থ্রেট কালচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলনে বসা জুনিয়র ডাক্তাররাই (Junior Doctor) এবার রাজ্যকে থ্রেট দিচ্ছেন! সূত্রের খবর, অনশন আর চালিয়ে নিয়ে যেতে পারছেন না তাঁরা। সেই কারণে সম্মানজনক পথ খুঁজছেন বেরিয়ে আসার। বিভিন্নভাবে মধ্যস্থতার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় এবার সরাসরি হুমকির রাস্তায় হাঁটছেন। সঙ্গ দিচ্ছে বাম-অতিবাম সংগঠনগুলি। শুক্রবার, সিনিয়র ডাক্তারদের (Senior Doctor) সঙ্গে বৈঠকের পরে জুনিয়র ডাক্তাররা জানান, সোমবারের মধ্যে তাঁদের সব দাবি মানা না হলে মঙ্গলবার থেকে সর্বাত্মক ধর্মঘটে যাবেন তাঁরা।

বৃহস্পতিবার বৈঠক সম্পূর্ণ না হওয়ায় শুক্রবার সিনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন জুনিয়রেরা। সেই বৈঠক শেষে দেবাশিস হালদার রীতিমতো সময় বেঁধে দেওয়ার ঢঙে বলেন, ‘‘সোমবারের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী যদি আমাদের দাবি না মানেন, তবে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সর্বাত্মক ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হব।’’ সেই ধর্মঘটে সিনিয়র ডাক্তারেরাও যোগ দেবেন বলে দাবি জুনিয়রদের।

১০ দফা দাবি নিয়ে ৫ অক্টোবর থেকে ধর্মতলায় ‘আমরণ অনশনে’ বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সরকারের তরফে মুখ্যসচিব নিজে ডেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট নন তাঁরা। ইতিমধ্যেই ছজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাঁচ জন। এই পরিস্থিতিতে অনশন থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছেন তাঁরা। কিন্তু এর জন্য একটা সম্মানজনক রাস্তা খুঁজছেন। বারবার বিভিন্ন তরফ থেকে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে সরকারকে। এদিন দুপুরেও কিছুটা অভিমানের সুরে তিন অনশনকারী “মুখ্যমন্ত্রী কেন তাঁদের সঙ্গে দেখা করছেন না?”- বলে সাংবাদিক বৈঠক করেন। অথচ তাঁদের ধর্না আন্দোলনে নিজে গিয়ে কথা বলে এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। তার পরে কালীঘাটে নিজের বাড়িতে ডেকে বৈঠক করেন। এদিন সিনিয়রদের সঙ্গে বৈঠক শেষে দেবাশিস বলেন, ‘‘সোমবার পর্যন্ত আমরা একটা সময়সীমা দিচ্ছি। এর মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে আমাদের সব ক’টি দাবি মানার জন্য আলোচনায় বসতে হবে এবং সব কটি দাবি মেনে নিতে হবে। যদি তা না হয় তবে আগামী মঙ্গলবার সিনিয়র-জুনিয়র ডাক্তারদের সমস্ত সংগঠন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বাত্মক ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হব।’’ দেবাশিস জানান, সিনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সূত্রের খবর, সিনিয়র এবং জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে সংগঠন ভেদে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। অনশনে সমর্থন নেই বেশিরভাগ চিকিৎসকেরই। কারণ জুনিয়র ডাক্তারদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে বাম এবং অতিবাম সংগঠনগুলি। যার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনশনকারীরা। এই পরিস্থিতিতে অনশন তুলে নেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে বেশিরভাগেরই। সেই কারণেই কি শেষ পর্যন্ত থ্রেট কালচারের পথ ধরলেন জুনিয়র ডাক্তাররা!

আরও পড়ুন- কেড়ে নেওয়া চলবে না অধিকার! বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কড়া অবস্থান সুপ্রিম কোর্টের
