৃণমূলের তারকা সাংসদ দেব ও তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ তথা বিশিষ্ট সাংবাদিক কুণাল ঘোষ। আর সেখানেই সরাসরি দেবকে প্রশ্ন ছুড়ে দেন কুণাল। বলেন প্রশ্ন, “দেখো ভাই, তুমি তৃণমূলের সাংসদ। অথচ তুমি মিঠুনের সঙ্গে সিনেমা করছো, তাঁকে সোশাল মিডিয়ায় চুমু পাঠাচ্ছো, এটা কেন? কী বার্তা যাচ্ছে সকলের কাছে?”

কুণাল ঘোষের কথায়, মিঠুন চক্রবর্তী নিশ্চিত ভাবে বড় অভিনেতা। এ নিয়ে কোথায় কোন প্রশ্ন নেই। আমার সঙ্গে তাঁর একটা দাদা ভাইয়ের সম্পর্ক ছিল। এই রাজনৈতিক কারণেই চুরমার হয়েছে। যেটা নিয়ে আমি ওকে মাঝেমাঝে খোঁচা মারি, যে মিঠুন চক্রবর্তীকে মমতা দি এমপি করলেন। ছেড়ে গিয়ে, অন্য দলে গিয়ে মমতা দি এবং আমাদের সরকারের দলের বিরোধিতা করছে। মিঠুনদার সাথে আমারা ঝগড়া করে মরছি আর ও গালে চুমু খাচ্ছে!

দেবের পাল্টা প্রশ্ন, “রাজনীতির কোনও নির্দিষ্ট ডেফিনিশন আছে? তুমি আমার থেকে বেশি রাজনীতি বোঝ। ভারতবর্ষের সকল রাজনীতিবিদ কেমন ভাবে, কেমন চিন্তা ভাবনা সেটা কী তোমার কন্ট্রোলে আছে? থাকলে কেউ এ দল থেকে অন্য দলে যেত না। এবারে রাজনীতি মানে কী? জিজ্ঞেস করছি প্রশ্ন।”

উত্তরে কুণাল বলেন, “রাজনীতি মানে সমাজ সেবা। সেটা একটা কাঠামোতে নিয়ে আসা। সংসদীয় গণতন্ত্রের হিসাবে বলতে গেলে এমন কিছু সরকারি ক্ষমতা থাকে যেটা দিয়ে তুমি মানুষের উপকার করতে পারবে। আবার রাজনীতি তুমি যদি শুধু বল, সেটাতো সব পেশাতেই রয়েছে।

দেবের কথায়, এটা আমি বুঝি এর বাইরে আমি কিছু বুঝি না। “এবার আমি বলি, আমি রাজনীতিতে একটা জিনিস বুঝি। তোমার সব বন্ধু যেমন আমার বন্ধু নয়, তখন তোমার সব শত্রুও আমার শত্রু না।

কুণাল পাল্টা বলেন, আমার-তোমার বলতে যেটা, সেটাতো আমাদের। কারণ তুমি-আমি একই দলের। আমি কর্মী, তুমি এমপি। তোমার দায়িত্ব বেশি।

দেব বলেন, আমি কথা দিচ্ছি, আমি মিঠুনদাকে নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। ভালবাসব না, হাই করব না। তুমি কী তোমার দল হয়ে এই গ্যারেন্টি কী দিতে পারবে কি বিজেপি বা সিপিএম থেকে কোন দলের সদস্যকে আমাদের দলে নিতে পারবে না? কারণ যখনই তুমি যেই লোকটাকে গাল দিচ্ছ রাজনীতির মধ্যে তিনদিন আগে, একবছর আগে, একবছরের মধ্যেই সেই লোকটা দলে আসছে। কথার কথা। এবার সেই আইড্রোলজি কোথায় গেল? একজন বিজেপি থেকে আমাদের দলে এল, ইলেকশনের সময়ই সে আমাদের পার্টি জয়েন করল। এবং টিকিট ও পেল, আমি বললাম মাঝে মাঝে ভুল করে জয় শ্রীরাম বেরিয়ে যায় না? দেখল। আমাকে বুঝতে পারলো না দেব কী বললো!

দেব বলেন, “এবার আমাকে বোঝাও এই মিঠুন চক্রবর্তী বা যেকোন মানুষ, যদি এ দল থেকে ওই দল, ওই দল থেকে এই দল করে। তাহলে তুমি আমি না বোকা হয়ে যাব।”

কুণাল বলেন, “এই পয়েন্টটা আমি এগ্রি করছি। কিন্তু একটা প্রবলেম হচ্ছে, মিঠুনদাকে নিয়ে তোমারও প্রবলেম নেই আমারতো ছিলই না। কিন্তু মিঠুনদা যখন আমার দলকে (আমাকে নয়) আমার নেত্রীকে এবং সরকার ফেলে দিতে ২০২১ সালে, তখন আমি তৃণমূলের সৈনিক হিসাবে তখন আমি মিঠুন দাকে কাউন্টার করা। কুণাল স্পষ্ট বলেন, “মিঠুনদা যদি মমতা দিকে অ্যাটাক না করে বা সরকার ফেলে দেওয়ার কথা না বলতেন, আমি এত সুন্দর দাদা-ভাইয়ের মত যে রিলেশন আমি কেন নষ্ট করবো?”

এরপরে সহাস্যে দেব বলেন, “আসলে কুণালদা না মিঠুনদাকে মন থেকে খুব ভালবাসে। মিঠুনদাও কুণালদাকে খুব ভালবাসে।” দেবের কথায় কুণালও জানালেন তাঁর সঙ্গে মহাগুরুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা। জানালেন, দাদা-ভাইয়ের সম্পর্কই ছিল তাঁদের। কিন্তু যেদিন দলনেত্রীকে, দলকে নিয়ে বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী আক্রমণ করেছেন, এমনকী একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সরকার ফেলে দেওয়ার কথা বলেছিলেন, তখন তৃণমূলের একনিষ্ঠ সৈনিক হিসেবে তিনি চুপ করে বসে থাকতে পারেননি।

আরও পড়ুন- আমার ছবিকে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করলে খারাপ লাগবে: সৃজিত-স্বতিকাকে কেন বললেন দেব!   

 

 

spot_img

Related articles

বেঙ্গল সুপার লিগ: উত্তর ২৪ পরগনাকে হারিয়ে জয়ে ফিরল ব্যারেটোর দল

জমজমাট  শ্রাচি আয়োজিত বেঙ্গল সুপার লিগ(Bengal Super League)। বড়দিনের দুপুরেও ছিল লিগের ম্যাচ। কল্যাণী স্টেডিয়ামে হাওড়া হুগলি ওয়ারিওর্সের(Howrah-Hooghly...

কেন্দ্রের প্রকল্পকে তোয়াক্কা নয়: বাংলা জুড়ে সবুজ বিল্পব

বাংলায় বিজেপির নেতারা যখন কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাংলায় লাগু না করার জন্য প্রতিবাদে সামিল হচ্ছেন, তখন পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে...

সাহিত্য অকাদেমিতেও ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা বিজেপির! দমদম বইমেলার মঞ্চে সুর চড়ালেন ব্রাত্য

রাজনীতি থেকে সাহিত্য; সর্বত্র নিজেদের আধিপত্য কায়েম করতে চাইছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার দমদম বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ ভাবেই গেরুয়া...

কোথায় পুলিশ: অসমে খ্রিস্টান স্কুলে হামলায় সরব সংগঠন, মোদিকে প্রশ্ন তৃণমূলের

বিজেপি শাসিত ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, উত্তরপ্রদেশের পর এবার অসম। উগ্রহিন্দুত্ববাদীদের হামলার শিকার খ্রিস্টান (Christian) সম্প্রদায়ের মানুষ। বজরং দলের...